নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগরের রাতোয়াল বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪টি পদে জনবল নিয়োগে অসৎ উপায় অবলম্বন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষক ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির মধ্যে আর্থিক লেনদেনে সমঝোতা না হওয়ার কারণে চলতি মাসের ৫তারিখে ৩য় বারের মতো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে অযোগ্যদের নিয়োগ দেয়ার পাঁয়তারায় স্থানীয় যোগ্য ব্যক্তিরা তাদের অধিকার হারাচ্ছে মর্মে বিভিন্ন দপ্তর বরাবর লিখিত ভাবে অভিযোগ করা হয়েছে। 

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরে ১ নম্বর কম্পিউটার অপারেটর পদে রাখালগাছী এলাকার ব্যবসায়ী রিপনের মেয়ে রিনার জন্য ১৯লাখ টাকা চুক্তি করে দরখাস্ত করা হয়েছে। ২য় পদে নিরাপত্তাকর্মী পদে শৈলগারিয়াপাড়ার নজু মিয়ার ছেলে জিহাদের জন্য ১২লাখ টাকা চুক্তি করে দরখাস্ত করা হয়েছে। ৩য় নং আয়া পদের জন্য শৈলগারিয়াপাড়ার বিদেশগামী মাসুদের স্ত্রী ও চাঁন চেয়ারম্যানের মেয়ের মধ্যে দরকষাকষি চলছে। এই পদের জন্য ১০লাখ টাকা চাওয়া হয়েছে। যে প্রার্থী চাওয়া পূরণ করতে পারবে তাকেই আয়া পদে নিয়োগ দেয়া হবে বলে জানা গেছে। আর ঝাড়–দার পদের জন্য ৮ লাখ টাকার দরকষাকষি চলছে।

আয়া ও ঝাড়ুদার পদে এখন পর্যন্ত প্রার্থী চুড়ান্ত না হওয়ার কারণে ৩য় বারের মতো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি করা হয়েছে। এতে করে চাকুরী প্রত্যাশী অনেক যোগ্য প্রার্থী থাকার পরও টাকার বিনিময়ে অযোগ্যদের নিয়োগ দেয়ার পায়তারা করছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। টাকা ছাড়া নিয়োগ দেয়া হবে না বলে বিষয়টি এলাকায় চাউর হয়ে যাওয়ার কারণে অনেক যোগ্য প্রার্থীরা আবেদন করার মতো উৎসাহ পাচ্ছে না। এমন দুর্নীতি থেকে স্কুলকে মুক্ত করে পরীক্ষার মাধ্যমে স্থানীয় যোগ্য প্রার্থীদের স্বচ্ছতার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন বঞ্চিত যোগ্য একাধিক প্রার্থী।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান মুঠোফোনে জানান প্রার্থী না পাওয়ার কারণে স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির পরামর্শ অনুসারে ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশনা মোতাবেক ৩য় বারের মতো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। প্রার্থী পেলেই নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। তবে নিয়োগের জন্য প্রার্থীদের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি তিনি জানেন না বলে জানান প্রধান শিক্ষক।

একাডেমিক সুপারভাইজার কামরুল হাসান মুঠোফোনে জানান আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে নিয়োগ প্রদান অবশ্যই দন্ডনীয় অপরাধ। এই বিষয়ে লিখিত ভাবে অভিযোগ পেলে অবশ্যই জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইন বলেন, আমি এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(বিএস/এসপি/জুন ১৬, ২০২৩)