রবিউল ইসলাম, গাইবান্ধা : গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার পবনাপুর ইউনিয়নের ফকিরহাট বাজার এলাকার আল্লাহর দরগা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসায় সুপার, সহকারী সুপার ও তিন জন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীসহ ৫ জনকে ২২ লাখ টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ প্রক্রিয়ায় ৯ ডিসেম্বর শনিবার অত্র মাদ্রাসায় ৫ সদস্যের নিয়োগ বোর্ড বসিয়ে নিয়োগ সম্পন্ন করেছে বলে জানিয়েছেন অত্র মাদ্রাসার পরিচালনা পরিষদের সভাপতি আব্দুস সালাম। তবে স্থানীয়রা বলছেন ৪০ লাখ টাকার উপরে লেনদেন হয়েছে এই নিয়োগে।

ওই মাদ্রাসার সভাপতি আরো বলেন, আমি লেখাপড়া জানি না, একজন কৃষক মানুষ আমি এতো কিছু বুঝি না আমাকে স্বাক্ষর করতে বললে আমি স্বাক্ষর দিয়েছি। মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার কেএম তাহের খন্দকার ও তার মনোনীত মাদ্রাসার শিক্ষক মামুনসহ কয়েকজন এসব টাকার বিনিময়ে নিয়োগ বোর্ডকে ম্যানেজ করে নিয়োগ সম্পন্ন করেছেন। আমার জানা মতে এতে খরচ হয়েছে প্রায় ৭ লাখ টাকা, আমি সভাপতি হিসাবে নিয়োগ বোর্ডে থাকলেও কারা এসব পদে নিয়োগ পেয়েছেন তাদের আমি দেখিনি বা তারা কারা তা বলতে পারবো না।

১০ ডিসেম্বর রবিবার ১টার দিকে মাদ্রাসায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাদ্রাসায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়নি। অফিস সহকারী শহিদুল ইসলাম নিজ অফিস কক্ষে বসে অফিস করছেন। তিনি বলেন মাদ্রাসায় ভারপ্রাপ্ত সুপার নেই তিনি বাহিরে গেছেন। এছাড়াও মাদ্রাসায় সহকারী মৌলভী শিক্ষকসহ আরেক জনকে পাওয়া গেলেও ভারপ্রাপ্ত সুপারসহ ১১ জন শিক্ষকের কেউ উপস্থিত ছিলেন।

এবিষয়ে ভারপ্রাপ্ত সুপার কেএম তাহের খন্দকার মুঠো ফোনে জানায়, ব্যক্তিগত কাজে আমি পলাশবাড়ীতে রয়েছি। নিয়োগের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি সাক্ষাৎ এ কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন। মাদ্রাসার একাধিক শিক্ষক কর্মচারী ও অভিভাবক সদস্য জানান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদেরকে ম্যানেজ করে ভারপ্রাপ্ত সুপার কেএম তাহের খন্দকার তার মনোনীত প্রার্থীদের দিয়ে এসকল নিয়োগ সম্পন্ন করা হলেও আমরা নিয়োগ বিষয়ে কিছু জানি না। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের মনোনীত শিক্ষকগণ জানেন। উক্ত মাদ্রাসার নিয়োগ বোর্ডের সদস্য ও পলাশবাড়ী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এবিএম নাকিবুল হাসান জানান, নিয়োগ বোর্ড পরিচালনার সময় মাদ্রাসার সভাপতি উপস্থিত ছিলেন। নিয়োগের বিষয়ে তিনি সব জানেন এখন যদি বলেন তিনি জানেন না তাহলে তো দুঃখজনক। তিনি আরো দাবী করেন সকল প্রক্রিয়া মেনে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। অর্থ নেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। উল্লেখ্য, ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত আল্লাহর দরগা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এতে বর্তমান ১৩ জন শিক্ষক ও ৩ জন কর্মচারী এবং ৪ শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে বলে মাদ্রাসা সূত্রে জানা যায়। এ মাদ্রাসাটির সঠিক সময়ে শিক্ষক ও কর্মচারীরা উপস্থিত না হওয়া ও নিয়োগ বানিজ্যসহ নানা অনিয়মের বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নিকট তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানান সচেতন মহল।

(আরআই/এএস/ডিসেম্বর ১০, ২০২৩)