নাটোর প্রতিনিধি : পাওনা ভ্যাট আদায় করতে গিয়ে একাধিকবার অপমানিত হওয়ার পর এখন নাটোর কাস্টমস বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মীরা ভ্যাটদাতাদের ভয় পাচ্ছে। সম্প্রতি বিসিক শিল্প এলাকায় একটি ছোট চানাচুর ফ্যাক্টরিতে গিয়ে কাস্টমস কর্মীরা অস্বাভাবিক পরিমাণ ভ্যাট দাবি করে। কারখানার মালিক তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে বিভিন্ন কারখানার মালিক শ্রমিকরা কাস্টমস কর্মীদের ঘেরাও করে। অবস্থা বেগতিক দেখে কাস্টমস কর্মকর্তা কারখানার মালিকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

জেলার অধিকাংশ ইট ভাটার মালিক মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট দেয় না। তাদের কাছে পাওনা হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। নাটোর কাস্টমস অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় তালিকাভুক্ত ইট ভাটা আছে ৯৭ টি। এর মধ্যে ৪৮ টি ভাটার মলিক চলতি অর্থ বছরে তাদের উৎপাদিত ইটের ওপর আরোপিত ভ্যাট জমা দিয়েছে। এর আগে প্রতিটি ইট ভাটার ওপর ২ লাখ ৪৭ হাজার ৫০০ টাকা ভ্যাট নির্ধারণ করা হয়। সবচেয়ে বেশি টাকা পাওনা আছে লালপুর উপজেলার ইট ভাটা মালিকদের নিকট। আদায়ের জন্য অভিযান চালানো হলেও ব্যর্থ ও অপমানিত হয়ে ফিরে আসতে হয়েছে।

ভ্যাট না দেয়ায় শহরের একটি কম্পিউটার বিক্রেতার বিরুদ্ধে মামলা ও জরিমানা করা হয়। কিন্তু ঐ বিক্রেতা জরিমানার টাকা পরিশোধ করেননি। জেলার কোনও দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিক্রেতাকে পণ্য ক্রয়ের জন্য রশিদ বা চালান দেয় না। ফলে ভ্যাটের পরিমাণও জানা সম্ভব হয় না। তারা মাসিক নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা ভ্যাট হিসেবে জমা দেয়। ভ্যাট কর্মীরা আপত্তি করলে তাদের হাতে নগদ কিছু ধরিয়ে দেয়া হয়। অধিকাংশ ফ্যাক্টরির মালিকও একই কৌশল গ্রহণ করে।

নাটোর কাস্টমস বিভাগের সহকারী কমিশনার কেফায়েত উল্লাহ মজুমদার উল্লেখিত ঘটনা সমূহের সত্যতা স্বীকার করে জানান, ইট ভাটার কতিপয় মালিকসহ অনেকে ভ্যাট দিতে চান না। অনেকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়াও সম্ভব হয় না। কাস্টমস বিভাগের লোকবল কম। যানবাহন ও আগ্নেয়াস্ত্র নেই। ফলে প্রভাবশালীরা তাদের ভয় করে না, গুরুত্ব দেয় না।

(এমআর/এএস/নভেম্বর ০৬, ২০১৪)