সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া : আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বাড়ছে দৌঁড় ঝাপ। নেত্রকোনা-৩ (আটপাড়া কেন্দুয়া) নির্বাচনী এলাকায় কে হচ্ছেন নৌকার মাঝি এ নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা সমালোচনা। হাটে, মাঠে, ঘাটে, স্কুল, কলেজে, চায়ের দোকানে এমনকি বিভিন্ন সামাজিক আচার অনুষ্ঠানে গিয়েও এ আলোচনা থেমে নেই। মনোনয়ন প্রত্যাশীরা এতদিন নিজেদের মতো করে গণসংযোগ ও শো-ডাউন করলেও এখন সবাই ঢাকা মুখী। সবাই আগামী নির্বাচনে নৌকার মাঝি হতে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে গিয়ে ধর্ণা দিচ্ছেন। মূলত মনোনয়ন নিয়ে সবাই প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। যেকোনো উপায়েই হোক নৌকা আমার চাই। আবার সবাই একথাও বলছেন নৌকা যার আমরা তাঁর। দলীয় প্রধান বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা যার হাতেই নৌকা তুলে দেবেন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে শেখ হাসিনাকে আবারও প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসাতে নৌকা মার্কার প্রার্থীকেই বিজয়ী করব।

বিগত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যারা মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন তাদের অনেকেই আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন চান না। মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে বর্তমান সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা অসীম কুমার উকিল দাপটের সাথেই মাঠে আছেন। তিনি কেন্দুয়া ও আটপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে করেছেন বিশেষ বর্ধিত সভা সমাবেশ।

এছাড়া উৎসবমুখর পরিবেশে পালন করেছেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার জন্মদিন। তৃণামূল নেতাকর্মীদের দাবি, যদিও চার বছরের অধিক সময় তার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে উন্নয়ন কর্মকাÐ নিয়ে আলোচনা সমালোচনা রয়েছে তবে দুই উপজেলার আওয়ামীলীগের সিংহভাগ নেতাকর্মীই তার মনোনয়ন পেতে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন। যা অতীতে কোন সংসদ সদস্যের শেষ সময়ে এসে এমন অকুণ্ঠ সমর্থন পাননি। তৃণামূল নেত্রকর্মীরা বলছেন, অসীম কুমার উকিল জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দলীয় নেত্রকর্মীদের সাথে কথা দিয়েছিলেন আপনারা আমাকে নৌকা মার্কায় একটি ভোট দিন, আমরা স্বামী-স্ত্রী দুজনেই মিলে চার হাতে কাজ করব। এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন করব। কিন্তু সে তুলনায় আশানুরূপ উন্নয়ন হয়নি। সে প্রশ্নে জনতার কথার উত্তরে অসীম কুমার উকিল ও অধ্যাপক অপু উকিল বলছেন, করোনার কারণে দুটি বছর উন্নয়ন কর্মকাÐ বন্ধ ছিল মন্ত্রাণালয় থেকেই, যে কারণে উন্নয়নের জোয়ার আসেনি। তবে কেন্দুয়া নেত্রকোনার সড়ক, কেন্দুয়া চিরাং সড়ক, কেন্দুয়া নওপাড়া সড়ক, নওপাড়া থেকে সড়াপাড়া সড়ক, কেন্দুয়া রেন্টিতলা থেকে সান্দিকোনা সড়ক, সাহিতপুর রোয়াইলবাড়ি সড়কের উন্নয়ন ছাড়াও গত প্রায় দুই মাসের মধ্যে বেশ কিছু রাস্তার উদ্বোধন করা হয়েছে। অসীম কুমার উকিল বলেন, উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত করার জন্য আমাকে আরেকবার সুযোগ দিন। আবার বলছেন, নৌকা যার আমি তার। শেখ হাসিনা যাকেই মনোনয়ন দেবেন আমরা সবাই মিলে সেই নির্বাচনে নৌকা মার্কার প্রার্থীকে বিজয়ী করব। শেখ হাসিনাকে আবারও প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসাতে চাই। মনে রাখবেন যতদিন শেখ হাসিনার হাতে দেশ তত দিন পথ হারাবেনা বাংলাদেশ। তৃণামূলের নেতাকর্মীরা আরও বলেন, অসীম কুমার উকিল এমপি হওয়ার পর দীর্ঘ ১৭ বছর পর উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়েছে। অতীতের যেকোন সময়ের তুলনায় আওয়ামীলীগ সুসংগঠিত এবং শক্তিশালী। গত ইউপি নির্বাচনেও ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে নৌকা মার্কার ৮ জন প্রার্থী ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। বিনা প্রতিদ্ব›দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি মো: নূরুল ইসলাম। তাছাড়া প্রায় প্রতি সপ্তাহেই নির্বাচনী এলাকায় এসে তৃণামূল নেতাকর্মীদের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগযোগ রেখেছেন চলছেন। মোট কথা তার আমলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত সংগঠন আওয়ামীলীগ অনেক শক্তিশালী।

ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু। তিনি একজন ভাগ্যবান ব্যাক্তি। তিনি নিজেই বলে থাকেন সামান্য কিছু টাকা নিয়ে ঢাকার উদ্দ্যেশ্যে গিয়েছিলেন ব্যবসা করতে, সেখানে শ্রমিক থেকে হয়েছেন শিল্পপতি। হঠাৎ করে নির্বাচন করতে এসে প্রথমে তিনি তৃণামূলের বিজয়ী আওয়ামীলীগের মো: আসাদুল হক ভ‚ঞাকে পরাজিত করে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। অবশ্য এ প্রসঙ্গে তৃণামূল নেতাকর্মীরা বলেন, এই নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনায়ন প্রত্যাশী শিল্পপতি সামছুল কবির খান, বিএনপির পৌরসভার মেয়র মো: দেলোয়ার হোসেন ভ‚ঞা দুলাল, চিরাং ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেত্রী সালমা আক্তার উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজাহান কবির, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীল চৌধুরী ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো: নূরুল ইসলাম একজোট হয়ে ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার পিন্টুর পক্ষে মাঠে নেমে পিন্টুকে বিজয়ী করেছিলেন। কিন্তু ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে তাদের সাথে সেই সম্পর্ক ধরে রাখতে পারেননি। পরে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নেত্রকোনা-৩ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী জসীম উদ্দিন ভ‚ঞাকে মনোনয়ন দিলেও তিনি কৌশলগত কারণে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান এমপি নির্বাচিত হন পিন্টু। তৃণামুল নেতাকর্মীরা বলেন, পিন্টু ভাগ্যবান ব্যক্তি হলেও তার র্দুভাগ্য তিনি যখন এমপি তখন বিএনপির দেলোয়ার হোসেন ভ‚ঞা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে মাত্র ৩টি ইউনিয়নে নৌকা মার্কার প্রার্থী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। বাকি ১০ টিতেই নৌকা হয় পরাজিত। তাছাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও মূল সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে সম্পর্কের টানা পোরেন ছিল অনেক বেশি। তার জনপ্রিয়তা থাকলেও এলকায় জনগণকে সময় দিয়েছেন অনেক কম। এলাকার উন্নয়ন কর্মকাÐ হলেও দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে দূরত্ব সৃষ্টি হওয়ায় তারা মুখ ফিরিয়ে নেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন না পেয়ে একেবারেই এলাকা ছেড়ে দেন তিনি। যেখানে চার বছর পর হঠাৎ করে মাঠে আসায় তাকে নিয়ে কিছু নেতাকর্মীরা যেমন উজ্জীবিত তেমনি সমালোচিতও। সর্বশেষ দূগাপুজা মন্ডপ পরিদর্শনে এসে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে নতুন প্রাণের সঞ্চার করেছেন। তবে কেন্দুয়া আটপাড়া সব মন্ডপে যাননি এবং সব মন্ডপের ব্যক্তিগত অনুদানও দেননি।

এডভোকেট আব্দুল মতিন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি এবং বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক। নেত্রকোনা-৩ আসনে বরাবরই মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে মাঠে কাজ করেন কিন্তু মনোনয়ন পাননা। তিনি বক্তৃতায় পারদর্শী। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন না পেলেও মাঠ ছাড়েননি তিনি। তার মতো করেই উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির চৌধুরী, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন ভ‚ঞা ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জান ভ‚ঞাসহ দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে সরাকারের উন্নয়ন কর্মকাÐের প্রচারপত্র বিতরণ করছেন। চাইছেন নৌকায় ভোট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও যাতে প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন সেজন্য নৌকা মার্কার প্রার্থীকে বিজয়ী করার আহবান জানাচ্ছেন। তিনিও বলছেন, নৌকা যার আমি তার। তবে এডভোকেট মতিন তৃণামূলে গণসংযোগ, পথসভা, সমাবেশ করলেও উপজেলা আওয়ামীলীগের কোন নেতাকর্মীকে তার সাথে দেখা যায়নি। তিনিও কেন্দুয়া আটপাড়ার দূর্গাপুজা মন্ডপে পুজারীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন এবং ব্যক্তিগত অনুদানও দিয়েছেন অনেক পুজা মন্ডপে।

