অরিত্র কুণ্ডু, ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহে সড়ক দুর্ঘটনা এখন এক নিত্যনৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুর্ঘটনায় মানুষের প্রাণহানীই শুধু নয়, বরং বিপর্যস্ত পরিবারের চিরস্থায়ী দুর্ভোগও বটে। নিয়মিত সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। কোন ভাবেই সড়কে এই মৃত্যুর মিছিল থামছে না। সড়ক-মহাসড়কে চলছে মৃত্যুর মহোৎসব। প্রতিদিনই একের পর এক তাজা প্রাণ হারিয়ে যাচ্ছে। এভাবে থমকে যাচ্ছে বহু পরিবার। আর যেসব লোক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন অথবা পঙ্গুত্ববরণ করেন তাদের পরিবারের খবর কেউ রাখে না! সড়ক দুর্ঘনার এই অবস্থা এখন ‘মহামারি’ আকার ধারণ করেছে বলে কেউ কেউ মনে করেন। একটি ঘটনার রেশ না কাটতেই ঘটছে আরেকটি ঘটনা। 

এদিকে গত ৩ মাসে ঝিনাইদহে সড়ক দুর্ঘটনায় ২৫ জন নিহত হয়েছেন। বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চলাচল ও সড়ক মহাসড়কে অবৈধ যানবাহন এই সড়ক দুর্ঘটনার মুলে রয়েছে। বেশির ভাগ সড়ক দুর্ঘনা ঘটেছে অবৈধ নছিমন, করিমন, আলমসাধু, ভটভটি বা অটোভ্যানের কারণে। এছাড়া রয়েছে বেপরোয়া গতিতে মটরসাইকেল চালানো।

পুলিশ ও বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে জানা গেছে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত জেলার ৬ উপজেলায় ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে সড়ক দুর্ঘটনায়। এরমধ্যে ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় সর্বাধিক ৯ জন, শৈলকূপায় ৫ জন, মহেশপুরে একজন, কোটচাঁদপুরে ৪ জন ও কালীগঞ্জ উপজেলায় ৫ জন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। অনেকের অভিযোগ দুর্ঘটনা রোধে সরকারের পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপ কাজে আসছে না। দেশে বেপরোয়া যান চলাচল বন্ধ হয়নি। সড়ক মহাসড়কে কমেনি অবৈধ যানবাহন চলাচল। থ্রী-হুইলার দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ঝিনাইদহের প্রতিটি সড়কে। ঝিনাইদহ শহরে ইজিবাইকের ছড়াছড়ি। কোন নিয়ন্ত্রন নেই। প্রতিদিন শোরুম থেকে ১০-১২টি করে ইজিবাইক বেড় হচ্ছে রাস্তায়। এতে বোঝা যায়, দুর্ঘটনা রোধের পদক্ষেপগুলো কার্যকর করার ক্ষেত্রে গলদ রয়ে গেছে। এসব দূর করা খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। দেশে সড়ক দুর্ঘটনার হার অনেক উঁচুতে অবস্থান করলেও শক্ত কোন প্রতিকার মিলছে না।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ হাইওয়ে পুলিশের ওসি মিজানুর রহমান বলেন, অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে নিয়মিত সড়ক মহাসড়কে অভিযান চালানো হচ্ছে। আলমসাধু, ভটভটি ও ইজিবাইকসহ বিভিন্ন অবৈধ যানবাহন আটক করা হচ্ছে। পাশাপাশি তাদের সচেতনতাও করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এই সেক্টরের সঙ্গে সবাই একসঙ্গে কাজ না করলে পুলিশের পক্ষে একা অবৈধ যানবাহন বন্ধ করা সম্ভব নয়।

(একে/এসপি/এপ্রিল ০২, ২০২৩)