নারীকে ফাঁসাতে গিয়ে দিনমজুরকে হত্যা
স্কেচ ফটোগ্রাফের মাধ্যমে মামলার আসামী গ্রেপ্তার
অরিত্র কুণ্ডু, ঝিনাইদহ : থানায় দায়ের করা অভিযোগ তুলে না নেওয়াই নারীকে ফাঁসাতে গিয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার রামনগর গ্রামে দিনমজুর আসলাম হোসেন (৪৩) কে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় সোহেল রানা নামের এক জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে মানিকগঞ্জ জেলার সদর থানার চান্দিরচর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে ঝিনাইদহের শৈলকূপার দুধসর এলাকায় বসবাস করতো।
আজ বুধবার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় পুলিশ সুপার আজিম-উল-আহসান।
সেসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) ইমরান জাকারিয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(অপরাধ ও অপারেশন) মোহাম্মদ মহিদুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মীর আবিদুর রহমান, সদর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহীন উদ্দিনসহ জেলা পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আজিম-উল-আহসান জানান, গত ১৮ নভেম্বর সকালে সদর উপজেলার রামনগর গ্রামের একটি কলাক্ষেত থেকে দিনমজুর আসলাম হোসেনের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সে পাবনা জেলার চাটমোহর থানার বহরামপুর গ্রামের মৃত ফরিদুল ইসলামের ছেলে। তখন আসলাম হোসেনের প্যান্টের পকেট থেকে নাজমা বেগম নামের শৈলকূপা উপজেলার দুধসর গ্রামের এক নারীর জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি পায় পুলিশ।
পরে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলা এবং সেই পরিচয়পত্রের সূত্র ধরে নাজমা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় একই এলাকায় বসবাসের সূত্র ধরে তার সাথে সোহেল রানার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বেশ কিছুদিন যাবৎ তাদের সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে। পরে নাজমা শৈলকূপা থানায় সোহেল রানার নামে নিজের রান্না ঘর পুড়িয়ে দেওয়া ও মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগ দায়ের করে। সেই অভিযোগ তুলে নিতে সোহেল তাকে হুমকি দিতে থাকে এবং নিজে আত্মগোপনে থাকে।
পুলিশ সুপার আরো জানায়, সোহেলের কোন ছবি না থাকায় নাজমার বর্ণনা অনুসারে স্কেচ তৈরি করে বিভিন্ন থানায় পাঠানো হয়। পরে অবস্থান নিশ্চিত হয়ে র্যাবের সহায়তায় মানিকগঞ্জ জেলার সদর থানার চান্দির চর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত সোহেল রানা ১৭ নভেম্বর ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের মুরগিহাট এলাকায় কাজের জন্য যায়। সেখানেই তার সাথে পরিচয় হয় পাবনা থেকে কাজের জন্য আসা আসলাম হোসেনের। তখন সে কাজ দেওয়ার কথা বলে আসলামকে জেলা সদরের রামনগর গ্রামের কলাক্ষেতে নিয়ে যায় এবং শাবল দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে। পরে নাজমা বেগমকে ফাঁসাতে জাতীয় পরিচয়পত্র আসলামের প্যান্টের পকেটে রেখে দেয়।
(একে/এসপি/ডিসেম্বর ০৬, ২০২৩)