মঞ্জুর কাদের কোরাইশী। জনপ্রিয় এই নেতা নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কা প্রার্থী হয়ে বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি জনগণকে যথেষ্ট সময় দিয়েছেন, উন্নয়নও হয়েছে বেশ কিছু। তবে তার শাসন আমলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ দিতে গিয়ে অনেক সমালোচিত হন। তৃণামূল নেতাকর্মীরা দাবি করে বলেন, এমপি কোরাইশীল আমলে নিয়োগ নিয়ে মেধার কোন যাচাই হয়নি, হয়েছে বাণিজ্যের। তাছাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগ ছিল দুই তিন ভাগে বিভক্ত। এক অংশের নেতাকর্মীদের নিয়ে কাজ করার কারণে এবং তার স্ত্রীকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সভাপতি পদে দায়িত্ব দেওয়ার কারণে অনেক বিতর্কিত হন তিনি। তার এসব কর্মকাÐ গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার হয়। বিভিন্ন সুত্রে জানা যায় মঞ্জুর কাদের কোরাইশীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিতর্কিত হওয়ার বিষয়টি দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার নজরে আসে। এর ফলে তিনি কোরাইশীর কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। বর্তমানে তিনি মঞ্জুর কাদের কোরাইশী নেত্রকোনা জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি মনোনীত হয়েছেন। নির্বাচনী মাঠে মাঝে মধ্যে গণসংযোগ করলেও মাঠে তেমন কোন প্রভাব ফেলতে পারেননি। সদ্য সমাপ্ত দূর্গাপুজায় তিনি তার প্রতিনিধির মাধ্যমে অনেক মন্ডপে শুভেচ্ছা পাঠিয়েছেন। সব কিছুর পরও আগামী নির্বাচনে তিনি নৌকার টিকিট পেতে দৌঁড় ঝাপ করছেন।

মো: নূরুল ইসলাম। তিনি দীর্ঘদিন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি দায়িত্বে ছিলেন। এর পুরষ্কার হিসাবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এমপি অসীম কুমার উকিলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ হাসিনা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে তার হাতে নৌকা মার্কা তুলে দেন। পরে আওয়ামীলীগ নেতা মো: কামরুল হাসান ভ‚ঞা প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী হতে চাইলে অসীম কুমার উকিল ও অধ্যাপক অপু উকিল বিশাল প্রভাব খাটিয়ে কামরুল হাসান ভ‚ঞাকে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীতা থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেন। যার ফলে তিনি বিনা প্রতিদ্ব›দ্বীতায় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। মো: নূরুল ইসলাম রাজনীতির বাইরে তিনি একজন গীতিকার, নাট্যকার ও লোকসাহিত্য সংগ্রাহক। নেত্রকোনার বাউলাগান বই রচনা করে তিনি আলোচনায় এসেছেন। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধে কেন্দুয়া, বঙ্গবন্ধুর হাত আজও আমার হাতে লেগে আছে, বিরাঙ্গনা সখিনা, চাঁদবেগের ফাঁসি নামক কয়েকটি গ্রন্থ রচনা করে তিনি সবার মুখে মুখে আছেন। তিনিও আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী।

