বিপুল কুমার দাস, রাজৈর : মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার খালিয়া ইউনিয়নের উল্লাবাড়ী গ্রামে বাদল মন্ডলের ছেলে বাঁধন মণ্ডল (১০) গতকাল বৃহস্পতিবার ৭ জুলাই ২০২৩, সন্ধ্যা সাতটা ৩০ মিনিটে বিষধর কাল কেউটে সাপের কামড়ে মৃত্যু বরণ করে।

ঘটনা সূত্রে জানা যায়, বাঁধন মন্ডল এবং তার ছোট ভাই সহ আরো কয়েকজন বাড়ির নিকটবর্তী বিলে মাছ শিকারের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।

ককবিলে প্রবেশ করার খানিকক্ষণ পরেই একটি কাল কেউটে সাপের গায়ের উপর তার পা পড়ে। সাপটি তখনই তাকে দংশন করে। দংশন করা মাত্রই সে চিৎকার করে এবং তার সহযোগীরা সাপটিকে দেখতে পায়।

তারপর তারা তাকে কাঁধে করে বাড়ি নিয়ে আসে। এরপর স্থানীয় গ্রাম্য কথিত ওঝার দ্বারা তার চিকিৎসা চলে। চিকিৎসায় কোন উন্নতি না পেয়ে তাকে শানপুকুরিয়া রবিন ওঝার কাছে চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করা হয়।

রবিন ওঝা তার শারীরিক অবস্থা দেখে চিকিৎসা করতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন। তখন তার স্বজনেরা তাকে গোপালগঞ্জ মেডিকেল হসপিটালে নিয়ে যায়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

গ্রাম্য কুসংস্কারে আচ্ছন্ন গ্রামবাসীদের তৎপরতায় আজ সকাল দশটার সময় মৃত সন্তানকে বাঁচানোর আশায় তার বাবা-মা তাকে পুনরায় গোপালগঞ্জ জেলার ডোমরাসুর গ্রামের কোন এক ওঝার কাছে নিয়ে যায়। কথিত সেই ওঝা চিকিৎসা দেওয়ার পরে আধা ঘন্টার সময় নেন। যদি আধা ঘন্টার মধ্যে সে জীবিত হয়ে ওঠে তাহলে সে বেঁচে যাবে এই আশ্বাস দেন তিনি।

কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না মৃত বাধন আর জীবিত হয়ে উঠল না। বাবা মায়ের কোল খালি করে চলে গেল না ফেরার দেশে।

সর্প দংশনের পর রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভ্যাকসিনের জন্য যোগাযোগ করা হলে সেখানেও ভ্যাকসিন পাওয়া যায়নি। যদি সেখানে ভ্যাকসিন পাওয়া যেত তাহলে হয়তো আজকে বাঁধন বেঁচে যেত। বাঁধনের বাবা-মা কান্না জড়িত কন্ঠে সেই কথাই জানিয়েছে সাংবাদিকদের।

ওখানকার স্থানীয় জনগণ জানিয়েছেন যদি দেশের প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপের কামড়ের এন্টিভেনাম পাওয়া যেত তাহলে হয়তো এভাবে আর কোন বাবা মার কোল খালি করে কোন সন্তানকে না ফেরার দেশে যেতে হোত না।

(বিকেডি/এএস/জুলাই ০৭, ২০২৩)