রিয়াজুল রিয়াজ, বিশেষ প্রতিনিধি : দেশের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি, এফবিসিসিআই এর সাবেক সভাপতি, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা, ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও বর্তমান ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য এ কে আজাদ আগামী সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-৩ আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন। ইতিমধ্যে তিনি অন্যান্যদের মতো এলাকায় গিয়ে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন। প্রথমে প্রার্থী হওয়া কথা তিনি সরাসরি স্বীকার না করলেও তাঁর জনসংযোগ ও সভা সমাবেশ দেখে যে কেউ ধারণা করতে পারবেন তিনি আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চাচ্ছেন।

একে আজাদ এই প্রসঙ্গে উত্তরাধিকার ৭১ নিউজকে জানান, 'দেখেন আমি এসেছি ফরিদপুরের মানুষের সেবা করতে। বন্ধুকন্যা পদ্মা সেতু করে দিয়েছেম এখন আমি আমার ফরিদপুরের জনগণের জন্য ফরিদপুরের মাটিতে কিছু করতে চাই। তাদের সুখ দুঃখের সাথী হতে চাই।'

এক প্রশ্নের জবাবে এই বিশিষ্ট শিল্পপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা আরো জানান, আমি ফরিদপুরে কিছু মাঝারি ও ক্ষুদ্র মিল কারখানা গড়ে তুলবো, এতে ফরিদপুরের মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এমনিতেই আমার হামীম গ্রুপের বিভিন্ন ফ্যাক্টরী ও প্রতিষ্ঠানে ফরিদপুরের হাজার-হাজার মানুষ এখনও কর্মরত আছেন। ভবিষ্যতে ফরিদপুরের কেউ বেকার থাকবে না ইনশাআল্লাহ।'

একে আজাদ আরো জানান, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা আমার উপর আস্থা রাখলে আমি ফরিদপুরের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, অবকাঠামো উন্নয়ন ও শিল্পায়নের ক্ষেত্রে গুরুত্ব আরোপ করবো। মাদক, সন্ত্রাস ও টেন্ডারবাজী চিরোতরে ফরিদপুরের মাটি থেকে বিলীন করে দিবো। দুর্নীতিমুক্ত একটি স্মার্ট ফরিদপুর গড়ে তুলবো। বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা স্বপ্নের পদ্মা সেতু করার পর রাজধানীর সাথে আমাদের ফরিদপুরের যোগাযোগ সহজ হয়েছে, যা স্থানীয়ভাবে শিল্পায়নের ক্ষেত্রে বিরাট ভুমিকা পালন করবে। এলাকার কৃষিতেও লাভবান হবে মানুষ। সড়ক ও রেল যোগাযোগ ভালো হওয়ার কারণে ফরিদপুরে অনেকেই শিল্প কারখানা গড়ে তুলতে আগ্রহী হচ্ছেন। তাছাড়া পায়রা বন্দর চালু ও পটুয়াখালীর গ্যাস উৎপাদন শুরু হলে আমাদের ফরিদপুর অঞ্চলে শুধু ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প নয়, বড় বড় শিল্প কারখানাও গড়ে উঠবে। আমি এই অঞ্চলে শিল্প কারখানা স্থাপনের মাধ্যমে এলাকার মানুষের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তন করতে চাই।'

ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআই এর সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ আরো জানান, 'আমি এই এলাকার মানুষের জন্য সব সময়ই কাজ করি, করার চেষ্টা করি এবং করবো।' মনোনয়ন পেলে নির্বাচিত হওয়ার ব্যপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে এ কে আজাদ আরো জানান, আমাকে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা মনোনয়ন দিলে আমি নির্বাচিত হয়ে এই এলাকার মানুষের সব আশা আকাঙ্খা পুরন করার চেষ্টা করবো, ইনশাআল্লাহ। এলাকার কোন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান আমার কাছে এসে খালি হাতে ফিরে যায় না, ভবিষ্যতেও যাবে না। '

