নাটোর প্রতিনিধি : নাটোরে সম্প্রতি জেলা পরিসংখ্যান অফিস চালু হলেও সেবা পাওয়া যাচ্ছেনা বলে অভিযোগ উঠেছে। অফিসটির প্রধান ফটক অধিকাংশ সময় ভিতর থেকে বন্ধ রাখা হয়। ফলে সেবা গ্রহিতারা অফিসে গিয়ে ফটক ভিতর থেকে বন্ধ দেখে তাদের ফিরে যেতে হয়। কখনও কখনও পিয়নের সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে জানানো হয়, বড় স্যার ট্রেনিং অথবা ডিসি অফিসের মিটিংয়ে এবং ছোট স্যার বাজারে গেছেন।

তথ্যের প্রয়োজনে ওই অফিসে গিয়ে প্রধান দরজা ভিতর থেকে বন্ধ দেখে সাংবাদিকদেরও ফিরে আসতে হয়েছে। শহরের বড়গাছা এলাকার চাকুরী প্রার্থী শান্তানু ইসলাম জানান, সম্প্রতি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো থেকে ঘোষিত চাকুরীর বিজ্ঞপ্তির বিষয় জানতে অফিসে গিয়ে ভিতর থেকে বন্ধ পেয়ে ফিরে আসতে হয়। এবিষয়ে দু’দিন জেলা পরিসংখ্যান অফিসে গিয়ে বন্ধ দেখে ফিরে এসেছেন সদর উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের আবু আক্কাস।

তিনি জানান, ২৪৫ টি পদে লোক নিয়োগের জন্য সম্প্রতি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। ব্যুরোর সরবরাহকৃত ফরমে আবেদন করতে বলা হয়েছে। বিষয়টি জানতে গত রবি ও সোমবার নাটোর কারেক্টরেট ভবনের দক্ষিন পার্শ্বের একটি দ্বিতল বাড়িতে সম্প্রতি চালু হওয়ার জেলা পরিসংখ্যান অফিসে গিয়ে ভিতর থেকে প্রধান গেইট বন্ধ পেয়ে ফিরে আসেন। ডাকাডাকি করেও উত্তর পাওয়া যায়নি। পরে অন্যদের মাধ্যমে জানতে পেরে ইন্টারনেট থেকে ফরম সংগ্রহ করেছি। একই অভিযোগ করেন,হরিশপুর এলাকার চাকুরী প্রার্থী মোছাম্মৎ ডলি খাতুন।
এদিকে স্থানীয় দুই সাংবাদিক জেলার কিছু তথ্য সংগ্রহের জন্য মঙ্গলবার জেলা পরিসংখ্যান অফিসে গিয়ে গেইট ভিতর থেকে বন্ধ দেখতে পান। গেইটে ধাক্কাধাক্কি করার দীর্ঘক্ষন পর একজন গেইট খুলে কাকে প্রয়োজন বলে সাংবাদিকদের কাছে জানতে চান। উপ পরিচালকের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা জানালে বলা হয় তিনি মঙ্গলবারই ট্রেনিংয়ের জন্য ঢাকায় গেছেন। তার পরিচয়সহ আর কেউ আছে কিনা জানতে চাইলে আমতা আমতা বলেন, ভিতরে পিয়ন আছে আর ছোট স্যার বাজারে গেছেন।

তার পরিচয় না দিয়ে বলেন, উপর তলায় অফিস এবং ভিতরে যেতে বলে নিচতলায় একটি কক্ষে তিনি ঢুকে পড়েন। নিচ তলায় অন্য কোন ভাড়াটে বসবাস করে। ওপর তলায় ওঠার পর সাংবাদিকদের চা আপ্যায়ন করে তার মোবাইল ফোনটি এক সাংবাদিককে ধরিয়ে দিয়ে বলেন বড় স্যার কথা বলবেন। টেলিফোনেই কথা হয় উপপরিচালক মহিদুল ইসলামের সঙ্গে।

তিনি জানান, সবে এই জেলা অফিস চালু হয়েছে। তিনি ট্রেনিংয়ের জন্য ঢাকায় রয়েছেন। অফিসটি চালু হলেও জনবল নেই। ১২ জনের পদ থাকলেও মাত্র তিনজন দিয়ে কাজ চালাতে হচ্ছে। পরিসংখ্যান সহকারী সঞ্জয় মানির সঙ্গে প্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে আলাপ করার পরামর্শ দেন তিনি। ইত্যবসরে অপর সাংবাদিক পরিসংখ্যান সহকারীর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ১০ মিনিট অপেক্ষা করতে বলেন। প্রায় ৪০ মিনিট পর তিনি অফিসে আসেন এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে পরিচিত হন। পরিচয় পর্ব শেষে সাংবাদিকরা জেলার কিছু বিষয় তথ্য চাইলে তিনি তার মোবাইল ফোনে উপপরিচালকের সঙ্গে কথা বলেন।
কথা বলা শেষে জানান,ক’দিন হয়েছে অফিস চালু হয়েছে। তাই তাদের কাছে তথ্যের তালিকা প্রস্তুত নেই। তবে তিনি ক’দিন দেরী করার অনুরোধ করেন। সাংবাদিকরা ফিরে আসার সময় অফিসের প্রধান গেই ভিতর থেকে বন্ধের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করে জানান,অফিস কখনই বন্ধ রাখা হয়না। এসময় অফিসে উপস্থিত সেই প্রথম ব্যক্তিটি জানান, চোরের উৎপাতে মাঝে মধ্যে গেইট ভিড়িয়ে রাখা হয়।

(এমআর/এটিআর/নভেম্বর ১১, ২০১৪)