কাজী হাসান ফিরোজ, বোয়ালমারী : ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে জোরপূর্বক বসতভিটা থেকে মেয়ে ও জামাইকে উচ্ছেদ করতে পুলিশ এনে হুমকি ধামকি ও ঘরে তালা ঝুলানোর অভিযোগ উঠেছে সালেহা বেগম নামের এক মহিলার বিরুদ্ধে। ঘরে তালা ঝুলানোর কারণে বসবাসকারী রুকসানা বেগম,  স্বামী টিটিআর খান ও মেয়েকে নিয়ে বাহিরে অবস্থান করতে দেখা যায়।

আজ রবিবার সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের কুন্ডুরামদিয়া গ্রামে রুকসানা বেগম নামে এক নারীর ক্রয়কৃত দলিলমূলে মালিকানাধীন সম্পত্তিতে ঘর নির্মাণ করে তিন বছর যাবত স্বামী টিটিআর খান ও মেয়েকে নিয়ে বসবাস করেন। তার ঘরবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করতে ওই নারীর মা সালেহা বেগম ও তার আপন দুই ভাই কামরুল খান (৪০), আমিরুল খান (৩৫) ও তার মামা আদু খান (৫২) মিলে (১৮ মার্চ) শনিবার সকালে মারধর করে ঘরের দরজা কুপিয়ে তালা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করেন। ঘরের আসবাব পত্র ভাঙচুর করে ঘরে থাকা স্বর্ণ ও টাকা লুট করে নিয়েছে বলে জানান রুকসানা বেগম নামের ওই নারী। পরে (২০ মার্চ) রুকসানা বাদী হয়ে ফরিদপুর বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৭ নং আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ৯৭। এ মামলায় আসামী ছিলেন, ভাই আমিরুল খান ও কামরুল খান মামা আদু খান, বোন জামাই রাজা খন্দকার, ও বোন মুক্তি বেগম।

আদালতে মামলা দেয়ার কারণে সালেহা বেগম (২৫মার্চ) দুপুরে জয়নগর ফাঁড়ি থেকে পুলিশ এনে ওই নারীর স্বামী টিটিআর খান ও তার দেবরকে মারধর করে দেবর নিটুল খানের হাতে হাতকড়া পরিয়ে ফাঁড়িতে নিতে চায়। এমনকি তাদের বসত ঘরে তালা ঝুলিয়ে থানায় শালিশ করতে বলে যান ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশের উপপরিদর্শক সুব্রত।

নিটুল খান এ বিষয়ে বলেন, গত শনিবার ফাঁড়ির পুলিশ আমার ভাই ও ভাবির ঘরে তালা মারার সময় আমি বলে ছিলাম ঘরে তালা মারতে হলে দু পক্ষের তালা মারেন। তখন তিনি রেগে গিয়ে আমার মুখে থাপ্পর মেরে হাতে হাতকড়া পরিয়ে ধরে নেয়ার হুমকি দেন। আমাকে পেন্ডিং মামলার আসামী করার হুমকি দিয়ে জনৈক পরিমলের বাড়ির ডাকাতি মামলায় আসামী করার ভয় দেখান।

জানা জায়, তিন বছর পূর্বে রুকসানার বাবা ২০১৬ সালের ১৯ মে শফিউল আলম এর নিকট থেকে ২৯৯ নং মৌজার ৩৩৯ নং খতিয়ানের ১৫৯৪ নং দাগের ১৩ শতাংশ জমি ক্রয় করে দেন। সে জমিতে পাকাঘর নির্মাণ করে বসবাস করেন রুকসানা ও তার স্বামী টিটিআর খান । সে ক্রয়কৃত জমি থেকে উচ্ছেদ করতে পায়তারা শুরু করছেন রুকসানার মা সালেহা বেগম ও সালেহার ভাই আদু খান এবং দুই ছেলে কামরুল খান ও আমিরুল খান।

এ নিয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক সুব্রত বলেন, মা ও মেয়ে ও জামাইয়ের ব্যাপারতো তারা দুই পক্ষ তালা মারে, এবং দুই পক্ষের লোকজন বলেন, এটা আমার ওটা আমার। পরে তাদের দু পক্ষকে থানায় এসে শালিসের মাধ্যমে সমাধান করতে বলা হয়েছে। তবে এখানে নিটুল খান তার ভাইকে সেখান থেকে সরিয়ে নিতে গেলে তখন কি করতে হয় বলেনতো ভাই। আপনি থাকলে বুঝতে পারতেন! বিষয়টা কি?

বর্তমান দু পক্ষের তালা মারা রয়েছে। টিটিআর ও তার ভাই নিটুলকে কোন মারধর করা হয়নি। অভিযুক্ত নারী সালেহার স্বামীর বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি বলে তাঁর বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

(কেএফ/এসপি/মার্চ ২৬, ২০২৩)