প্রহলাদ মন্ডল সৈকত, কুড়িগ্রাম : বানের পানিতে ডুবে গেছে বিকল্প সেতু। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কলা গাছের ভেলায় পারাপার হচ্ছে হাজারও মানুষ। সেতুটি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলা সদর হতে এক কিলোমিটার দূরে নীলকমল নদের উপর। গত কয়েক মাস আগে সেতুটি ভেঙে নতুন সেতুর কাজ শুরু করে হাসান টেকনো নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। মানুষের চলাচলে ভোগান্তি কমাতে নির্মাণাধীন সেতুর পাশে তৈরি করা হয় একটি বিকল্প সেতু।

ওই সময় নিচু জায়গায় সেতু নির্মাণে অনেকেই আপত্তি তুলেছিলেন। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন জনগণের আপত্তির তোয়াক্কা না করে নিচু জায়গাতেই বিকল্প সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করেন। ফলে ওই নিচু সেতু দিয়েই মালামাল পরিবহনে নানা ভোগান্তির শিকার হতে হয় অনেককে। নির্মাণের পর থেকে ভোগান্তি নিয়ে পারাপার হতে পারলেও বর্তমানে বানের পানিতে বিকল্প সেতুটি ডুবে গেছে। নদ পারাপারে ভরসা এখন কলা গাছের ভেলা। বন্ধ হয়ে গেছে যান চলাচল। ভোগান্তির শিকার হাজারও মানুষ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সড়ক ও জনপদ বিভাগের অধীনে ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩১ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ দশমিক ৩ মিটার প্রস্থের গার্ডার সেতু নির্মানের কাজ শুরু করে ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাসান টেকনো। চুক্তি মোতাবেক ১৫ নভেম্বর ২০২২ তারিখ কাজ শুরু করেন ৩০ জুন ২০২৪ তারিখে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা। তবে সড়ক বিভাগ বলছে কাজের যে অগ্রগতি হয়েছে তাতে নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই সেতুর নির্মাণ কাজ পুরোপুরি শেষ হবে।

সেতু নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে চললেও নির্মাণাধীন সেতুটির কারণেই উপজেলার ফুলবাড়ী ইউনিয়ন, বড়ভিটা ইউনিয়ন ও ভাঙ্গামোর ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষকে যাতায়াতে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। মানুষের চলাচলের জন্য বিকল্প যে সেতু নির্মাণ করা হয়েছিল গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও উজানের ঢলে পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে উপজেলার সদরের সাথে সরাসরি যানচলাচল।

ঝুঁকি নিয়ে কলা গাছের ভেলায় পারাপার করতে দেখা গেছে অনেককেই। পণ্য পরিবহনে সৃষ্টি হয়েছে অচলবস্থা। পারাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে এমনটাই দাবি ভোগান্তির শিকার মানুষের।

স্থানীয় মাহফুজ নামের একজন বলেন, নির্মাণাধীন সেতুর বিকল্প সেতুটি দায়সারা ভাবে করা হয়েছে। তাই বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। এতে করে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে শত শত মানুষ। বর্তমানে এখানে কলা গাছের ভেলায় ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে মানুষজন।

দ্রুত এখানে ব্যবস্থা না নিয়ে যেকোনো সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

এ ব্যাপারে কুড়িগ্রামের সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বলেন, আজকে ফুলবাড়ী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সাথে নিয়ে সেখানকার পরিস্থিতি পরিদর্শন করেছি। আসলে আচমকা পানি বৃদ্ধির ফলে বিকল্প সেতুটি তলিয়ে গিয়ে মানুষের যাতায়াতের ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল থেকে পানি কিছুটা কমছে। আমরা আশা করছি দু-তিন দিনের মধ্যেই সেতু থেকে পানি নেমে যাবে। আর যদি পানি নেমে না যায় সে ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(পিএস/এসপি/জুলাই ১৬, ২০২৩)