স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ : ধর্ষণ মামলায় হেফাজতে ইসলামের সাবেক নেতা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন মামলার বাদী জান্নাত আরা ঝর্নার ছেলে এবং স্থানীয় সাংবাদিক শেখ এনামূল হক বিদ্যুৎ। মঙ্গলবার (৬ জুন) নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে এ সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। 

এর আগে মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য পাঁচজনকে সমন পাঠানো হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে মামলার বাদী কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্নার ছেলে চার্জশিটে ৩১ নম্বর সাক্ষী আব্দুর রহমান ও দৈনিক বাংলা ৭১ এর সোনারগাঁ উপজেলা প্রতিনিধি শেখ এনামূল হক বিদ্যুৎ, সোনারগাঁ সাংবাদিক নুর নবী জনি উপস্থিত ছিলেন।

মামলায় সর্বশেষ গত ২৫ এপ্রিল সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। এর আগে ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর প্রথম দফায় আসামির উপস্থিতিতে বাদী জান্নাত আরা ঝর্নার সাক্ষ্য নেন আদালত। একই সঙ্গে ওই বছরের ৩ নভেম্বর মামুনুল হকের বিরুদ্ধে করা ধর্ষণ মামলায় বিচারকাজ শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলায় এখন পর্যন্ত ১৮ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী একেএম ওমর ফারুক নয়ন গণমাধ্যমকে বলেন, মামুনুল হকের বিরুদ্ধে মামলার বাদী জান্নাত আরা ঝর্নার ছেলে আব্দুর রহমান, পুলিশ সদস্যসহ পাঁচজনের সাক্ষ্য দেওয়ার কথা। সে জন্য তাঁকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয়েছে।

এ বিষয়ে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রকিব উদ্দিন আহমেদ বলেন, মামুনুল হকের বিরুদ্ধে পুলিশের আরও তিন কর্মকর্তা প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। সাক্ষীরা আদালতে বলেছেন, তাঁদের মামলার বাদী ঘটনার দিন জানিয়েছেন, মামুনুল হক বাদীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে রয়েল রিসোর্টে এনে ধর্ষণ করেছেন। প্রত্যেক সাক্ষী তাঁদের সাক্ষ্যে এই কথা বলেছেন। এই মামলায় মোট ৪৩ সাক্ষীর মধ্যে মোট ১৮ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে মামুনুল হককে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) নাজমুল হাসান। এর আগে সকাল ৯টার দিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে কাশিমপুর কারাগার থেকে তাঁকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয়।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে একটি রিসোর্টে এক নারীসহ মামুনুল হককে ঘেরাও করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। পরে হেফাজতের নেতা-কর্মীরা এসে রিসোর্ট ভাঙচুর করে তাঁকে ছিনিয়ে নিয়ে যান। পরে এ ঘটনায় (৩০ এপ্রিল) সোনারগাঁ থানায় তাঁর বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ মামলা করেন কথিত স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্না। তবে ওই নারীকে দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করে আসছেন মামুনুল হক।

(এস/এসপি/জুন ০৭, ২০২৩)