স্টাফ রিপোর্টার : ভিন্ন কৌশলে আগাম নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ আবারও অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতায় বসতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি মিটিং হয়েছে। সেখানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বলেছেন, নির্বাচনের সব ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। প্রয়োজনে আগাম নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। অর্থাৎ তারা ভিন্ন কৌশল নিতে চায়। আগেভাগে নির্বাচন করে গোটা জাতিকে বোকা বানিয়ে আবারও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় বসতে চায়।’

তবে এবার কোনো অপকৌশল সফল হবে না উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘আপনাদের কোনো ফাঁদে জনগণ পা দেবে না। এবার তারা প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। আপনাদের সব চক্রান্তকে ব্যর্থ করে দেবে।’

শনিবার (১ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে এ অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

দেশবাসীকে আন্দোলনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখনো সতর্ক হন, সজাগ হন। যারা আজকে ক্ষমতাকে বেআইনিভাবে জোর করে ধরে রাখার জন্য সব ভিন্নমতকে দমন করছে, হত্যা করছে, গুম করছে, নির্যাতন করছে, কারাগারে নিচ্ছে, তাদের হাত থেকে আপনারও পার পাবেন না। সবার দায়িত্ব ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলা।’

সরকারকে অবশ্যই ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হবে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সবসময় বলে এসেছি এ সরকার গণতন্ত্র মানে না। এ সরকার মানুষের মতামতকে কোনো গুরুত্ব দেয় না। তাদের একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে, ক্ষমতায় টিকে থাকা। তাদের অধীনে দুটি নির্বাচন করে বন্দুকের নলের মুখে জোর করে ক্ষমতায় টিকে রয়েছে। এ সরকারকে জনগণের অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে পরাজিত করা হবে। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।’

কর্মসূচিতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আজ যারা গায়ের জোরে ক্ষমতায় আছেন, তারা দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। যদি কেউ সমালোচনা করেন, তাহলে তাদের গায়ে লাগে। কারণ তারা গণতান্ত্রিক নন। স্বাধীনতার পরে যখন ক্ষমতায় ছিলেন, তখনও গণতন্ত্র হত্যা করে বাকশাল কায়েম করেছিল। রক্ষীবাহিনী দিয়ে এ দেশের বিরোধীমত দমন করেছে। চারটি সংবাদপত্র রেখে বাকি সবগুলা বন্ধ করেছে। এ আওয়ামী লীগের চরিত্র দেশের মানুষ এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে।

তিনি বলেন, জনগণ এ সরকারকে আর দেখতে চায় না। দেশের যে সংকট, তা এ সরকার নিরসন করতে পারবে না। তাই জনগণ এ সরকার চায় না। জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে বিদায় করতে হবে।

স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, জনগণের কথা যারা বলেন, তাদের গ্রেফতার করা শুরু করেছে সরকার। এ সরকার আর বেশিদিন টিকে থাকতে পারবে না।

তিনি বলেন, এ মুহূর্তে দরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার। যেদিন থেকে দেশে নিরপেক্ষ সরকার ঘোষণা হবে, সেদিন থেকেই দেশের পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায়ে সব প্রস্তুতি রয়েছে। ক্ষমতার জন্য নয়, জনগণের দাবি আদায়েই চলমান আন্দোলন। আজকের এ অবস্থান কর্মসচি জনগণের দাবি আদায়ের।

অবস্থান কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম। সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব রফিকুল আলম মজনু।

অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, বিএনপি নেতা নবী উল্লাহ নবী, ইশরাক হোসেন প্রমুখ।

(ওএস/এসপি/এপ্রিল ০১, ২০২৩)