শিমুল সাহা, লক্ষ্মীপুর : বিএনপির পদযাত্রা ও আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশকে কেন্দ্র করে লক্ষ্মীপুরে দু’পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে সজীব নামে একজন নিহত হয়েছেন। এ সময় পুলিশ, পথচারী ও দোকানিসহ আরো অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় বেশ কয়েকটি দোকান ও গাড়ি ভাঙচুর করার ঘটনাও ঘটে।

মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) বিকেল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। পরে পুলিশ কাঁদানী গ্যাস ও টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, বিএনপি ও আওয়ামী লীগ দু’দলের পূর্ব নির্ধারিত পৃথক কর্মসূচি পালন করার উদ্দেশ্যে দলীয় নেতা-কর্মীরা শহরে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমবেত হতে শুরু করেন।

বিকেল ৪টার দিকে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক এ্যানি চৌধুরীর নেতৃত্বে শহরের গোডাউন রোড থেকে পদযাত্রায় মিছিল নিয়ে বের হন। এ সময় শহরের সামাদ একাডেমীর মোড়ে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ব্যানার পেষ্টুন ছেঁড়া শুরু করে বিএনপির কর্মীরা। মিছিলের মাঝামাঝি স্থান থেকে বিএনপির ৩০/৪০ জন নেতাকর্মী হঠাৎ করে কলেজ রোডের দিকে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ আসা ১৫/২০ জনকে ধাওয়া করে। এ সময় ২টি অটোরিকশা ও একটি এ্যাকুরিয়ামের দোকানে হামলা চালায় তারা। এতে দোকানি, পথচারীসহ ৫ জন আহত হন। এ সময় গুরুতর আহত অবস্থায় মদিন উল্যাহ হাউজিং এর একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় আশ্রয়ের জন্য দৌড়ে গিয়ে লুটিয়ে পড়ে এক যুবক। এর কিছুক্ষণ পর ওই যুবক প্রচুর রক্তক্ষরণে মারা যায় বলে জানান বাড়ির মালিক।ওই যুবকের নাম সজিব। তার বাড়ি চন্দ্রগঞ্জ বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন।

এদিকে বিএনপির মিছিলটি ঝুমুর এলাকায় পৌঁছালে পেছন থেকে ছাত্রলীগের লোকজন তাদের ধাওয়া করে। একইভাবে শহরের বাগবাড়ি এলাকায়ও সংঘর্ষে জড়ায় বিএনপি ও আওয়ামী লীগ। এদিকে ঝুমুর এলাকায় বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে হাইওয়ে সড়কে উঠতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোঁড়ে তারা। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি, টিয়ারসেল ও কাঁদানী গ্যাস নিক্ষেপ করে। এতে পুলিশসহ উভয়পক্ষের কমপক্ষে আরও ২০ জন আহত হন।

লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ জানান, বিএনপি মিছিল নিয়ে নাশকতার উদ্দেশ্যে হাইওয়ে সড়কে উঠতে চাইলে পুলিশ বাধা দিলে তারা পুলিশের উপর হামলা চালায়। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। বিএনপির হামলায় সদরের ওসি মোসলেহ উদ্দিন, সদর সার্কেল সোহেল রানাসহ পুলিশের ১০ জন আহত হন বলে জানান তিনি।

(এসএস/এসপি/জুলাই ১৮, ২০২৩)