আন্তর্জাতিক ডেস্ক : অভিন্ন শরণার্থী নীতির প্রশ্নে ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) ঐকমত্যের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। যদিও ইউরোপের বহির্সীমানায় কড়াকড়ি বৃদ্ধির পরিকল্পনার সমালোচনা চলছে, তবু অভিন্ন শরণার্থী নীতি কার্যকরের বিষয়ে আশার আলো দেখছেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

ইউরোপ বহু বছর ধরেই শরণার্থীদের ঢল সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। মূলত ২০১৫ সালে সিরিয়া যুদ্ধের কারণে ১০ লাখেরও বেশি শরণার্থী প্রবেশ করার পর থেকে চাপে পড়ে ইইউ। বিশেষ করে ভূমধ্যসাগর উপকূলবর্তী দেশগুলোর জন্য এ সংকট বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। অথচ শরণার্থীদের প্রশ্নে ইইউ এখন পর্যন্ত কোনো অভিন্ন নীতি সম্পর্কে ঐকমত্যে আসতে পারেনি।

এক্ষেত্রে পূর্ব ইউরোপের দেশগুলো শরণার্থীদের ন্যায্য বণ্টনের বিরোধিতা করে আসছে। আবার জার্মানি, ফ্রান্স, সুইডেনের মতো দেশগুলো একাই সেই বোঝা টানতে চাইছে না। ফলে কিছু বিচ্ছিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে কোনো রকমে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে। অবশেষে চলতি সপ্তাহেই এক্ষেত্রে বোঝাপড়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠছে।

ইইউ’র অভিবাসন কমিশনার ইভা ইয়োহান্সসন গত মঙ্গলবার (৬ জুন) সাংবাদিকদের বলেন, একসঙ্গে কাজ করলেই ইউরোপ শক্তিশালী হতে পারে। মানবিক অথচ কড়া পন্থায় অভিবাসন সামলানো গেলে সবার সুবিধা হবে। তবে সম্ভাব্য বোঝাপড়ার আওতায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের সব দেশ এখনো শরণার্থীদের ন্যায্য বণ্টন মেনে নিতে প্রস্তুত নয়। বিশেষ করে, পূর্ব ইউরোপের অনেক দেশের পপুলিস্ট সরকার বহিরাগতদের আশ্রয় দেওয়ার বিরোধিতা করছে। ফলে আপসের জন্য তারা শরণার্থী পরিস্থিতি সামলাতে অর্থ বা লোকবল দিতে সম্মতি জানাতে পারে। সেইসঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বহির্সীমানায় রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদনের প্রাথমিক মূল্যায়নের নিয়ম চালু করার প্রস্তাবও বিবেচনা করা হচ্ছে।

ইয়োহান্সসন বলেন, এবারও ঐকমত্য সম্ভব না হলে সবারই ক্ষতি হবে। বৃহস্পতিবার ইইউ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।

শেষ পর্যন্ত ইইউর সব সদস্য দেশ অভিন্ন শরণার্থী নীতি মেনে নিলেও এমন আপস-মীমাংসার সমালোচনা করছে অক্সফ্যামের মতো অনেক সংগঠন। তাদের মতে, ইউরোপকে দুর্গের মতো অভেদ্য করে তুলে শরণার্থীদের বাইরে রাখার চেষ্টা চলছে।

জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক এ ধরনের সমালোচনার জবাবে বলেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে সীমান্তের প্রক্রিয়াকে সঠিক পথ মনে না করলেও শরণার্থীদের ন্যায্য বণ্টনের ক্ষেত্রে আপাতত এছাড়া আর কোনো উপায় নেই। সম্প্রতি ব্রাজিল সফরকালে এই মন্তব্য করেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেন, বহুকাল পরে এই প্রথম ইইউর সব দেশ ভিন্ন স্বার্থ ও দৃষ্টিভঙ্গি সত্ত্বেও শরণার্থী এবং রাজনৈতিক আশ্রয়ের প্রশ্নে সাধারণ সমাধান সূত্রের জন্য চেষ্টা করছে।

তথ্যসূত্র : ডয়েচে ভেলে

(ওএস/এএস/জুন ০৮, ২০২৩)