ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : দুই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ঈশ্বরদী-রূপপুর সড়ক দু’বছরও টিকতে পারল না। এরইমধ্যে সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভেঙে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কয়েকটি স্থানে বিটুমিন উঠে ইট, সুরকি ও বালু বের হয়ে ধুলা ওঠায় চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ভাঙা স্থানে ছোট-খাটো দুর্ঘটনা নিত্যদিনের ঘটনা। স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহযোগীতায় ঠিকাদার নিম্নমানের কাজ করায় অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে এলাকাবাসীরা অভিযোগ করেছেন। ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি ওজনের যানবাহন, বিশেষ করে ইট ও বালুবাহী ট্রাক চলাচল করায় সড়কটি ভেঙে দেবে গেছে বলে স্থানীয় প্রকৌশল বিভাগ এবং ঠিকাদার দাবি করেছেন।

জানা গেছে, ঈশ্বরদী পৌরসভা প্রান্তের উমিরপুর থেকে বাঘইল হয়ে রূপপুর মোড় পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার সড়কটি নির্মাণ করেছে স্থানীয় সরকারের ঈশ্বরদী উপজেলা প্রকৌশল দপ্তর। নির্মাণে প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে বলে প্রকৌশল দপ্তর জানিয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরের মার্চ মাসে শুরু হয় ঈশ্বরদী-রূপপুর সড়কের কাজ, শেষ হয় এপ্রিলে। পরে এক বছরের মধ্যেই বিভিন্ন স্থান ভেঙে গেলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে সংস্কার করা হয়েছিল। তবে ঠিকাদারের দেখভাল করার নির্ধারিত সময় অর্থাৎ এক বছর পর ফের সড়কটি ভেঙে গেছে। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।

বুধবার ( ৬ ডিসেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায়, বিভিন্ন স্থানে ভেঙে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কয়েকটি স্থানে বিটুমিন উঠে ইট, সুরকি ও বালু বের হয়ে ধুলা ওঠায় চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। উমিরপুর এলাকায় যেখানে সড়কটির শুরু, সেখান থেকে সামান্য দূরে কয়েকটি স্থানে দেবে গিয়ে আড়াআড়িভাবে ছোট- বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। স্থানীয় আব্দুল মান্নান জানান, প্রতিদিন ছোটখাটো দুর্ঘটনার শিকার হয়ে অনেকেই আহত হচ্ছে। ছোটখাটো দুর্ঘটনা এখানে নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে গেছে।

প্রকৌশল অধিদপ্তরের ঈশ্বরদী কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কোনো সড়ক নির্মাণের পর সেটি ন্যূনতম তিন বছর পর্যন্ত চলাচলের যোগ্য থাকতে হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানও নির্মাণের এক বছর সময় পর্যন্ত দেখভাল করতে বাধ্য। এ সময়ের মধ্যে ভেঙে গেলে তা সংস্কার এবং সংস্কার না করলে ঠিকাদারের জামানত বাজেয়াপ্তের বিধান রয়েছে।

ঠিকাদার জিনাত আলী জিন্নাহ এ বিষয়ে বলেন, নিয়ম মেনেই কাজ করা হয়েছে। এক বছর পর্যন্ত সংস্কারের দায়িত্ব ছিল। এখন ভেঙে গেলে এর দায় ঠিকাদারের নেই।

উপজেলা প্রকৌশলী এনামুল কবির তিন বছর আগে রাস্তার ওই অংশ নির্মাণ হয়েছে জানিয়ে বলেন, সড়কটির উভয় পাশে মাঠে পানি জমে। নিচু জমিতে পলি মাটি থাকায় সড়কের পিচ স্থায়ী হচ্ছে না। তাছাড়াও রাস্তার ধারণ ক্ষমতার বেশি ওজনের যানবাহন চলাচলের কারণে ৩০০ মিটারের মধ্যে কিছু অংশ ভেঙে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এটি মেরামত করা হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আগামীতে প্লানিং ও বালু ভরাট করে নতুনভাবে ওই রাস্তা নির্মাণ করা হবে।

(এসকেকে/এএস/ডিসেম্বর ০৬, ২০২৩)