আসাদ সবুজ, বরগুনা : সরকার অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করার পরও আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের টেপুরা খাল থেকে সরকারি কাজে দোহাই দিয়ে অবৈধ বোমা মেশিন বসিয়ে খালের ভূগর্ভস্থ বালু উত্তোলনের মহোৎসব শুরু হয়েছে। পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণ ছাড়াই বালু উত্তোলন করায় খালের পাড় ভাঙনের শঙ্কা রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হলদিয়া ইউনিয়নে বর্তমানে ৫-৬ টি অবৈধ বোমা মেশিন রয়েছে। ডাক পড়লেই মেশিনপত্র নিয়ে গ্রামের আনাচে কানাছে ছুঁটে যাচ্ছে এসব ড্রেজার মালিক-শ্রমিকরা। ড্রেজার দিয়ে গ্রামাঞ্চলের খাল, বিল ও পুকুর থেকে যত্রতত্র ভূর্গভস্থ বালু উত্তোলন করায় বিস্তর্ণ এলাকা হুমকিতে রয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বছরের পর বছর ধরে ড্রেজার মালিকরা এ অবৈধ কাজটি করে আসছে। ড্রেজার দিয়ে উত্তোলনকৃত বালুর বেশিরভাগ স্থানীয় ঠিকাদাররা তাদের নির্মাণ কাজে ব্যবহার করছে। সড়ক ও সরকারি স্থাপনার মাঝে ভরাট করা হচ্ছে এ বালু দিয়ে। কম খরচে ও সহজ পদ্ধতিতে বালু পাওয়ায় ঠিকাদারদের পাশাপাশি বসতবাড়ি নির্মানেও অনেকে পরিবেশে বিধ্বংসী এই ড্রেজার ব্যবহার করছেন। এলাকাবাসী বিভিন্ন সময় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের বিষয়টি জানালেও তা কোনো কাজে আসছে না বলে অভিযোগ রয়েছেন।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হলদিয়া ইউনিয়নের অফিস বাজার তক্তাবুনিয়া গ্রামে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে আশ্রয়ন প্রকল্প ভূমিহীনদের মাঝে বিতরণের জন্য প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঘর নির্মাণ কাজে বালু দেয়ার জন্য টেপুরা খালে নিষিদ্ধ ঘোষিত বোমা মেশিন বসানো হয়েছে। এই মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে ঠিকাদারের নিযুক্ত লোকজন। তাদের দাবি সরকারিভাবে ঘর নির্মাণের জন্য এসব বালু উত্তোলন করছে। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অবগত রয়েছে বলে জানান বালু উত্তোলনকারীরা।

স্থানীয় আমির হোসেন, আবু কালাম, সাইফুল ইসলাম সহ একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, সরকার ও দেশের সর্বোচ্চ আদালত ড্রেজার, বোম মেশিন ও বালু উত্তোলন অবৈধ ও নিষিদ্ধ ঘোষণা করে আইন ও রায় ঘোষণা করলেও তা ভঙ্গ করে সরকারি প্রকল্পে খাল থেকে বালু উত্তলন করছে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। তাহলে সাধারণ মানুষ এসব কাজে উৎসাহী হলে তাদের দোষ দেবে কীভাবে প্রশাসন।

এ বিষযে় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, কেউ সরকারি কাজের দোহাই দিয়ে এভাবে বালু উত্তোলন করলে সেটা অন্যায় করছে। বিষয়টি আমি দেখছি।

(এএস/এসপি/জুলাই ২১, ২০২৩)