মোঃ শাজনুস শরীফ, বরগুনা : ছুটিতে বাড়িতে এসে যুবক কে মারধর করে নন জুডিশিয়াল অলিম্পিয়াডে সাদা ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রেখে ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ উঠেছে এক র‍্যাব সদস্যের বিরুদ্ধে। মারধর ও সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রেখে ভয় দেখানোর বিষয়টি স্বীকার করেছেন ওই র‍্যাব সদস্য।

অভিযুক্ত ওই র‍্যাব সদস্য বরগুনার বেতাগী উপজেলার ৭ নম্বর সরিষামুড়ি ইউনিয়নের সরিষামুড়ি গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মরহুম বজলুর রহমানের ছেলে বেলাল। বেলাল বর্তমানে র‍্যাব হেড কোয়ার্টারে কর্মরত আছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

শনিবার (২৫ নভেম্বর) রাতে সদর উপজেলার ১নং বদরখালী ইউনিয়নের বদরখালী গ্রামের শিকদার বাড়ীর ভুক্তভোগী সাব্বির শিকদার নামের ওই যুবক গণমাধ্যমকে জানান, বদরখালী এলাকার এক নারীর সাথে প্রেমের সম্পর্কের ঘটনায় শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) রাত আটটার দিকে বরগুনার লাকুরতলা-মাছ বাজার ব্রীজের উপর থেকে র‍্যাবের সাব ইন্সপেক্টর পরিচয়ে অভিযুক্ত র‍্যাব সদস্য বেলালসহ সজল ও আজাদ নামের আরো দুজন তাকে (সাব্বির কে) ধরে নিয়ে এসে পৌর শহরের উকিল পট্টি (কুড়া পট্টি) এলাকার অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমানের "ল" চেম্বারের পিছনে অন্ধকার একটি কক্ষে আটকে রেখে মারধর করে। পরে নন জুডিশিয়াল অলিখিত সাদা ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রেখে মেরে ফেলার হুমকি ধামকি দেয়। এসময় রাজিব শিকদার নামের অপর এক যুবক সাব্বিরকে মারধরের হাত থেকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসলে তাকেও মারধর করে বেলাল। বেলালের মারধরে রাজিব শিকদারের ঠোট ফেটে যায়। পরে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগে চিকিৎসা নেয় রাজিব।

সাব্বির আরো বলেন, মারধর ও সাদা ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রাখার পরে ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য তার সাথে থাকা সতেরো হাজার টাকা ও রাজিব নামের ওই যুবকের বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিং এ্যাকাউন্টে থাকা চার হাজার টাকা অভিযুক্ত র‍্যাব সদস্য বেলাল নিয়ে যায়। ঘটনার বিষয় নিয়ে আদালতে মামলা করার কথাও জানান তিনি।

অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ছেলে মেয়ের একটি বিষয় নিয়ে আমার ল চেম্বারে পরিচিত একজন র‍্যাব সদস্য বসেছিলেন। এসময় ষ্ট্যাম্পেও স্বাক্ষর রাখা হয়েছে আমি শুনেছি, তবে ঘটনার সময়ে আমি চেম্বারে ছিলাম না।

অভিযুক্ত র‍্যাব সদস্য বেলাল মোবাইল ফোনে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সাব্বিরকে একটা থাপ্পড় দিয়ে ভয়ে রাখার জন্য সাদা ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রাখা হয়েছে। তবে কোন টাকা পয়সা রাখা হয়নি।

বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম মিজানুর রহমান বলেন, ঘটনার বিষয়ে থানায় কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে অভিযোগ পেলে আমার উর্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

(এসএস/এসপি/নভেম্বর ২৬, ২০২৩)