কেন্দুয়া প্রতিনিধি : নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অচলাবস্থা দূর করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী বরাবর ৭ দফা দাবির একটি স্মারকলিপি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট জমা দিল এলাকাবাসী। চিরাং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মামুনুল কবির খান হলি ও বাসক কেন্দুয়া উপজেলা শাখার সভাপতি শাহ তৌফিক আলী রিপন সহ ১০৩ জন ব্যক্তির স্বাক্ষরিত এ স্মারকলিপিতে ৭ দফা দাবির উল্লেখ করা হয়। 

দাবিতে বলা হয়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত দূর্নিতিবাজ কর্মচারিদের বিচার দাবি, ২৪ ঘন্টা এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস নিশ্চিত করা, রোগী হয়রানি বন্ধ করা। ডায়গনস্টিক যন্ত্রপাতি বিশেষ করে ইসিজি, এক্সেরে, আল্টাসনোগ্রাম সচল করা, পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগ দেয়ার পাশাপাশি ব্লাড ট্রান্সমিশন (ব্যাংক) চালু করা। রোগীদের খাবারের মান উন্নয়ন ও রোগীদের জন্য বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, আধুনিক সুবিধা সম্বলিত নতুন হাসপাতাল ও আবাসিক ভবন নির্মান করে কেন্দুয়া উপজেলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ১০০ শয্যায় উন্নিত করা।

স্মারকলিপিতে স্বাক্ষরকারী মামুনুল কবির খান হলি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে নানাবিদ সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছে। অথচ বর্তমান সরকার মানুষের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা দিয়ে আসলেও এখানে একদিন এ্যাম্বুলেন্স বিকল থাকে আরেকদিন ইসিজি, এক্সরে ও আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন বিকল থাকে। রোগীদের মাঝে নিম্নমানের খাবার পরিবেশন করা হয়। তাছাড়া চিকিৎসক যারাই আছেন, রোগীদের সাথে চরম দূর্ব্যাবহার করেন। এসব বিষয়গুলো দূর করার জন্য আমরা বার বার মৌখিকভাবে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সাথে কথা বলেও কোন ফল না পেয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর ৭ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপিটি প্রেরণ করি।

এর অনুলিপি স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের মাননীয় মন্ত্রী, সচিব, নেত্রকোনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য, বিভাগীয় কমিশনার ময়মনসিংহ, জেলা প্রশাসক নেত্রকোনা, সিভিলসার্জন নেত্রকোনা, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কেন্দুয়া ও কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট জমা দেই। আমাদের দাবি স্মারকলিপির আলোকে কর্তৃপক্ষ নানা অনিয়ম দূর্নিতি ও অব্যবস্থাপনার তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করবেন।

এ বিষয়ে কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোঃ এবাদুর রহমানের সাথে বুধবার যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ৭ দফা দাবির স্মারকলিপিটি আমি দেখেছি। তিনি বলেন, ব্লাডব্যাংক চালুর ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আমাদের পত্রালাপ হচ্ছে। হাসপাতাল পরিচালনা কমিটির সভাপতি নেত্রকোণা-৩ আসনের সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিল ব্লাডব্যাংক সহ এ্যাম্বুলেন্স এক্সরে মেশিন ও সকলপ্রকার আধুনিক সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট কথা বলছেন। এসব বিষয়গুলো প্রক্রিয়াধীন আছে। তবে স্মারকলিপিতে দীর্ঘদিন ধরে কর্মচারিদের বিরুদ্ধে দূর্নিতির বিষয়ে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা সুনির্দিষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হলে তদন্তপূর্বক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেত। কিন্তু তারা সুনির্দিষ্ট ভাবে কোন দূর্নিতির কথা উল্লেখ করেননি। তাছাড়া অডিট কর্তৃপক্ষ আছে, তারাইতো প্রতিবছর অনিয়ম দূর্নিতির বিষয়গুলো দেখেন। দূর্নিতি হলে তারাই ব্যবস্থা গ্রহণ করতেন।

(এসবি/এসপি/জুলাই ১২, ২০২৩)