স্টাফ রিপোর্টার : একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের চেয়ারম্যান আবীর আহাদ ভিয়েনা কনভেনশনের কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত কার্যকলাপ ও ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়ে বাংলাদেশকে অপমান করার কারণে অনতিবিলম্বে বাংলাদেশ থেকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে বহিষ্কার ও মার্কিন বিশেষ বিশেষ নাগরিকের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার জন্য সরকারের কাছে দাবী জানিয়েছেন।

গত শুক্রবার এক বিবৃতিতে উপরোক্ত দাবি জানিয়ে আবীর আহাদ বলেন, মূলত: একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। সেইসঙ্গে বাংলাদেশের অগ্রগতি রোধ করতে তারা ছলেকলেকৌশলের আশ্রয় নিয়ে তথাকথিত গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার নামে বাংলাদেশের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ভিসা নিষেধাজ্ঞার কোনো পরোয়া করে না মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ। তবে এতে আমরা অপমানবোধ করছি। সেই অপমানের প্রতিশোধ নিতে বাংলাদেশ নিশ্চয়ই কোনো দ্বিধাবোধ করতে পারে না। আমরা পৃথিবীতে ক্ষুদ্র হতে পারি। কিন্তু আমরা আমাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও জাত্যাভিমানকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মোড়লীপনার কাছে জলাঞ্জলি দিতে পারি না। তাদের জানা উচিত, একাত্তরে তাদের চরম বিরোধিতার মুখে বাংলাদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধা জাতি ঠিকই বিজয়লাভ করেছিলো। সেই পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে তারা ১৯৭৪ সালে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করেছিলো এবং ১৯৭৫ সালে আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতাকে হত্যার ষড়যন্ত্রে মদদ দিয়েছিলো। আর এখন বাংলাদেশ যখন বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তাদের চক্রান্ত উপেক্ষা করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে চলেছে, তখন আমাদের আভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে, বিশেষ করে পরাজিত পাকিস্তানের প্রেতাত্মা বিএনপি জামায়াত ও অপবাপর ধর্মান্ধ অপশক্তির সহযোগিতায় তারা তথাকথিত গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের সস্তা শ্লোগান তুলে বাংলাদেশের ওপর নগ্নভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরো বুঝা উচিত যে, বাংলাদেশ ইরাক, লিবিয়া, ও আফগানিস্তান নয় যে তাদের চোখ রাঙানিতে বাঙালি জাতি তাদের কাছে আত্মসমর্পণ করবে। আমরা বাঙালিরা ভালো করেই যেকোনো শত্রুর আগ্রাসন মোকাবিলা করার শক্তি ও সাহস রাখি।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আবীর আহাদ বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বহুদিন ধরে আমাদের আভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অঙ্গনে যে অযাচিত হস্তক্ষেপ করে আসছেন, তা আন্তর্জাতিক ভিয়েনা কনভেনশনের চরম লংঘন। ইতোমধ্যেই তিনি তার কার্যকলাপের সীমা লংঘন করে কূটনৈতিকভাবে নিজেকে অবাঞ্ছিত করে ফেলেছেন। তার ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমাদের দেশের আভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও নির্বাচন ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করে একের পর এক ঘৃণ্য চক্রান্তের সর্বশেষ ব্যবস্থা হিসেবে প্রথমে র্যাবের ওপর স্যাংশন আরোপসহ আমাদের দেশের সর্বস্তরের বিশেষ বিশেষ ব্যক্তির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞার জারি করে বাংলাদেশকে চরমভাবে অপমান করে চলেছে! এ অবস্থায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে আর বিনা চ্যালেঞ্জে ছেড়ে দেয়া যায় না। ইতোমধ্যে আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা তাদের মাটিতে দাঁড়িয়ে তাদের এসব ঘৃণ্য কার্যকলাপের বিরুদ্ধে যে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন, তার মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনচেতা বীর বাঙালি জাতির মনের কথাই তুলে ধরেছেন।

(এ/এসপি/সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৩)