মোঃ সিরাজ আল মাসুদ, টাঙ্গাইল : ‘হে লৌহিত্য আমার পাপ হরণ করো’- এই মন্ত্র উচ্চারণে পাপ-শাপ মোচনে মহাষ্টমীতে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীতে গঙ্গাস্নান করতে পূর্ণ্যার্থীদের ঢল নামে। গঙ্গাস্নানকালে সৃষ্টিকর্তার কাছে দেশবাসীর জন্য শান্তি কামনায় প্রার্থনা করে সনাতন ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ-ভক্ত ও পূণ্যার্থীরা। গঙ্গাস্নানের মাধ্যমে জাগতিক সংকীর্ণতা ও পঙ্কিলতার আবরণে ঘেরা জীবন থেকে পাপ মুক্ত হবেন- এমনটাই বিশ্বাস পূর্ণ্যার্থীদের।

এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার (২৯ মার্চ) দিনব্যাপী ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের খানুরবাড়ীতে প্রায় ৩০০ বছরের পুরোনো কালী মন্দিরের পাশে যমুনা নদীতে গঙ্গাস্নান উৎসব এবং মেলার আয়োজন করে খানুরবাড়ী, কষ্টাপাড়া, ভালকুটিয়া ও গোবিন্দাসী গ্রামের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

গঙ্গাস্নানকে কেন্দ্র করে মেলারও আয়োজন করা হয়। মেলায় বিভিন্ন মিষ্টি জাতীয় খাবার, বাঁশ-বেতের আসবাবপত্র, মাটি ও প্লাস্টিকের তৈরি খেলনা, পুতুল, ঘোড়া, ট্রাক গাড়ি, হাড়ি-পাতিল, মাছের দোকান, চিড়া-মুড়ি, দইসহ দোকানিরা তাদের পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত পুণ্যার্থী ও ভক্তরা উৎসবের এ ব্যবস্থাপনা দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, বুধবার ভোর থেকে পূণ্যস্নানে জেলা সদর, গোপালপুর, ঘাটাইল, কালিহাতী, মধুপুর, ধনবাড়ী, সখীপুর, বাসাইল উপজেলা এবং সিরাজগঞ্জ, জামালপুর ও সরিষাবাড়ী জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা নানা শ্রেণি-পেশার নানা বয়সী হাজারও ভক্ত ও পূণ্যার্থীরা আসে।

গঙ্গাস্নান করতে আসা পূণ্যার্থী ও ভক্তরা জানান, ভোর থেকে খানুবাড়ী একটি গাছের পাশে নদী তীরে ভক্তদের আগমনে লোকারণ্যে পরিণত হয়। পুণ্যার্থীরা মনকে শুদ্ধি, পাপ মোচন, পবিত্রতা এবং মঙ্গল কামনা ও মনবাসনা পূরণে মানত দেন। এছাড়া মহাষ্টমীতে স্থানীয় লোকজনসহ দূর-দূরান্ত থেকে অনেক মানুষ মেলা দেখতে আসেন।

আয়োজক কমিটির সভাপতি বাবলু হালদার জানান, ভোর থেকে যমুনা নদীতে গঙ্গাস্নান উপলক্ষে স্নানোৎসব কমিটি পূর্ণ্যাথীদের সেবা দিতে বিভিন্ন ক্যাম্প স্থাপন করেন।

ক্যাম্প থেকে পূণ্যার্থীদের রান্না করা খাবার, স্নান ঘাটে কাপড় পাল্টানোর ব্যবস্থা ও বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ করো হয়েছে। সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়। পুণ্যার্থীরা উৎসবের ব্যবস্থাপনা দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

(এসএএম/এএস/মার্চ ৩০, ২০২৩)