আসাদ সবুজ, বরগুনা : বরগুনা সদরঘাট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের  কার্যনির্বাহী কমিটির এক সহ সম্পাদকসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগে আদালতে মামলা করেছেন আল মিজান শপিং কমপ্লেক্স এন্ড সদর ঘাট মসজিদ মার্কেটের এক ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক। ওই সহ সম্পাদকের অনিয়মের কারনেই ডায়াগনস্টিক ব্যবসায়ীর প্রায় বিশ লক্ষ পঞ্চাশ টাকার ক্ষতি সাধন হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন।

সোমবার (২৭ মার্চ) বরগুনা দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে ২(উ)/৪/৫ ধারায় মামলাটি দায়ের করেছেন পপুলার মেডিকেল সার্ভিসেস সেন্টারের মালিক নুরুল আলম। মামলা নম্বর সি/আর ৩৫/২৩।

মামলার অভিযোগ ও ভুক্তভোগী ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক নুরুল আলম জানান, গত ১২-১২-২০২২ তারিখে বরগুনার আল মিজান শপিং কমপ্লেক্স এন্ড সদর ঘাট মসজিদ মার্কেটের নীচ তলায় স্ত্রী ও দুই পুত্রের নামে তিনটি কক্ষ মাসিক ১৪ হাজার টাকা ভাড়া ও অগ্রীম ১০ লক্ষ টাকা চুক্তিতে নিয়ে "পপুলার মেডিকেল সার্ভিসেস" নামে ডায়াগনস্টিক সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন বরগুনা কলেজ রোড এলাকার ভুক্তভোগী নুরুল আলম। চুক্তি মোতাবেক মসজিদ কমিটিকে ব্যাংক পে-অর্ডারের মাধ্যমে গত ০১-১২-২০২২ তারিখ পঞ্চাশ হাজার টাকা প্রদান করেন নুরুল আলম।

মামলার অভিযোগে উল্লেখিত আসামীরা হলেন মৃত আনিছুর রহমানের ছেলে বরগুনা সদরঘাট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সহ সম্পাদক আতাউর রহমান বাবুল, মৃত নুরু খলিফার ছেলে বরগুনা সদরঘাট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির চৌধুরী, বাহার উদ্দিনের ছেলেবরগুনা সদরঘাট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের কোষাধ্যক্ষ আবুল হোসেন, মৃত খবির মিয়ার ছেলে বরগুনা সদরঘাট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য কাইউম, মৃত আলতাফ পহলানের ছেলে বরগুনা সদরঘাট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সহ সভাপতি আলমগীর হোসেন পহলান সহ অজ্ঞাত ১০/১২ জন।

অতঃপর চলতি আল মিজান শপিং কমপ্লেক্স এন্ড সদর ঘাট মসজিদ মার্কেটের ১লা ফেব্রুয়ারী মসজিদ কমিটির সহ সম্পাদক আতাউর রহমান বাবুল ও কাইউমের সামনেই মসজিদ কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির চৌধুরীর হাতে ৫লক্ষ টাকা প্রদান করেন। টাকা পাইয়া টাকা গ্রহনের রিসিভ পরে পৌছে দেয়া হবে জানান তারা। পরে ভুক্তভোগী নুরুল আলম মসজিদ কমিটির অন্যান্য সদস্যদের সাথে কথা বলে বাকি সাড়ে চার লক্ষ টাকা আগামী ৩১ মার্চ পরিশোধ করবেন বলে সময় নেন।

নুরুল আলম তার অভিযোগে আরো উল্লেখ করেন, আতাউর রহমান বাবুল,আলমগীর কবির চৌধুরী ও কাইউম তারা ব্যক্তিগতভাবে ভুক্তভোগী নুরুল আলমের নিকট ধার বাবদ টাকা দাবি করে। ভুক্তভোগী নুরুল আলম টাকা ধার দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে উল্লেখিত সদস্যরা ক্ষিপ্ত হয় তারা (অভিযুক্তরা)।

অতঃপর ২৩ মার্চ বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে অভিযুক্তরা পরস্পর যোগাযোগের মাধ্যমে ভুক্তভোগী নুরুল আলমের পপুলার মেডিকেল সার্ভিসেস ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এসে অযথা তর্কের সৃষ্টি করে ঠেলা ঠেলি শুরু করলে নুরুল আলম সাথে সাথে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করেন। এসময় মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির অভিযুক্তদের সাথে মুঠোফোনে কথা বলতে চাইলেও অভিযুক্তরা কথা বলতে অপরাগতা প্রকাশ করে। এসময় নুরুল আলমের পপুলার মেডিকেল সার্ভিসেস ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মুল কেচিগেট কেটে ও ডায়াগনস্টিকের কতক মালামাল তছনছ করে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধন করে। কেচিগেট না থাকায় আবারও মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদকের সাথে যোগাযোগ করলে মালামাল অভিযুক্তরা পাহারা দিবে বলে আশ্বাস দিলে ভুক্তভোগী নুরুল আলম তার বাড়িতে চলিয়া গেলে ওই রাতেই তার ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে আট লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা মূল্যের একটি আল্ট্রাসনো মেশিন, পাঁচ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা মূল্যের সিবিসি পরিক্ষার মেশিন, ছয় লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা মূল্যের ইলোকট্রোলাইজ মেশিন নিয়ে যায়।

ভুক্তভোগী নুরুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, আমি বাকি টাকা পরিশোধ করার জন্য ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময় নিয়েছি। আমাকে দেওয়া সময়ের আগেই পূর্বপরিকল্পিত ভাবে অভিযুক্তরা আমার সাথে এমনটি করেছে। আমি একজন হার্টের রোগী, আমার হার্টে চারটি রিং বসানো। ঘটনার দিন আমি আভিযুক্তদের কর্মকান্ড দেখে অসুস্থ হয়ে পরি। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠ বিচার দাবী করছি।

এ ব্যপারে বরগুনা সদরঘাট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের অফিস কক্ষে গিয়ে দরখাস্তে উল্লেখিত অভিযুক্তদের সাথে দেখা না হওয়ায় কারো সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

বরগুনা সদরঘাট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের সাথে মুঠোফোনে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ঘটনার বিষয় শুনেছি, তবে আমি কিছু জানি না, ওগুলো তাদের ব্যাপার তারা বুঝপারা করুক। মামলাটি এফআইআর, র জন্য আদেশ দিয়েছেন আদালত।

(এএস/এসপি/মার্চ ২৭, ২০২৩)