টুঙ্গিপাড়ায় প্রধানমন্ত্রীর ৭৭ তম জম্মদিনের বর্ণিল উৎসব
.jpg)
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জৈষ্ঠ কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭ তম জন্মদিন বর্ণিল উৎসবের মধ্যে উদযাপন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ‘বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোর মেলা’ শনিবার টুঙ্গিপাড়া বঙ্গবন্ধু সমাধিসৌধের প্রধান ফটকের সামনে দিনব্যাপী শিশু-কিশোর, সাদা মনের মানুষ ও সুধীজনের সমন্বয়ে উৎসব মুখর পরিবেশে দিনটি উদযাপন করে।
সারাদেশ থেকে জাতীয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার বিভিন্ন বিভাগে বিজয়ী ১৭০ জন শিশু কিশোর, তাদের অভিভাবক সহ ‘বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোর মেলা’র কেন্দ্রীয়, উপজেলা ও জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দে এতে অংশ নেন।
দুপুর সাড়ে ১২ টায় কেন্দ্রীয় ‘বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোর মেলা’র পক্ষ থেকে শিশু কিশোরদের সাথে নিয়ে টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭ তম জন্মদিনের অনুষ্ঠার মালার শুভ সূচনা করা হয়। পরে বঙ্গবন্ধু, ১৫ আগস্টের শহীদ ও মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী ৩০ লাখ শহীদের আত্মার শান্তি কামনা করা হয়।
সারাদশে থেকে আগত শিশু কিশোররা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজরিত স্থানগুলো পরিদর্শন করে। তারা এখানে এসে বঙ্গবন্ধুকে নতুন করে জানতে পেরেছে । বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে পেরে শিশু-কিশোররা নিজেদের সমৃদ্ধ করতে পেরেছে বলে জানায়। তারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধাঁরণ করে বড় হওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। বিকালে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন পানি সম্পাদ উপ-মন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, সংগঠনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারিক আফজাল, প্রধান উপদেষ্ঠা সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব লাকী ইনাম, গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খান, প্রধানমন্ত্রীর এ্যাসাইনমেন্ট অফিসার মোঃ আরিফুজ্জামান নুরুন্নবী, সংগঠনের উপদেষ্টা জহীর কাজী ও শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাভাপতি সাদেকুর রহমান খোকা সিকদার।
‘বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোর মেলা’র সভাপতি কবি মিয়া মনছপের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনের আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শেখ মনিরুজ্জামান লিটন।
এরপর অতিথিরা সারাদেশ থেকে আগত জাতীয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার বিজয়ী ১৭০ শিশু কিশোরের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। পড়িয়ে দেওয়া হয় মেডেল। এর আগে ‘বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোর মেলা’র কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ ‘শপথ’ বাক্য পাঠ করেন।
সন্ধ্যায় শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান । এতে গোপালগঞ্জ সহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত শিশু-কিশোর সহ বিভিন্ন বয়সের শিল্পীরা অংশ নেন। তারা বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ ও আধুনিক বাংলাদেশর রূপকার শেখ শেখ হাসিনার অবদান এ সাংস্কৃতি অনুষ্ঠানের সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তির মাধ্যমে তুলে ধরেন।রাতে পৌনে ৮ টার দিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি সমাপ্ত হয়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য উপস্থাপনের সময় সংগঠনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারিক আফজাল বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনাকে নিয়ে নির্মিত দু’টি ডোকমেন্টারী উপস্থাপন করেন। তিনি তার বক্তব্যে শিশু-কিশোরদের বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উদ্বুদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।তিনি শেখ হাসিনাকে অনুসরন করার জন্য শিশু-কিশোরদের পরামর্শ দেন।
সাংগঠনের প্রধান উপদেষ্ঠা সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব লাকী ইনাম এ অনুষ্ঠানের জন্য বাষ্ট্রপতি মোঃ শাহাবুদ্দিনের পাঠানো বানী পাঠ করে শোনান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পানি সম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জেলায় জেলায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ব্বিদ্যালয় করে দিচ্ছেন। তোমরা শিশু-কিশোররা আগামী দিনের কান্ডারী। তোমাদের বিশ্বমানের ছাত্র-ছাত্রী হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছেন।এখন স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ করছেন। তোমরা স্মার্ট বাংলাদেশর নাগরিক হবে। তাই তোমাদের বিশ্বমানের ছাত্র-ছাত্রী হতে হবে।
উপমন্ত্রী আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট পাঠিয়েছেন। আবার প্রান্তিক জনগোষ্ঠির জন্য তিনি বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, মতৃত্বকালীন ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা সহ বিভিন্ন ভাতার ব্যবস্থা করেছেন। চরের ও হাওরের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করেছেন। গৃহহীনের ঘর ও জায়গার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী। যতই ষড়যন্ত্র হোক এটি প্রতিহত করতে হবে। আগামী নির্বাচনে ভোট দিয়ে ৫ম বারের মত শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করতে হবে।
খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলা সদরের কিশোর অর্ণব মন্ডল, ঢাকা জেলার দোহার সদরের শিশু রূপন্তি অট্টাচার্য বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭ তম জন্ম দিনের অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোর মোলা সঙ্গে টুঙ্গিপাড়া আসতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত। সারাদিন আমরা উৎসব করেছি। বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করেছি। এখানে ঘুরেছি বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে নতুন-নতুন তথ্য জানতে পেরেছি। নিজেদের সমৃদ্ধ করেছি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে আমরা বড় হব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ব। এটি আমাদের কাছে অনন্য পাওয়া। এতে আমরা খুব খুশি হয়েছি । প্রতি বছর আমরা এখানে আসতে চাই। বঙ্গবন্ধুকে আরো ভাল করে জানতে চাই।
(এমএস/এএস/অক্টোবর ০১, ২০২৩)