নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর ধামইরহাটে এক বিধবার মাটির বাড়ীঘর থেকে কৌশলে উচ্ছেদ চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার আগ্রাদ্বিগুন ইউনিয়নের উত্তর কাশিপুর গ্রামে। অসহায় ওই বিধবার পক্ষ থেকে সুষ্টু বিচার ও ক্ষতি পূরণ চেয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। 

আগ্রাদ্বিগুন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ পত্রে জানা যায়,উত্তর কাশিপুর গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদীন লালুর স্ত্রী বিধবা মর্জিনা বেগম (৪০) তার দুই সন্তানকে নিয়ে স্বামীর বসত বাড়ী মাটির ঘরে বসবাস করেন। তাদের একটি দোতলা মাটির ঘর রয়েছে। এর এক তলায় তিনটি এবং উপর তলায় দুটি ঘর রয়েছে। তার স্বামী জয়নাল আবেদীন স্থানীয় আগ্রাদ্বিগুন ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক দুই বারের ইউপি সদস্য ছিলেন।

এ ব্যাপারে বিধবার মর্জিনা বেগম বলেন, স্বামীর সম্পত্তি বলতে মাঠে মাত্র ২০ শতক কৃষি জমি এবং বসতবাড়ী রয়েছে ১০ শতক। বাড়ীতে হাঁস-মুরগি ও গরু-ছাগল পালন করে কোন রকমে সংসার চালাই। এছাড়া ছেলে অর্নাসে পড়াশুনার পাশাপশি টিউশনি করে নিজের পড়াশুনার খরচ মেটানো পর কিছু টাকা বাড়ীতে পাঠায়। এভাবে বিধবার সংসার চলে। আমার বাড়ীর দক্ষিণ পার্শে প্রতিবেশি ও আমার স্বামীর চাচাতো ভাই আলাউদ্দিনের বাড়ী। গত ৩০ জুন রাত ও দিনে প্রচুর পরিমানে বৃষ্টি হয়। আলাউদ্দিনের বাড়ির পানি বের হওয়ায় জন্য কোন ড্রেন নেই। ওই পানি বাড়ী থেকে বের করার জন্য আমার মাটির দুটি ঘরের দক্ষিণ ওয়াল লোহার রড দিয়ে গর্ত করে পানি বের করে দেয়। এতে রাতে আমার মাটির দোতলার নিচের ঘরগুলোর পানিতে ভরে যায় এবং ওয়ালে বড় ধরনের ফাটল দেখা দেয়। কোনক্রমে আর ফাটল ধরা ঘরে বসবাস করা যাচ্ছে না। বিষয়টি তাৎক্ষনিক আলাউদ্দিনকে জানানোর পর সে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো আমাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। বর্তমানে মাটির দুতলা বাড়ীটি যে কোন মুর্হুতে ভেঙ্গে পড়ে যেতে পারে। বর্তমানে বসবাসের অনুপযোগি হওয়ায় আমাদেরকে অন্যের রাড়ীতে থাকতে হচ্ছে। আবারও একটি মাটি দিয়ে দুতলা বাড়ী নির্মাণ করতে বর্তমান বাজারে প্রায় ৫ লাখ টাকার প্রয়োজন। বিষয়টি নিয়ে চলতি মাসের ৩ জুলাই মৃত জয়নাল আবেদীন লালুর বড় ভাই মো.ময়েন উদ্দিন বাদী হয়ে আগ্রাদ্বিগুন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আলাউদ্দিন বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, গত ৩০ জুন তারিখ রাতে প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টি হয়েছিল। আমার বাড়ীর বৃষ্টির পানি কোন দিক দিয়ে বের হয়ে গেছে তা আমার জানা নেই। আমি কার কোন দিন ক্ষতি করিনি। চেয়ারম্যানসহ অনেকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। চেয়ারম্যান বৈঠকে ডাকলে অবশ্যই যাবো।

আগ্রাদ্বিগুন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.ইসমাইল হোসেন মোস্তাক বলেন,নিঃসন্দেহে এটি একটি জঘন্যতম কাজ। আমিসহ তিনজন ইউপি সদস্য ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ওই বিধবার বাড়ীটি যে কোন মুর্হুতে ভেঙ্গে যেতে পারে। সোমবার বিষয়টি নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে।

(বিএস/এসপি/জুলাই ১০, ২০২৩)