ওয়াজেদুর রহমান কনক, নীলফামারী : কার্তিকের শুরুতেই এবার আগভাগেই উত্তরের জেলা নীলফামারীতে শীত নামাতে শুরু করেছে। এদিকে মাঝরাত থেকে ঝিরঝির বৃষ্টির মতো ঝরছে শিশির ফোঁটা। সড়কে ঘন কুয়াশার কারণে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। সেই সঙ্গে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া নিম্নআয়ের মানুষগুলো। তাদের সময়মতো কাজে যেতে বেগ পেতে হচ্ছে।

দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশ থেকে বিদায় নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এ বছরের মতো বিদায় নিলো বর্ষা। তাপমাত্রাও কমে গেছে। গত কয়েকদিন দিনের বেলায় বেশ গরম থাকলেও গভীর রাত থেকেই শুরু হয় কুয়াশা পড়া। রাতে ও ভোরের হালকা কুয়াশা সেই সাথে দুর্বা ঘাসের মাথায় শিশির বিন্দু জানিয়ে দিচ্ছে উত্তর জনপদ নীলফামারীতে আসছে শীত। মূলত পৌষ-মাঘ এই দুই মাস শীতকাল ধরা হলেও আশ্বিন-কার্তিকের দিকেই গুটি গুটি পায়ে শীতের আগাম বার্তা জানায় দেয়।

সারদিনের তীব্র গরম শেষে গভীর রাতে থেকে শুরু হচ্ছে হালকা হিমেল হাওয়া সঙ্গে নামছে কুয়াশা। একদিকে যেমন শীতের আগমনে দেখা দিয়েছে কিছুটা স্বস্তি। গ্রামগঞ্জে শীতের সঙ্গে সঙ্গে সকালে ঘাসের ডগায় শিশির জমছে। কোথাও কোথাও হালকা কুয়াশার সঙ্গে যেন উঁকি মারছে শীত।
প্রকৃতিতে এখন এমনই ঋতুবদলের আয়োজন। দোকানিরা শীতের পোশাক উঠাতে শুরু করেছেন। পথের ধারে বসতে শুরু করেছে শীতের পিঠা-পুলির দোকানের। প্রতিবারের মতো এবারও বর্ষার ঘনঘটা শেষ করে কার্তিকের কোলজুড়ে এই শীত। এখন প্রতিটি সকালে দূর্বা ঘাসে কিংবা গাছের কচি পাতায় মুক্তার মতো জ্বলজ্বল করে শিশির বিন্দু। কুয়াশা ভেদ করে পূর্ব দিগন্তে সূর্যের উদয়।

সারেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সবুজ ঘাসের ওপর ভোরের সূর্যের আলো হালকা লালচে রঙয়ের ঝিলিক। দূর থেকে দেখলে মনে হয় প্রতিটি ঘাসের মাথায় যেন মুক্তোর মতো শিশির কণা জমে আছে। আর শীতের এই আবহাওয়া অনুভব করতে সড়কে হাটা চলা করছেন অনেকই। কুয়াশায় চাদরে ঢেকে আছে রাস্তা-ঘাট। সড়কে যানবাহন চলছে ধীর গতিতে হেডলাইট জ্বালিয়ে। এসবই জানান দিচ্ছে প্রকৃতিতে এসেছে শীত।

সারাদিন গরম থাকে কিন্তু রাতে ও ভোরে এই শীতের কারনে আবহাওয়া টা অনেক সুন্দর থাকে। এখানে বিশেষ করে মাঠে ঘাস ও ধানের শীষে বিন্দু বিন্দু কুয়াশা জমতে দেখা যাচ্ছে। দেখতে অনেক ভালো লাগে।

স্থানীয়রা কয়েকজন সকালে হাঠতে আসলে তাদের সাথে কথা বললে তারা জানান, গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির কারণে এ বছর আগাম শীত অনুভব হচ্ছে। দিনের বেলা কিছুটা গরম থাকলেও সন্ধ্যা নামার সাথে সাথেই কুয়াশা পড়তে শুরু করে। রাত যত গভীর হয় কুয়াশা তত বাড়ে হালকা বৃষ্টির মতো টিপটিপ কুয়াশা ঝরতে থাকে।

বিশেষ করে মাঠে ঘাসের ডগায় ও ধানের শীষে জমতে দেখা গেছে বিন্দু বিন্দু শিশির। উত্তর থেকে আসছে শিরশিরে বাতাস। ভোরের প্রকৃতিতে হাত বাড়লেই ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব। কয়েক দিন থেকে শেষ রাতে গায়ে কাঁথা চাপাচ্ছেন অনেকেই। যদিও দিনে গরমের তীব্রতা খুব একটা কমেনি।গ্রামগুলোতে পুরনো কাঁথা নতুন করে সেলাই করে নিতে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন নারীরা। বাড়ির পাঁশে গাছের নিচে বসে রঙ-বেরঙের সুতো দিয়ে তারা তৈরি করছেন কাঁথা আর সেই সাথে জমে উঠেছে গল্প এবং আড্ডা। বাজারে ধুনাইকাররা লেপ তোষক তৈরী শুরু করেছে। প্রকৃতিতে শীতের আমেজ শুরু হতে না হতেই রঙ বেরঙের অতিথি পাখির করতালে বিন্নাদিঘীসহ খাল, বিল ও জলাশয় গুলোতে নানা প্রজাতির অতিথি পাখির আগমন শুরু হয়েছে।

(ওকে/এসপি/অক্টোবর ১৬, ২০২৩)