এ কে আজাদ জানান , 'আমি ফরিদপুরকে অসাধু ও সন্ত্রাসী রাজনীতিবিদের হাত থেকে রক্ষা করতে চাই। এখানে শুদ্ধি অভিযানের পরে ফরিদপুরের আওয়ামী রাজনীতির যে পরিবর্তন আমি আশা করেছিলাম তা অধরাই রয়ে গেছে। ফরিদপুরে শতভাগ সততার সাথে কর্মী বান্ধব ও জনবান্ধন রাজনীতির সংস্কৃতি গড়ে তুলতে চাই, এবং সুযোগ পেলে আমি তা করবো'।

আওয়ামী লীগ নেতা একে আজাদ আরো বলেন, আলহামদুলিল্লাহ! আল্লাহ আমাকে অর্থ সম্পদ, মান - ইজ্জত যথেষ্ট পরিমানে দিয়েছেন। আমার সংসদ সদস্য হয়ে টাকা কামাতে হবে না। আমি এমপি হতে চাই একমাত্র জনগণের সেবা করতে। আমার এলাকার মানুষের দোয়া ও ভালোবাসা পেতে, সুখে দুঃখে তাদের পাশে থাকতে। আমি আশা করি আমি যেভাবে দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীকে সাথে নিয়ে স্থানীয় জনগণের সাথে সম্পৃক্ত হতে পেরেছি তাতে বঙ্গবন্ধু কন্যা ফরিদপুর -৩ সংসদীয় আসনের জন্য অবশ্যই আমাকেই বিবেচনা করবেন।

‘তবে দল যাকেই মনোনয়ন দিক আমি সব সময় আওয়ামী লীগের জন্য মাঠে থেকে নির্বাচনে ভুমিকা রেখে এসেছি, এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। তবে আশা করছি সামগ্রিক দিক বিবেচনা করে নেত্রী অবশ্যই আমাকেই আগামী নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে নৌকার মাঝি করবেন।'

নির্বাচনের লক্ষ্য নিয়েই বর্তমানে ফরিদপুরে বেশি বেশি অনস্থান করছেন ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য একে আজাদ। নিয়ম করে ফরিদপুরের গণ মানুষের সুখ-দুঃখের কথা শুনছেন, প্রয়োজনীয় বাবস্থা নিচ্ছেন। মাঠ-ঘাট-হাট সব জায়গায় নিয়মিত ছুটেছেন মানুষের কাছে। মিশে যাচ্ছেন গণ মানুষের মাঝে। নিজের অবস্থান থেকে মানুষের জন্য দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। নিয়মিত রাজনৈতিক বৈঠক ও বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ছোট ছোট সভা করে মানুষকে সম্পৃক্ত করে চলেছেন। তুলে ধরছেন জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন ও বিএনপি'র দুঃসাহসের ইতিহাস। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করতে ভোট চাইছেন নৌকায়। তিনি মনে করেন ফরিদপুরবাসীর জন্য তিনি যা সততা ও আন্তরিকতার সহিত করতে পারবেন অন্যরা কেউ তা পারবেন না।

পরিশেষে একে আজাদ জানান, 'আমি সংসদ সদস্য হলে ফরিদপুরের সাধারণ জনগণ অনেক খুশি হবেন। তারা আমাকে চান এটা আমি দীর্ঘদিন ঘুরে ঘুরে সাধারণ জনগণের সাথে মিশে স্পষ্টই বুঝতে পারছি। বাকীটা দল ও জননেত্রী শেখ হাসিনা বিবেচনা করবেন। এই মুহুর্তে ফরিদপুরের আওয়ামী লীগ বাঁচাতে ও দলকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি জনগণের শতভাগ সন্তুষ্টির দিক বিবেচনা করে, এবং ভবিষ্যতে ফরিদপুরকে একটি স্মার্ট, সুখী, নিরাপদ ও সম্মৃদ্ধির ফরিদপুর গড়তে, তিনি আমাকেই মনোনীত করবেন বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।' আওয়ামী লীগ নেতা এ কে আজাদ আরো বলেন, শেখ হাসিনার বিকল্প এদেশের দ্বিতীয়টি নেই। শেখ হাসিনার মতো এদেশের কথা কেউ ভাবেন না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একটি অসাম্প্রদায়িক, সুখী, সম্মৃদ্ধ ও উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ একমাত্র শেখ হাসিনাই দেশের মানুষের আস্থা ও ভরসার যায়গা।’

(আরআর/এসপি/আগস্ট ০৮, ২০২৩)