নওগাঁ প্রতিনিধি : প্রচন্ড তাপদাহ, অনাবৃষ্টি ও খরার কারণে নওগাঁ জেলার সাপাহার উপজেলাধীন প্রাকৃতিক মস্য সম্পদে ভরপুর ঐতিহ্যবাহী জবই বিলের পানি শুকিয়ে বিলটি এখন মস্য শূন্য হয়ে পড়েছে। উত্তরে দামুর ও দক্ষিনে মাহিল কালিন্দর বিলের নিচু এলাকায় যে, দু’একটি মা মাছের অভয়াশ্রম ছিল সেখানকার পানিও কমে যাওয়ায় অসাধু মস্য শিকারীরা সেখান থেকে মাছ চুরি করে বাজারে বিক্রি করছে। ফলে সম্প্রতি সাপাহার উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্বাহী অফিসার আব্দুল্যাহ আলমামুন পুরো বিল সম্পূর্র্নভাবে সিলগালা করে বিলে মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষনা করেছেন।

দীর্ঘ খরা ও অনেক দিন যাবত আকাশ থেকে বৃষ্টিপাত না ঘটায় পুরো বিলের নি¤œাঞ্চল সহ সম্পূর্ন বিল ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। বর্তমানে বিল থেকে সেচ দিয়ে ধান চাষের আবাদি জমিগুলিও হুমকির মুখে পড়েছে বলে একাধিক ধানচাষী জানিয়েছেন। বর্তমানে বিলটি তার যৌবন হারিয়ে মরা খালে পরিণত হয়েছে।

অতিতে নওগাঁ জেলার প্রাকৃতিক মৎস্য সম্পদে ভরপুর এই বিলে প্রাকৃতিক বিশালাকৃতির মাছ সহ বিভিন্ন জাতের পাখ-পাখালীর কলতানে মুখরিত হয়ে থাকতো জবই বিল। কালের বিবর্তনে সব কিছু হারিয়ে বিলটি এখন পানি ও মস্য শূন্য হয়ে পড়েছে।

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সরকারের প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা তার সরকার ক্ষমতায় আসার পর মস্য শূন্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দয্য হারানো এই জবই বিলটিকে এলাকার দরিদ্র মস্য চাষী ও মস্যজীবীদের ভাগ্যন্নোয়নে একটি বৃহৎ মস্য প্রকল্প গড়ে তোলেন। সে থেকে বিলটি সঠিক পন্থায় শাসিত হতে থাকলে আবার প্রাকৃতিক মস্য ও শীতকালে বিভিন্ন জাতের পাখির কলতান ফিরিয়ে আসে।
হঠাৎ করে এবছর দীর্ঘ খরা ও প্রচন্ড তাপদাহ বিলের পানি সেচকাজে ব্যবহৃত হওয়ায় বর্তমানে বিলটি পানি শূন্য হয়ে পড়েছে। যার ফলে বিলের সম্পূর্ন প্রাকৃতিক মাছগুলিও পানিশূন্যতার কারণে বিল থেকে হারিয়ে গেছে। বিলের মস্যজীবী সমিতির সভাপতি বকুল সহ অনেক মস্যজীবীদের মতে বিলে যে কয়েকটি কাঠা বা মা মাছের অভয়াশ্রমে যে পরিমনে মা মাছ রয়েছে সেগুলিকে রক্ষা করা গেলেই এবং আকাশ হতে বৃষ্টি নামলেই বিলটি আবারো প্রাকৃতিক মাছে ভরপুর হয়ে যাবে। তাই তারা বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বিলে যে কোন ধরণের মাছ ধরা নিষিদ্ধকরণ করেছেন।

এ বিষয়ে সাপাহার উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্যাহ আল মামুন জানান, যেহেতু বিলটি এলাকার মস্যজীবীদের ভাগ্যন্নোয়নে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী নওগাঁর সাপাহারে একটি বৃহৎ মস্য প্রকল্প তৈরী করেছেন সে হেতু বিলের প্রাকৃতিক মস্যভান্ডারকে কিছুতেই নি:শেষ হতে দেয়া যাবেনা। বর্তমানে ঐতিহ্যবাহী এই জবই বিলকে একটি ইকো পার্ক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বাংলাদেশ সরকারের খাদ্য মন্ত্রী ও এলাকার সাংসদ সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া জবই বিলের মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া উভয় দিকে এপ্রোচ সড়ক ও ব্রিজকে ঘিরে রাস্তার উভয় দিকে বেশ নান্দনিক কারুকার্য শুরু হয়েছে। তার মতেও অভয়াশ্রমে রক্ষিত ম’ামাছ গুলিকে রক্ষা করা গেলেই বর্ষার পানিতে আবারো পুরো বিল প্রাকৃতিক মাছে ভরে উঠবে। তাই তিনি বর্তমানে ওই জবই বিলের পুরো এলাকায় যে কোন ধরনের মাছ ধরা নিশিদ্ধ ঘোষনা করেছেন বলে জানিয়েছেন।

(বিএস/এসপি/জুন ১৪, ২০২৩)