উজ্জ্বল হোসাইন, চাঁদপুর : ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ার কারণে চাঁদপুরে বাড়ছে শীতের প্রকোপ। গত তিন দিন ধরে কনকনে শীত অনুভব হচ্ছে। আজ বুধবার এলাকায় সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। ট্রেন, বাস ও নৌ চলাচল দারুণভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। শীতে কাজ করতে কষ্ট হচ্ছে শ্রমজীবী মানুষের।

শীতবস্ত্রের অভাবে হতদরিদ্র শিশু, নারী ও বয়স্করা পড়েছেন বিপাকে। দেখা দিচ্ছে শীতজনিত নানা রোগব্যাধি।

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে জানা যায়, ঠান্ডাজণিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে হাসপাতালে।যার মধ্যে শিশু ও বয়স্ক নারী পুরুষ রোগী বেশি। সর্দি, কাশিসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে অনেকেই।

চাঁদপুর সদর উপজেলার মেঘনা নদী তীরবর্তী গোবিন্দিয়া জলিল খা বাড়ির বাসিন্দা জেলে বিল্লাহ খা জানান, 'গত তিনদিন ধরে অত্যধিক কুয়াশা পড়ছে। সেই সঙ্গে হিমেল বাতাসে ঠাণ্ডা বেড়ে যাওয়ায় কাজ করতে কষ্ট হচ্ছে।অর্থের অভাবে শীতবস্ত্রও কিনতে পারছি না। সরকারিভাবেও এখনো শীতবস্ত্র পাননি।'

একই গ্রামের বাসিন্দা সরকার বাড়ি হারুন সরকার নদীতে জাল বায়।সেসহ কয়েকজন দিনমজুর জানান, শীত উপক্ষো করে নদীতে মাছ ধরতে, আলু ক্ষেতের পরিচর্চা, বীজতলা তৈরীসহ নানা ধরণের কৃষিকাজ করতে হচ্ছে। ঠান্ডায় কাজ করতে গিয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে যায়।

সরেজমিন মেঘনা- ডাকাতিয়া নদীর পাড়ের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় হত দরিদ্র অনেক শিশু ও নারী খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুনের উত্তাপ নিচ্ছেন। শীত থেকে সবজি বাঁচাতে আগাম আলু ক্ষেতে ছত্রাকনাশ স্প্রে করা শুরু হয়েছে।

চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান জানান, আমরা ৪২ হাজার কম্বল পেয়েছি। ইতোমধ্যে প্রতিটি উপজেলা ও পৌরসভাগুলোতে কম্বল পাঠিয়ে দিয়েছি।

এদিকে, হিমেল হাওয়ায় শীত বেড়ে যাওয়ায় চাঁদপুর শহর এলাকার ভাসমান গরম কাপড়ের দোকানে মানুষের উপচে পড়া ভিড় পরিলক্ষিত হচ্ছে।

পালবাজার সংলগ্ন স্ট্যান্ড রোড, কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের পূর্বপাশে লেকের পাড় ও হাসান আলী সরকারি হাইস্কুল মাঠে শীত নিবারণের জন্য অসংখ্য নারি পুরুষের ভিড়। সবাই ভ্যান গাড়ি থেকে বাচ্চাদের জন্য শীতের কাপড় কিনতে জটলা লেগেই আছে।

আবহাওয়ার বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে আছে। এর একটি অংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা।

(ইউএইচ/এসপি/জানুয়ারি ০৩, ২০২৪)