ইন্দ্রজিৎ সাহা, কালিয়াকৈর : বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে ৫৩ বছর। ত্রিশ লক্ষ শহীদ ও দুই লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রম আর আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমাদের এই স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ডাকে যে সকল তরুণ প্রাণ দেশ স্বাধীন করার জন্য যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন তাদের মধ্যে একজন গাজীপুর জেলাধীন কালিয়াকৈর উপজেলার আটাবহ ইউনিয়নের সেওড়াতলী গ্রামের ক্ষিতীশ চন্দ্র সাহা।

মুক্তিযুদ্ধের সময় বর্বর পাক বাহিনী ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান সহ বসতভিটা জালিয়ে দেয়। চেখের সামনে পুরতে দেখেন নিজের বসত ভিটা। এসময় ভারতের দেরাদুৃন ক্যাম্পে ট্রেণিং প্রাপ্ত বন্ধুবর পরিমল গোস্বামী দেশে ফিরে এসে কিছু তরুন, যুবকদের সংগঠিত করে হ্যান্ড গ্রেনেড, থ্রি নট থ্রি রাইফেল দিয়ে তাদেরকে ট্রেণিং করিয়ে সম্মুখ সমরে যুদ্ধ করার উপযুক্ত করে তুলেন। কালিয়ারৈ উপজেলার শ্রীফলতলী জমিদার বাড়ী ও প্রত্যন্ত শাহবাজপুর গ্রামে ক্যাম্প গড়ে তুলেন। গোহাইলবাড়ী ও খারাজোড়া এলাকায় তিনি সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেন। যুদ্ধ শেষে ঢাকা স্টেডিয়ামে অস্ত্র জমা দিয়ে একটি সার্টিফিকেট প্রাপ্ত হন। ১৯৮৮ সালের ভয়াবহ বণ্যায় বসত ভিটা তলিয়ে যাওয়ায় সার্টিফিকেট সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নষ্ট হয়ে যায়। এর পর থেকে মুক্তিযোদ্ধার সীকৃতি লাভের আশায় বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে আবেদন করেও কোন লাভ হয়নি। দারিদ্রতার সাথে যুদ্ধ করে একবুক হতাশা নিয়ে ২০০৯ সালে মারা যাণ এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।

২০১৪সালে নতুন করে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তভুক্তির ঘোষনা দিলে তার ছেলে ওনার তিনজন সহযোদ্ধার কাছ থেকে প্রত্যয়ন পত্র সংগ্রহ করে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে আবেদন করে। ২০১৪ সালের উপজেলা ভিত্তিক যাচাই বাছাই কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৭ সালে। যাচাই বাছাই কার্যক্রম দেড়িতে শুরু হওয়ায় তিন জন সাক্ষির মধ্যে দুজন সহযোদ্ধা মারা যান। এছাড়া জামুকাতেও আবেদন করেন তার পুত্র। এত কিছু করেও মুক্তিযোদ্ধার সীকৃতি আজও পাননি এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।

(আইএস/এসপি/ডিসেম্বর ০২, ২০২৩)