মোঃ সিরাজ আল মাসুদ, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলায় গত ১০ দিনে ছয়টি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। এতে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন গ্রাহকরা। ধারাবাহিক এ চুরির ঘটনায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এখন আতঙ্ক বিরাজ করছে। এদিকে ট্রান্সফরমার চুরি ঠেকাতে আর চোর ধরে দিতে পারলে ১০ হাজার টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন সখীপুর বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিক্রয় ও বিতরণ) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু বকর তালুকদার।

বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা যায়, সখীপুর উপজেলা থেকে পার্শ্ববর্তী ৮ উপজেলার আংশিক বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। ১৭টি ফিডারের আওতায় এ কার্যক্রম চলে। মির্জাপুর উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়নের গাইড়াবেতীল রবি টাওয়ার এলাকা থেকে ১৮ মার্চ দুটি, দাড়িয়াপুর ইউনিয়নের লাঙ্গুলিয়া শিকদার বাড়ি এলাকা থেকে ১৯ মার্চ একটি, ২২ মার্চ গজারিয়া ইউনিয়নের পাথরপুর বাঘবেড় এলাকা থেকে একটি ও একই ইউনিয়নের পাথরপুর চৌরাস্তা থেকে একটি এবং মির্জাপুর উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়নের মোথারচালা এলাকা থেকে ২৫ মার্চ রাতে একটি ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা ঘটে।

আরও চারটি ট্রান্সফরমারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করলেও নিতে পারেনি। সেগুলো বিদ্যুৎ অফিসে আনা হয়েছে। ট্রান্সফরমার চুরি ও যন্ত্রাংশ নষ্ট হওয়ায় বিদ্যুৎ অফিসের প্রায় ১০-১২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এসব ঘটনায় মির্জাপুর থানায় দুটি এবং সখীপুর থানায় একটি মামলা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, মধ্যরাতে বিদ্যুৎ চলে যায়। এটাকে স্বাভাবিক ঘটনা মনে করেন তারা। কিন্তু পরে সকালে শুনতে পান ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। এ কারণে চুরি যাওয়া ট্রান্সফরমারের আওতাধীন প্রায় ৯০০ পরিবার চরম ভোগান্তিতে পড়েন। পাঁচটি ট্রান্সফরমার সংযোগ দেওয়া হলেও উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের পাথারপুর চৌরাস্তার ট্রান্সফরমারটি এখনো খোলা আছে।

লাঙ্গুলিয়া গ্রামের বিদ্যুৎ গ্রাহক হোসেন বলেন, রাতে ট্রান্সফরমার চুরি হয়। পরের দিন সকালে বিদ্যুৎ অফিসকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এর দুদিন পর বিদ্যুৎ অফিস আমাদের ট্রান্সফরমার সংযোগ দিয়েছে। ট্রান্সফরমারের জন্য কোনো টাকা লাগেনি, শুধু সংযোগ দেওয়ার সময় কর্মচারীদের খরচ দেওয়া হয়েছে।

বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরির বিষয়টি নিশ্চিত করে গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, যারা বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি করেছে তারা সমাজ, দেশ ও জাতির শত্রু। এদের প্রতিহত করতে যার যার অবস্থান থেকে সর্তক থাকতে হবে। চুরির বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উপজেলা বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করা হয়েছে।

সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল করিম বলেন, ট্রান্সফরমার চুরির বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সখীপুর পিডিবির (বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু বকর তালুকদার বলেন, ২০ মার্চ কর্মস্থলে যোগ দিয়েছি। আমিসহ সহকারী প্রকৌশলী চুরির ঘটনাস্থলে গিয়েছি। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাইনি। এ কারণে জড়িতদের শনাক্ত করতে পারিনি। গ্রাহকরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এজন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। বৈদ্যুতিক মালামাল চুরির ঘটনায় বিদ্যুতায়ন আইনে থানায় অজ্ঞাত নামে মামলা করেছি।

তিনি আরও বলেন, চোর ধরিয়ে দিতে পারলে আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে তাকে ১০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে বলেও ঘোষণা দিয়েছি।

(এসএম/এসপি/মার্চ ২৯, ২০২৩)