ইন্দ্রজিৎ সাহা, কালিয়াকৈর : পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবিসহ সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ছবি ও ভুয়া ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে নগদ অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক প্রতারককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এছাড়া বিকাশের মাধ্যমে প্রতারণায় দায়ে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বুধবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে গাজীপুর মহানগর পুলিশের সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান উপকমিশনার মোহাম্মদ ইব্রাহীম খান।

গ্রেফতাররা হলেন— জামালপুরের সরিষাবাড়ী থানার বাঘমারা গ্রামের আলহাজ মিয়ার ছেলে লিটন মিয়া, শেরপুর জেলার তাতীহাটি পূর্ব পাড়া গ্রামের সুরুজ মিয়ার ছেলে আকিল হাসান ও তার শ্বশুর কালিয়াকৈর উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের দধীমন্ডলের ছেলে শফিকুল ইসলাম।

পুলিশ কমিশনার বলেন, গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার ফজলুল করিমের নাম ও ছবি ব্যবহার করে ভুয়া ফেসবুক আইডি তৈরি করে প্রতারক লিটন। পরে আউট চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে নগদ টাকা আত্মসাত করেন লিটন। পরে পুলিশের সাইবার টিম ওই ফেসবুক আইডি শনাক্ত করে জামালপুর জেলায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।

পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, গ্রেফতার লিটনের জব্দ করা দুটি মোবাইল ফোন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, লিটন পুলিশ, র‌্যাব, ফায়ার সার্ভিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নাম, ছবি দিয়ে একাধিক ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা আত্মসাত করে আসছে।

ভুক্তভোগী পুলিশ কর্মকর্তা ফজলুল করিম বলেন, তার নাম ও ছবি ব্যবহার করে প্রতারক লিটন অন্তত দুইশ মানুষের কাছ থেকে টাকা আত্মসাত করেছে। চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে কারো কাছে ১০ হাজার, কারো থেকে ২০ হাজার টাকা করে নিয়েছে। মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে সে সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ছবি, নাম ব্যবহার করে দীর্ঘ দিন ধরে প্রতারণা করছে।

এদিকে, বিকাশ, নগদ এজেন্টদের পিন নম্বর সুকৌশলে সংগ্রহ করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আকিল হাসান ও তার শ্বশুর শফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়।

এ ব্যাপারে উপকমিশনার কামাল হোসেন বলেন, গত ১৯ নভেম্বর সদর থানায় একটি বিকাশ, নগদ একাউন্টসহ মোবাইল ফোন এবং নগদ ৫০ হাজার টাকা চুরির মামলা হয়। মামলা তদন্ত করে গতকাল গাজীপুর মহানগর টঙ্গী পূর্ব ও কালিয়াকৈর থানা এলাকা থেকে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা জানান, তারা বিকাশ প্রতারণার ঘটনা ধারাবাহিকভাবে ঘটিয়ে আসছে। তাদের চক্রের সদস্যরা বিকাশ এজেন্ট দোকানকে টার্গেট করে তাদের লেনদেনকালে সুকৌশলে এজেন্টদের বিকাশ, নগদ এর পিন নম্বর সংগ্রহ করে। এজেন্টদের বিকাশ পিন নম্বর সংগ্রহের পরবর্তীতে তারা রাতে বা সুবিধামত দিনের যেকোনো সময় বিকাশ, নগদ একাউন্ট চালু করা মোবাইল ফোনটি চুরি করে পিন নম্বর দিয়ে টাকা উত্তোলন করে। গ্রেফতারের পর বাদীর চুরি হওয়া মোবাইল ফোন এবং নগদ ৪৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

এছাড়া গ্রেফতাররা বাদীর নগদ এজেন্ট ও বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট থেকে ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৯০০ টাকা বিভিন্ন পার্সোনাল এবং এজেন্ট নম্বর দিয়ে টাকা উত্তোলন করে নেয়।

(আইএস/এএস/ডিসেম্বর ০৬, ২০২৩)