২০ নভেম্বর, ১৯৭১
কিশোরগঞ্জে পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিবাহিনীর তুমুল সংঘর্ষ শুরু হয়
উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : ভারতীয় পার্লামেন্টে শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী বলেন, ভারত আশা করে জাতিসংঘ মহাসচিব পূর্ববঙ্গে গৃহযুদ্ধের অবসানে আত্মনিয়োগ করবেন। তিনি বলেন, পূর্ববঙ্গের সাড়ে সাত কোটি মানুষের ভাগ্য ও অধিকার প্রতিষ্ঠার সমস্যাকে ধামাচাপা দিয়ে এটিকে পাক-ভারত বিরোধে রূপান্তরিত করলে তা শুধু সমস্যাকে বাড়িয়ে তুলবে। তিনি বলেন, আমি মহাসচিবকে এই নিশ্চয়তা দিতে চাই পাকিস্তান আক্রমণ করার অথবা পাকিস্তানের সাথে সশস্ত্র সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ার কোনো ইচ্ছেই আমাদের নেই।
টেংরাটিলা আক্রমণের পূর্বে সেক্টর কম্যান্ডার মেজর শওকত তাঁর বাঁশতলা সেক্টর হেড কোয়ার্টারে এক সভা আহবান করেন। সভায় টেংরাটিলা আক্রমণের বিষয় নিয়ে মেজর শওকত বিস্তারিত আলোচনা করেন। ঐ সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ক্যাপ্টেন মহসীন, ক্যাপ্টেন আকবর, ক্যাপ্টেন হেলাল, লেঃ মাহবুবার রহমান এবং কয়েকজন এফ.এফ. লিডার।
কালীগঞ্জে মুক্তিবাহিনীর সাথে পাকবাহিনীর সংঘর্ষ হয়। কালীগঞ্জের ওয়াপদা কলোনীতে পাকসেনাদের একটি কোম্পানী অবস্থান করছিল। তাদের সাথে বেশ কিছু রাজাকারও ছিল। এই যুদ্ধে মিত্রবাহিনীর ৩য় রাজপুত ব্যাটালিয়ন হিঙ্গলগঞ্জ থেকে মুক্তিবাহিনীকে আর্টিলারী সাপোর্ট দেয়। দুঘন্টা স্থায়ী যুদ্ধে পাকবাহিনীর কোন ক্ষতি না হলেও ৪০ জন পাকসৈন্য মুক্তিবাহিনীর হাতে ধরা পড়ে।
মুক্তিবাহিনীর তীব্র আক্রমণে পাকবাহিনী নৌকুচি থেকে আহমদনগরে যে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিল তা বিপযস্ত হয়ে পড়ে। পাকবাহিনী এখান থেকে পিছু হটতে বাধ্য হয়।
সাহেবগঞ্জ সাবসেক্টর বাহিনী মেজর নওয়াজেশ উদ্দিন-এর কমান্ডে প্ক অবস্থানের ওপর আক্রমণ চালায়। প্রচন্ড সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে রায়গঞ্জ মুক্তিবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে এলেও তরুণ মুক্তিযোদ্ধা লে. আশফাকুস সামাদ যুদ্ধে শহীদ হন। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সরকার তাকে মরণোত্তর বীর উত্তম উপাধি প্রদান করেন। উল্লেখ্য ঐ যুদ্ধে ২০ জন পাকসৈন্য নিহত হয়।
মুক্তিবাহিনী কিশোরগঞ্জের গচিহাটায় সদ্য- নির্মিত রেলওয়ে ব্রীজ ধ্বংস করে দেয়। এর অব্যবহিত পরেই কিশোরগঞ্জে পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিবাহিনীর তুমুল সংঘর্ষ শুরু হয়। ফলে কিশোরগঞ্জ শহর জনমানব শূন্য হয়ে পড়ে।
তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
(ওএস/এএস/নভেম্বর ২০, ২০২৩)