ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি : তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. ইকরাম আহমেদ (৩০) কে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। বুধবার বিকেলে জেলা শহরের  মুন্সেফপাড়ায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য রিদোয়ান আনসারী রিমোর বাড়িতে এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ ঘটনার পরই ঘাতক রায়হানকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। তবে ঘাতক রায়হান মাদকসেবী বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

ঘটনার পর পরই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার পর ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা জেলা সদর হাসপাতালের সামনের সড়ক অবরোধ করে খুনীদের বিচারের দাবিতে শ্লোগান দিতে থাকে। এ সময় সড়কে সব ধরণের যান চলাচল বন্ধ হয়ে থাকে।

জানা গেছে, নিহত ইকরাম ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের মাসুদ মিয়ার ছেলে। তবে তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার ফরিদুল হুদা সড়কের বি-বাড়িয়া টাওয়ারে বসবাস করতেন। মাসুদ মিয়া গ্রামীণ জেনারেল হাসপাতালের মালিক। ঘাতক রায়হান ঢাকার মগবাজারের জিয়াউল হক জিয়ার ছেলে।

ছাত্রলীগ নেতা রিমোর মামাতো ভাই রায়হান কয়েকদিন ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অবস্থান করছিল।

একাধিক সূত্র জানায়, বেলা সাড়ে পাঁচটার দিকে বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা রিমোর বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। এ সময় মোটরসাইকেলের চাবি নিয়ে রায়হান ও ইকরামের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। এক পর্যায়ে ইকরামকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে রায়হান। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে ইকরামকে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

রিদোয়ান আনসারী রিমো জানান, রায়হান তার মামাতো ভাই। তার মামা ভারতে যাওয়ায় রায়হানকে এখানে রেখে যান। মোটরসাইকেলের চাবি নিয়ে তর্কাতর্কির জের ধরে ইকরামকে ছুরিকাঘাত করে রায়হান। ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। রায়হান মাদকসেবী বলেও দাবি করেন রিমো।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরে মাওলা ফারাবী জানান, ইকরাম সক্রিয় ছাত্রলীগ নেতা। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি। অন্যথায় আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দেন।

অবরোধের সামনে নেতৃত্বে থাকা জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সুজন দত্ত বলেন, ‘ইকরাম ছাত্রলীগের বিশ্বস্থ কর্মী। কি কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে সেটা জানার চেষ্টা চলছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহরাব আল হোসাইন দৈনিক বাংলা ৭১ কে জানান, মোটরসাইকেলের চাবি নিয়ে তর্কাতর্কির তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। এ ঘটনার পরই ঘাতক রায়হানকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।'
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জেলা শহরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

(জিডিএ/এএস/মে ২৪, ২০২৩)