গৌরাঙ্গ দেবনাথ অপু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ‘স্মার্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া’ বিনির্মাণে জেলাবাসির কাছ থেকে পাওয়া গঠনমূলক কোন প্রস্তাবনা মনোনীত হলেই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রস্তাবকারীকে দেয়া হবে  আকর্ষণীয় পুরস্কার ও সম্মাননা। গতকাল বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে দিনভর অনুষ্ঠিত 'স্মার্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিনির্মাণ' শীর্ষক এক কর্মশালায় জেলা প্রশাসক মো. শাহ্গীর আলম এ ঘোষণা দেন।

জানা গেছে, সরকারের নেয়া স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে স্মার্ট ডিস্ট্রিক্ট ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ-২০২৩ এর আওতায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বুধবার ওই কর্মশালার আয়োজন করা হয়। বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ওই কর্মশালায় জেলার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি দপ্তরের প্রধান, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, গণমাধ্যম ও এনজিওকর্মীরা অংশ নেন।

প্রাণবন্ত এ কর্মশালায় 'প্রধান অতিথি' ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. শাহ্গীর আলম। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) জিয়াউল হক মীর, সহকারী কমিশনার ভূমি (সদর) মো. মোশারফ হোসেন প্রমুখ।

‘স্মার্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিনির্মাণ’ শীর্ষক ওই কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা পরে ১১টি দলে বিভক্ত হয়ে অংশ নিয়ে স্মার্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া গড়তে তাদের নিজস্ব কিছু প্রস্তাবনা আলাদা আলাদাভাবে তুলে ধরেন। দলগুলো হলো স্মার্ট ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, স্মার্ট পাবলিক সার্ভিস, স্মার্ট ল অ্যান্ড অর্ডার, স্মার্ট এডুকেশন, স্মার্ট সোশ্যাল সার্ভিস, স্মার্ট সিটি অ্যান্ড ভিলেজ, স্মার্ট এগ্রিকালচার, স্মার্ট হেলথ, স্মার্ট ট্রান্সপোর্টেশন, স্মার্ট ইউটিলিটি ও স্মার্ট এনভায়রনমেন্ট। দিনভর অনুষ্ঠিত ব্যতিক্রমী ওই কর্মশালায় দলগুলো অংশ নিয়ে 'স্মার্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া' বিনির্মাণে নিজ নিজ দলের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসনের কাছে তুলে ধরা তাঁদের স্ব স্ব প্রস্তাবনাগুলো উপস্থিত সকলেরই বেশ নজর কাড়ে। কর্মশালাটি সঞ্চালনা করেন জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) জিয়াউল হক মীর।

পরে দলগুলোর দেয়া 'স্মার্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া' গড়ার ক্ষেত্রে তাঁদের বিভিন্ন প্রস্তাবনাগুলো দেখার পর সন্তোষ প্রকাশ করে কর্মশালার প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক মো. শাহ্গীর আলম তাঁর বক্তব্যে বলেন, স্মার্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিনির্মাণে আজ আপনাদের দেয়া বিভিন্ন প্রস্তাবনায় আমরা সত্যিই অভিভূত হয়েছি। আশা করছি, সামনে আরও ভালো ভালো প্রস্তাবনা পাওয়া যাবে।'

এসময় জেলা প্রশাসক জানান, শিগগীরই বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে 'বিজ্ঞাপন' দিয়ে স্মার্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া গড়তে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার (জেলাবাসি) মানুষের কাছ থেকে গঠনমূলক মতামত এবং প্রস্তাবনা চাওয়া হবে। পরবর্তীতে প্রাপ্ত প্রস্তাবনাগুলো যাচাই বাছাই করে সেগুলো থেকে বাছাই করে চূড়ান্তভাবে গ্রহণযোগ্য প্রস্তাবনাগুলোকে পুরস্কৃত করা হবে।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) জিয়াউল হক মীর বলেন,'এটি সরকারের একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ। দেশের প্রতিটি জেলাকে স্মার্ট জেলা হিসেবে সরকার গড়ে তুলতেই এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে 'স্মার্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া' বিনির্মাণে সর্বস্তরের মানুষের কাছ থেকে আমরাও নতুন নতুন প্রস্তাবনা চাইবো। এ লক্ষে শিগগীরই আমরা গণমাধ্যমসহ নানা মাধ্যমে এ বিষয়ে প্রচার প্রচারণা শুরু করবো।'

তিনি জানান, আগামী ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত ইমেইল ও ডাকযোগে জেলাবাসির কাছ থেকে বিভিন্ন প্রস্তাবনা নেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে ডাকযোগে প্রস্তাবনা পাঠানোর পাশাপাশি প্রস্তাবকারীগণ [email protected] ইমেইলেও তাঁদের প্রস্তাবনা পাঠাতে পারবেন। পরবর্তীতে প্রাপ্ত প্রস্তাবনাগুলো যাচাই বাছাই করে এরমধ্য থেকেই বাছাইকৃতদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আকর্ষণীয় পুরস্কৃর ও সম্মাননা প্রদান করা হবে।'

(জিডি/এসপি/এপ্রিল ১৩, ২০২৩)