নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার বেগুনজোয়ার উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষিকার আপত্তিকর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার ঘটনায় ওই প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষিকাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এতে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর বিক্ষোভ সাময়িক স্তিমিত হলেও ওই শিক্ষক নিজেকে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক  দলের প্রভাবশালী এক এমপির খাস লোক পরিচয় দিয়ে সকল মহলে দাপট দেখিয়ে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে তাদের এই অপকর্মের বিরুদ্ধে স্থায়ী কোন ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা এনিয়ে স্থানীয়দের মাঝে জল্পনা কল্পনা শুরু হয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, জেলার বদলগাছী উপজেলার বেগুনজোয়ার উচ্চ বিদ্যালয় একটি ঐতিহ্যবাহি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ বিদ্যালয়টি তিনটি ইউনিয়নের শেষ সীমানায় ছোট যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত হওয়ায় বিদ্যালয়ে তিনটি ইউনিয়ন থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি হয়ে থাকে। কিন্তু বিগত কয়েক বছর যাবৎ অত্যন্ত নারী লোভী, অবৈধ ক্ষমতা বিস্তারকারী এবং অর্থলোভী প্রধান শিক্ষক আবু সাদাত শামিম আহমেদ (মিঠু) বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের বিভিন্ন কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছে এবং বেশ কয়েকবার বিচারের মুখোমুখী হয়েছিলো সে। কিন্তু কিছু অদৃশ্য শক্তির কারণে ছাড় পেয়ে বিদ্যালয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। সম্প্রতি বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মোছা. রিফাত আরার সাথে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অফিস রুমে অনৈতিক কার্যকলাপ করে। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে। এ ঘটনা ঘটার পর মানেজিং কমিটির নিকট অভিযোগ দেয়া হলেও কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না।

অভিযোগকারী শেখর আহমেদ বলেন, ম্যানেজিং কমিটিও একটি পুতুল কমিটি হিসেবে রয়েছে। যা বিগত কয়েক বছর যাবৎ অভিভাবকের আশা-আকাঙ্খার কমিটি গঠন হয় নাই। এমতাবস্থায় অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সাদাত শামিম আহমেদ (মিঠু) এর সঙ্গে সহকারী শিক্ষিকা মোছাঃ রিফাত আরা’র অসামাজিক ও অনৈতিক কার্যকলাপের ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করছি। গত দুই বছর আগে ভগবানপুর গ্রামের এক ছাত্রীকে শিক্ষা সফরে নিয়ে গিয়ে এরকম ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃস্টি হয়। পরে মান - সম্মানের ভয়ে ওই ছাত্রীর অভিভাবক তরিঘড়ি বাল্য বিয়ে দেয়। গতবছর বসন্তপুর গ্রামের এক ছাত্রীর সঙ্গে একই ঘটনা । ওই ঘটনায় মেয়ের পরিবার মামলা করতে চাইলে ১০ লাখ টাকা দিয়ে তা বন্ধ করে। এমন বেশ কয়েকটি কর্মকান্ডের সাথে জড়িত প্রধান শিক্ষক মিঠু। আমি এলাকার একজন সচেতন মানুষ হিসাবে এই ঘটনার ভিডিও ক্লিপ দেখে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমি ওই দুই শিক্ষকের যথাযথ ব্যবস্থা চাই।

ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, প্রধান শিক্ষক আবু সাদাত শামিম আহমেদ (মিঠু) তার অফিস রুমে চেয়ারে বসা ছিল এবং পাশের চেয়ারে বসেছিলেন সহকারী শিক্ষিকা রিফাত আরা। এর কিছুক্ষণ পর প্রধান শিক্ষক মিঠু চেয়ার থেকে উঠে এসে সহকারী শিক্ষিকা রিফাত আরার শীরের বিভিন্ন স্পর্সকাতর স্থানে হাত দেয় এবং চুম্বন দেয় অনেকবার। । উভয়ের সম্মতিতেই আপত্তিকর এমন বেশ কয়েকটি (১০টি ) ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তবে মাঝে মাঝে ওই শিক্ষিকাকে বাধা দিতেও দেখা যায় ভিডিওতে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী শিক্ষিকা (ইংরেজি) মোসা. রিফাত আরা তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ সম্পর্কে মুখ খুলতে চাইছে না।

স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, প্রধান শিক্ষক রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ওই শিক্ষিকাসহ স্থানীয় লোকজনকে দাবিয়ে রাখায় আর কিছু বলার সাহস পাচ্ছেনা কেউ। তবে অভিভাবকরা তাদের মেয়েদের আর ওই স্কুলে পাঠাবেননা বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারা প্রধান শিক্ষকের স্থায়ী বহিস্কার দাবী করেছেন। এব্যাপারে ওই শিক্ষিকা কোথাও কোন অভিযোগ করেননি বলে জানা গেছে।

(বিএস/এসপি/জুলাই ০৯, ২০২৩)