তপু ঘোষাল, সাভার : ঢাকা জেলার সাভারের আশুলিয়ায় শ্রমিক অসন্তোষকে কেন্দ্র করে কারখানায় ভাঙচুরের ঘটনায় আশুলিয়া থানায় তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় মোট অজ্ঞাত আসামির সংখ্যা ১ হাজার ৫০০। মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আশুলিয়ায় চলমান আন্দোলনের মধ্যেই এই মামলাগুলো দায়ের করা হয়। 

রবিবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে মামলার ব্যাপারে নিশ্চিত করে আশুলিয়া থানার পুলিশ। এর আগে শনিবার রাতে মামলা দায়ের করেন তিনটি ভুক্তভোগী কারখানা কর্তৃপক্ষ।

ভাঙচুর হওয়া তিনটি কারখানা হলো আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকার ছেইন এ্যাপারেলস লিমিটেড, বেরন সরকার মার্কেট এলাকার হা-মীম গ্রুপের নেক্সট কালেকশন্স লিমিটেড ও ধনাইদ ইউসুফ মার্কেট এলাকার ডিসাং সোয়েটার লিমিটেড।

মামলায় জানা গেছে, ৩১ অক্টোবর বেলা ১১টার দিকে কাঠগড়ার ছেইন এ্যাপারেলস লিমিটেডে ভাঙচুর চালায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিক ও বহিরাগতরা। এ ঘটনায় ৪০০ থেকে ৫০০ জন অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন কারখানার ডিজিএম অপারেশন মো. আনিসুর রহমান। ধনাইদ এলাকায় ডিসাং সোয়েটার কারখানায় ভাঙচুর হয় একই দিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ৩০০-৪০০ শ্রমিক ও বহিরাগত আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এ ছাড়া হা-মীম গ্রুপের নেক্সট কালেকশন্স লিমিটেডে গত ৩০ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৮টার দিকে হামলার ঘটনা ঘটে। সেদিন হামলায় গুরুতর আহত হন কারখানার শ্রমিকসহ কর্মকর্তারাও। কারখানার ক্ষতি হয় প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকার। অনধিকার প্রবেশ, হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট, জখম, চুরি ও ভাঙচুরের অভিযোগে এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে অজ্ঞাতনামা ৫০০-৬০০ জনের বিরুদ্ধে। তিন মামলায় মোট আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ১ হাজার ৫০০।

নেক্সট কালেকশন্স লিমিটেডের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. ফরহাদ উদ্দিন বলেন, ‘গতকাল আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজ আমাদের কারখানার শ্রমিকেরা কাজে ফিরেছেন। কারখানা চলছে।’

গত প্রায় সাত দিন ধরে চলে আসা মজুরি বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনের পর রোববার আশুলিয়া একেবারেই শান্ত। সরেজমিনে দেখা যায়, সকালে যথাসময়েই শ্রমিকেরা কারখানায় প্রবেশ করেছেন এবং কাজ করছেন। বিএনপি ও অন্যান্য সমমনা দলের ডাকে ৪৮ ঘণ্টার সর্বাত্মক অবরোধ চললেও আশুলিয়ার সড়কে যান চলাচল ছিল প্রায় স্বাভাবিক।

এ বিষয়ে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহিল কাফী বলেন, আজ সকাল থেকেই শ্রমিকেরা কাজে ফিরে গেছেন। সবাই স্বাধীনভাবে কাজ করছেন। তবে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে সতর্ক অবস্থানে আছে পুলিশ। এ ছাড়া কারখানায় ভাঙচুরের ঘটনায় তিনটি মামলা হয়েছে। কারা ভাঙচুর করেছে বা কারা জড়িত ছিল, সেই সব বিষয় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(টিবি/এসপি/নভেম্বর ০৫, ২০২৩)