সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, বিশেষ প্রতিনিধি : কেন্দুয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক রিয়াদ হোসেন তালুকদার দোলনের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের নিকট চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কেন্দুয়া বাজারের সহস্রাধিক দোকানপাট বন্ধ রাখেন ব্যবসায়ীরা। সন্ত্রাসী কর্মকণ্ড ও চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে কেন্দুয়া বাজার কমিটি ব্যবসায়ীদের এসব দোকানপাট বন্ধ রাখার ডাক দেন। 

দুপুরের পর ওই বাজারের বাহার সুপার মার্কেট সংলগ্ন স্থানে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাজার কমিটির সভাপতি মো: এনামুল হক ভূঞা এসভায় সভাপতিত্ব করেন। বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো: কামরুল হাসান ভূঞার সঞ্চালনায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে বক্তব্য রাখেন সামছু মহাজন, সৈয়দ আবু রাগেব সাজেদ, ওয়াসীম সহ অন্যান্য ব্যবসায়ীরা। সভায় সকল ব্যবসায়ীরা উপস্থিত হয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা দোলনকে অবিলম্বে গ্রেফতারসহ তার দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করেন। সস্ত্রাসী কর্মকা- ও চাঁদাবাজির ঘটনায় কেন্দুয়া থানায় দুটি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে।

একটি মামলার বাদী হয়েছেন কেন্দুয়া পৌরসভার ০৬ নং ওয়ার্ড বাজার ডেঙ্গু মশক নিধন, ড্রেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কাজের তদারকি কর্মকর্তা পরিদর্শক (ভার:) মো: শাহীন খান এবং অপর একটি মামলার বাদী হয়েছেন অপর দিকে বিকাশ ব্যবসায়ী অপূর্ব। ২৯ আগস্ট রাতে রিয়াদ হোসেন তালুকদার দোলন তার সঙ্গীদের নিয়ে সরকারি কাজে বাঁধা দেয় এবং পরিদর্শক মো: শাহীন খানকে লাঞ্ছিত করে। এরই প্রতিবাদে পৌর কর্মকর্তা কর্মচারীরা বুধবার সকাল থেকে কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছে।

কেন্দুয়া পৌরসভার মেয়র মো: আসাদুল হক ভূঞা তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, রিয়াদ হোসেন তালুকদার দোলন বিভিন্ন বিকাশ ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদাবাজি করে আসছিল। এছাড়া পৌরকর্মচারী মো: শাহীন খানকে লাঞ্ছিত করে এবং সরকারি কাজে বাঁধা দেয়। এ ঘটনায় ব্যবসায়ীরা অর্ধ দিবস দোকানপাট বন্ধ রাখেন এবং পৌর কর্মকর্তা, কর্মচারীগণ বুধবার থেকে দোলনকে গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে কর্মবিরতি ঘোষনা করেন অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। আমরা জনপ্রতিনিধিরাও ওই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ব্যবসায়ী সংগঠন ও পৌর কর্মচারীদের সাথে একাত্বতা প্রকাশ করছি।

অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে মো: শাহীন খান সহ সব পৌর কর্মকর্তা কর্মচারীরা অঙ্গিকার করে বলেন, যতদিন দোলনের সন্ত্রসী কর্মকাণ্ড বন্ধ ও দোলন গ্রেফতার না হবে ততদিন আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। এদিকে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রিয়াদ হোসেন তালুকদার দোলন পলাতক থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে দোলনের চাচা কেন্দুয়া বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ফরিদ হোসেন তালুকদার বলেন, দোলনের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা সত্য না।

তিনি বলেন, দোলন একটি বিকাশের দোকানে ১৯০০ টাকা বিকাশ করতে গিয়েছিল। ওই ব্যবসায়ী ভুল নাম্বারে টাকা পাঠালে এ বিষয়টি নিয়ে ব্যবসায়ীর সাথে দোলনের কথা কাটাকাটি হয়। অন্য কোন ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদাবাজি করেনি দোলন। তাছাড়া পৌর কর্মচারী মো: শাহীন খানকেও মারপিট করেনি তার সাথে কথা কাটাকাটি হয়েছে।

কেন্দুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো: আলী হোসেন পিপিএম বলেন, বিকাশ দোকানের মালিক অপূর্ব বাদী হয়ে দোলনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি এবং পৌর কর্মচারী মো: শাহীন খান বাদী হয়ে সরকারি কাজে বাঁধা ও মারপিটের অভিযোগ এনে থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছেন। আমরা মামলার তদন্ত করছি এবং দোলনকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।

(এসবি/এসপি/আগস্ট ৩১, ২০২৩)