সামছুল কবির খান। তিনি বিএনপি জামায়েত জোট সরকারের আমলে ২০০৩ সালে বিএনপির এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা ও পুলিশের সাবেক কর্মকর্তা নূরুল আমিন তালুকদারের মৃত্যুর পর গোলাপ ফুলের শুভেচ্ছা জানিয়ে কেন্দুয়া আটপাড়া নির্বাচনী এলাকায় প্রচুর পরিমাণে পোস্টার বিতরণ করেন। পরবর্তীতে বন্যা দুর্গত এলাকায় বিতরণ করেন ব্যক্তিগত ত্রাণ সামগ্রী। কেন্দুয়া উপজেলা সদর সন্নিকটে ছিলিমপুর গ্রামের বাসিন্দা তিনি। উপ-নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে বিশাল মোটর সাইকেল শোভাযাত্রা বের করে আলোচনায় আসেন তিনি। কিন্তু সে সময় উপ-নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হন এম জুবেদ আলী এডভোকেট। ওয়ান ইলিভেনের পর আবারও মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে মাঠে কাজ করেন তিনি। কিন্তু সেবারও মনোনায়ন পান এম জুবেদ আলী এডভোকেট। সামছুল কবির খান আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে আর্শ্বিবাদ হয়ে আগমণ ঘটে। কিন্তু দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে যেমন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচনে তৃণামূলের মনোনীত বিজয়ী প্রার্থী আসাদুল হক ভ‚ঞার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে পরাজিত প্রার্র্থী ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার পিন্টুকে বিজয়ী করলেও নিজের কপালে দুঃখ ডেকে আনেন। তাছাড়া নিজ গ্রামের আওয়ামীলীগের ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী সালমা আক্তারের বিপক্ষে গিয়ে বিএনপির প্রার্থী মশিউর রহমান ভ‚ঞা লিটনের পক্ষে সমর্থন দেওয়ায় সালমা আক্তার পরাজিত হয়েছিলেন। প্রায় এক বছর আগে ছিলিমপুর গ্রামের বাসিন্দা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজ-উর রহমান বিপুল জেলা পরিষদের সদস্য পদে নির্বাচনে প্রার্থী হন। কিন্তু নিজ গ্রামের প্রার্থী রেখে বিপুলের প্রকাশ্যে বিরোধীতা করেন সামছুল কবির খান। এসব বিষয় নিয়ে যেমন তার রয়েছে জনপ্রিয়তা আলোচনা তেমন রয়েছে সমালোচনা। তিনি বর্তমানে মাঠে কোন গণ সংযোগ, পথসভা, শুভেচ্ছা বিনিময় কিছুই করছেন না। তিনি বলছেন, আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন দিলে তিনি নৌকা নিয়ে মাঠে নামবেন। আবার যদি তাকে না দেওয়া হয় যাকে নৌকা দেওয়া হবে তার পক্ষেই মাঠে কাজ করবেন তিনি।

অধ্যাপক মিঞা মো: শফিকুল ইসলাম। তিনি কেন্দুয়া ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যাপক। এছাড়া বাংলাদেশ তাতিলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতির দায়িত্বে আছেন। তিনি ভারত বাংলাদেশ সম্প্রীতি পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির কো-চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন। সাবেক ছাত্রনেতা মিঞা মো: শফিকুল ইসলাম জানান বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের পরামর্শ নিয়েই আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে তার মতো করে মাঠে গণসংযোগ করছেন। তৃণামূল নেতাকর্মীদের দাবি মিঞা মো: শফিকুল ইসলাম একজন সহজ সরল মানুষ তিনি সকলের পছন্দের ব্যক্তি, তিনিও নৌকা পেয়ে আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে আসলে আমরা তাঁর জন্য কাজ করব।

আলমগীর হাসান। সাবেক ছাত্রনেতা ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে তিনি নেত্রকোনা জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য মনোনীত হয়েছেন। গত দুটি নির্বাচন থেকে তিনি মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। এবারও তিনি মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড ব্যতিক্রম ধর্মী প্রচারপত্র বিলি করছেন। তিনি বলেন, নতুনদের মূল্যায়ন করলে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা তাকেই মনোনয়ন দেবেন। এজন্য মাঠে আছেন তিনি সদ্য সমাপ্ত দূর্গাপুজায় পুজারীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন দিয়েছেন ব্যক্তিগত অনুদান। তিনি বলেন, দল থেকে যার হাতে নৌকা দেবে আমি সেই নৌকার প্রার্থীর পক্ষেই কাজ করব।

এছাড়া মনোনায়ন চাইছেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক সাবেক এমপি এম জুবেদ আলী এডভোকেটের ছেলে আমিনুল ইসলাম তুষার। তিনিও মাঠে গণসংযোগ করছেন ও সরকারের উন্নয়ন কর্মকাÐের প্রচারপত্র বিলি করছেন।

(এসবিএস/এএস/অক্টোবর ২৫, ২০২৩)