পুরুষের কান্না থেকে যায় অপ্রকাশিত
পূর্ণি ঘোষাল
পুরুষের মন আকাশের মতো বিশাল। ঝড় হোক, বৃষ্টি হোক, উত্তপ্ত রোদ তবুও মাথার উপর ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকতে হয় তাদের। মাঝে মাঝে পালাতে ইচ্ছে করে হয়ত। কিন্তু সবটা জুড়ে যে আকাশ তার থেকে কি কভু পালানো যায়!
পুরুষ ভেঙে গুঁড়িয়ে যায় অর্থের অভাবে বাবার চিকিৎসা আটকে গেলে, মায়ের জরাজীর্ণ পুরনো শাড়িটা দেখে, ছোট ভাই- বোনের আবদারগুলো অপূর্ণ থেকে যায় বলে আবার কখনও বা প্রিয় মানুষটার স্বপ্নগুলো পূরণ করতে না পেরে। নিজেরও যে কিছু স্বপ্ন আছে, নানারকম আশায়পূর্ণ একটা জীবন আছে বেশিরভাগ পুরুষেরই সে খেয়াল থাকে না। নিজের দিকে হাত বাড়ালেই যে শূন্যে ডুবে যায় পরিবার।
এই সমাজ বলে পুরুষ কাঁদে না, কাঁদতে পারেনা, কান্না মানায় না। বেকার হয়ে শূন্য পকেটে ঘুরে বেড়ানো পুরুষ জানে তারও কান্না পায়। সল্প মাইনের চাকরি করে হাজারটা অপূর্ণ স্বপ্ন নিয়ে ঘরে ফেরা পুরুষ জানে চোখের জলের রং কতটা বিবর্ণ। মধ্যবয়সে হাজারও চাপ আর দায়িত্বের ভার বয়ে নিয়ে যাওয়া পুরুষ জানে বোবা কান্নায় চাপা আর্তনাদ লুকিয়ে বাস্তবতা মেনে নেওয়া কতটা কঠিন। পুরুষ কাঁদে নিঃশব্দে, নিভৃতে, নির্জনতায় সবার চোখের আড়ালে।
পুরুষের জীবনটাই এমন বেশিরভাগই অপ্রকাশিত। ভালোবাসা, মায়া, দুঃখবোধ, অনুভূতি, একাকিত্ব, শূন্যতা, আশা- আকাঙ্ক্ষা সবকিছুই কেমন যেন আড়ালেই থেকে যায়। খুব বেশি প্রকাশ পায় না। 'পুরুষ' আড়ালে থেকে যাওয়া মহাকাব্যের সবচেয়ে টাজ্রিক চরিত্র!
লেখক: সংবাদকর্মী।