শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি : একজন শিক্ষকের একগুয়েমির কারণে দু’টি স্কুলের ৪১৬ জন জেএসসি পরীক্ষার্থীকে ১২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে উপজেলা সদরে এসে পরীক্ষায় অংশ নিতে হচ্ছে।

জানা গেছে, শাহজাদপুর উপজেলায় ৫টি পরীক্ষা কেন্দ্রের মাধ্যমে ৫ হাজার ১৪৬ জন পরীক্ষার্থী এবার জেএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করছে। শাহজাদপুর উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দুরে তালগাছী ও জামিরতা দুটি পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে ১৪টি স্কুলের ১ হাজার ২৬৫ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিলেও তালগাছী ও জামিরতা স্কুলে কেন্দ্র হওয়ায় ওই স্কুল দুটির ৪১৬ জন জেএসসি পরীক্ষার্থী আইনের মারপ্যাচে তারা নিজ নিজ কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে পারছেনা। বাধ্য হয়ে উপজেলা সদরে এসে তাদের পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। এতে তাদের ভোগান্তি ও কষ্ট দুই-ই বেড়ে গেছে।

এদিকে তালগাছী আবু ইসহাক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পারভেজ আক্তার জানান, তার স্কুলের জেএসসি পরীক্ষার্থীদের স্কুল কেন্দ্রে বিকল্প ভেন্যুতে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য তালগাছী করতোয়া কলেজে পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপনের জন্য রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড অনুমতি দিলেও শাহজাদপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব এস এম সাইফুল ইসলামের আপত্তির কারণে তা আর সম্ভব হয়নি । তাই অবর্ণনীয় কষ্টের মধ্যে তার স্কুলের ২২৫ জন জেএসসি পরীক্ষার্থী উপজেলা সদরে গিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে।

এদিকে জামিরতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হক জানান, তালগাছী কেন্দ্রের বিকল্প ভেন্যুবাদ পড়ায় তার প্রস্তাবটিও নাকোচ হয়ে যায়। এ ব্যাপারে শাহজাদপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের কেন্দ্র সচিব ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম সাইফুল ইসলামের সাথে ভেন্যুটি বাতিলের কারণ নিয়ে কথা হলে তিনি জানান, যে স্কুলে কেন্দ্র হয় ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক পদাধিকার বলে কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। তাই ওই স্কুলের পরীক্ষার্থীদের তাদের স্কুলের কেন্দ্রে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ থাকে না। আপনার আপত্তিতেই তালগাছি কেন্দ্রের বিকল্প ভেন্যুটি বাতিল হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, শিক্ষা বোর্ডের নিয়মানুযায়ী ভেনুটি বাতিল হয়েছে, আমার আপত্তির জন্য হয়নি।

এদিকে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম আহমেদ এর সাথে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তালগাছী স্কুলের পরীক্ষার্থীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পারভেজ আক্তার তালগাছীতে বিকল্প ভেন্যুতে তার স্কুলের পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়ার জন্য তার মাধ্যমে জেলা প্রশাসকের নিকট আবেদন করলে জেলা প্রশাসক আবেদনটি তদন্ত শেষে ভেন্যুটি স্থাপনের জন্য শিক্ষা বোর্ডে পাঠান।

শিক্ষা বোর্ড তদন্ত শেষে ভেন্যুটি স্থাপনের নির্দেশ দেন। তিনি আরো জানান ওই ভেন্যুতে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য একজন সচিব নিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহুর্তে একজন ব্যক্তির আপত্তির কারণে শিক্ষা বোর্ড ভেন্যুটি বাতিল করে দেওয়ায় ওই দুই স্কুলের পরীক্ষার্থীদের ১২ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে উপজেলা সদরে এসে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। তিনি আরো জানান ওই বিদ্যালয় দুটির পরীক্ষার্থীদের ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে ভবিষ্যতে ওই কেন্দ্রে এসএসসি ও জেএসসি পরীক্ষার বিকল্প ভেন্যু স্থাপন জরুরি। উপজেলা মাধ্যমিক অফিসার শফিকুল ইসলামের সাথে ভেন্যুটি বাতিলের কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, স্কুলের প্রধান শিক্ষক কেন্দ্র সচিব হলে তার অধীনে ওই বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে পারে না। তাই ভেন্যুটি বাতিল হয়েছে।

(এআরপি/এএস/নভেম্বর ০৮, ২০১৪)