মাদারীপুর প্রতিনিধি : মাদারীপুরে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালককে হত্যার দায়ে দুইজন আসামীকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (৯ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক লায়লাতুল ফেরদাউস এই রায় দেন। এ সময় আদালতে দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা পলাতক ছিলেন।

দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের পাঁচখোলা গ্রামের আউয়াল বেপারীর ছেলে সজিব বেপারী (২৯) ও একই গ্রামের আব্দুল খানের ছেলে মিঠুন খান (৩৩)।
দোষ প্রমাণ না হওয়ায় খুলনা জেলার কয়রা এলাকার লাভলু গাজীকে (৩০) মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। আসামীরা জামিনে বেরিয়ে এসে পলাতক থাকায় রায় ঘোষণার সময় কেউ উপস্থিত ছিল না।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার রাস্তি ইউনিয়নের পূর্ব রাস্তি গ্রামের রবিউল মাতুব্বরের ছেলে বোরহান মাতুব্বর (১৮) জীবিকা নির্বাহের জন্যে ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাতেন। ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর বোরহান মাতুব্বর মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোজ হন। পরের দিন ১ জানুয়ারী তার বাবা সদর থানায় নিখোঁজ ডায়েরী করেন। ২ জানুয়ারী বোরহানের মোটরসাইকেলটিসহ সজীব বেপারী ও মিঠুন খানকে সাতক্ষীরা জেলার তালা থানায় আটক করা হয়। তাদের দেয়া স্বীকারোক্তিতে ২০১৫ সালের ৩ জানুয়ারী মাদারীপুরের আড়িয়াল খাঁ নদের কালিকাপুর উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকা থেকে বোরহানের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় ওই দিনই সজীব বেপারী ও মিঠুন খানকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের বাবা রবিউল মাতুব্বর। ওই বছরের ১০ জুলাই তিনজনকে দোষী করে চার্জসীট দেন মাদারীপুর সদর থানার এসআই বারেক করিম খান। মামলায় ১৩ জন সাক্ষীর জবানবন্দি শেষে রায় দেয়া হয়। রায়ে সজিব বেপারী ও মিঠুন খানকে মৃত্যুদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তবে লাভলু গাজী নামে একজনকে খালাস দেয়া হয়। এদিকে দন্ডপ্রাপ্ত দুই আসামী জামিনে এসে পলাতক আছেন।

মামলার বাদী নিহতের বাবা রবিউল মাতুব্বর বলেন, আমার ছেলেকে যারা নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে, তাদের ফাঁসি দেয়ায় আমি আনন্দিত। তবে রায়টি যেন দ্রুত কার্যকর হোক, এই দাবী জানাই।

মাদারীপুর দায়রা ও জজ আদালতের পিপি এ্যাড. সিদ্দিকুর রহমান সিং বলেন, আসামীরা মাত্র এক লাখ টাকার একটি মোটরসাইকেলের জন্যে একজন গরীব অসহায় বাবার সন্তানকে নির্মমভাবে হত্যা করেছেন। এটা সমাজের জন্যে খুবই খারাপ ও নির্মম ঘটনা। ফলে আমরা রাষ্ট্রপক্ষ সর্বোচ্চ দিয়ে রায়টি করা চেষ্টা করেছি। ফলে দুই জনকেই ফাঁসির রায় দিয়েছে আদালত। এতে আমরা খুশি।

(এএসএ/এসপি/অক্টোবর ০৯, ২০২৩)