ঝিনাইদহে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা, আটক ২

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ : শ্মশানের গাছ কাটার প্রতিবাদ করায় ঝিনাইদহে হিন্দু সম্প্রদায়ের চার ব্যক্তিকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে সদর উপজেলার শ্রীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন, ওই গ্রামের সন্তোষ কুমার বিশ্বাস, অমল কুমার বিশ্বাস, বিশ্বজিৎ প্রামাণিক ও চিরঞ্জীব কুমার বিশ্বাস।
আহত অমল কুমার বিশ্বাস জানান, কয়েকদিন আগে শ্রীপুর শ্মশানের গাছ কেটে বিক্রি করে দেয় পার্শ্ববর্তী গোপালপুর গ্রামের টিটন,মিল্টন ও মাসুদের নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের একটা সংঘবদ্ধ দল। এ নিয়ে আমরা প্রতিবাদ করলে সন্ধ্যায় তারা দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়। এ সময় আমাদেরকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে মারাত্মক জখম করে তারা পালিয়ে যায়। আমাদের আত্মচিৎকারে স্থানীয়রা এসে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক রাজীব কুমার ঘোষ জানান, আহতদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।
এদিকে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলার খবর পেয়ে আহতদের দেখতে হাসপাতালে আসেন ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক এসএম রফিকুল ইসলাম, জেলা পুলিশ সুপার আজিম-উল-আহসান,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান জাকারিয়া,সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিয়া আক্তার চৌধুরী,সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো: শাহীন উদ্দিনসহ প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তারা।
সেসময় আহতদের চিকিৎসার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা, জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। এছাড়াও স্থানীয় মধুহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন ব্যক্তিগতভাবে আহতদের ৬০ হাজার টাকা প্রদান করেন।
হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর এমন বর্বরোচিত হামলার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন ঝিনাইদহের সচেতন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। তাঁরা দাবি করছেন জেলায় একের পর এক হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলার ঘটনা ঘটলেও তাঁরা বরাবরই ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এ ধরনের ঘটনায় দেশে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে।তাই প্রশাসনকে খুব দ্রুত হামলাকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার আজিম-উল-আহসান জানান, হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলার ঘটনা অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করছি। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে দুইজনকে আটক করা হয়েছে। বাকি হামলাকারীদের শনাক্ত করে খুব দ্রুতই আমরা আইনের আওতায় আনতে পারবো। এ বিষয়ে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে।
(একে/এএস/নভেম্বর ৩০, ২০২৩)