আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : গভীর রাতে দুই দফায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজের হলে তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রী র‌্যাগিংয়ের শিকার হয়েছেন। ওই ছাত্রীকে হলের একটি কক্ষে ডেকে নিয়ে দীর্ঘ সময় দাঁড় করিয়ে রেখে গালাগাল, হুমকি এবং মোবাইল ফোন তল্লাশি করা হয়েছে। একপর্যায়ে ওই ছাত্রী অচেতন হয়ে পরলে তাকে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় শনিবার সকালে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে লাঞ্ছিত হয়েছেন সাংবাদিকরা। শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক ডা. সৈয়দ বাকী বিল্লাহ ও প্যাথলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. প্রবীর কুমার সাহা সাংবাদিকদের প্রথমে চড়-থাপ্পর, ধাক্কা ও পরে চেয়ার দিয়ে পিটিয়ে আহত করেছেন।

জানা গেছে, শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রী র‌্যাগিংয়ের শিকার হন গত বুধবার রাতে। সেই ঘটনার বিচার দাবিতে ওই ছাত্রী ও তার মা শনিবার সকালে যান কলেজ অধ্যক্ষর কাছে। এ সময় সংবাদ সংগ্রহ করতে যান সাংবাদিক ফিরোজ মোস্তফা, মুশফিক সৌরভ, শাকিল মাহমুদ, সুমন হাসান, কাওছার হোসেন রানা, রুহুল আমিন ও আজিম শরীফ।

ভূক্তভোগীরা তাদের বক্তব্য সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরার সময় হঠাৎ করে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালায় দুই চিকিৎসক। সাংবাদিকদের কক্ষ থেকে বের করে দিয়ে র‌্যাগিংয়ের শিকার ওই ছাত্রী ও তার পরিবারকে তারা আটকে রাখেন।

সাংবাদিক শাকিল মাহমুদ জানান, ভূক্তভোগীর সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় হঠাৎ করেই ডা. বাকী ও ডা. প্রবীর আমাদের ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা আমাদের ক্যামেরা ও ট্রাইপড ভাঙচুর করেছে। র‌্যাগিংয়ের ঘটনা ধামাচাঁপা দিতে আমাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। সাংবাদিক কাওছার হোসেন রানা বলেন, আমাদের ওপর হামলা করাটা তাদের অপকর্ম ঢাকার প্রচেষ্টা। প্রায় ঘন্টাখানেক ধরে অবরুদ্ধ থাকার পর পুলিশ এসে দুপুর একটার দিকে আমাদের উদ্ধার করেছেন।

বরিশাল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসেন বলেন, হামলার ঘটনা উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আমরা ঘটনার বিচার চাই। ঘটনার পর দুপুর দেড়টার দিকে পুলিশের মধ্যস্থতায় কলেজ কর্তৃপক্ষ ও সাংবাদিক নেতারা আলোচনায় বসেন। সেখানে হামলাকারী দুই চিকিৎসক হামলার শিকার সাংবাদিকদের কাছে ক্ষমা চান। কলেজের অধ্যক্ষ ফয়জুল বাশার বলেন, ভুল বোঝাবুঝি থেকে ঘটনাটি ঘটেছে। বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠণ করা হবে। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার আলী আশরাফ ভূঞা বলেন, দুই পক্ষকে বসিয়ে বিষয়টির সমাধান করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বুধবার রাতে ছাত্রী হলের ৬০৬ নম্বর কক্ষে তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রীকে নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। হলে অবস্থান করা শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেত্রী পরিচয় দেয়া ফাহমিদা রওশন প্রভা ও নীলিমা হোসেন জুঁইয়ের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটে।

(টিবি/এসপি/আগস্ট ২৬, ২০২৩)