স্টাফ রিপোর্টার : জব্দ করা মালামাল-যানবাহন থানা ও মালখানায় কীভাবে সংরক্ষণ করা হয়, তা জানতে চেয়ে হাইকোর্টের জারি করা রুলের বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে আজ। শুনানি নিয়ে সারাদেশের থানা ও আদালতের মালখানায় অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে থাকা মামলার আলামত কী অবস্থায় আছে তার তথ্য জানানোর জন্য পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আগামী ২ মাসের মধ্যে তার প্রতিবেদন দাখিলে আইজিপিকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে আজ আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শিশির মনির। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ।

তিনি আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সারাদেশে থানায় ও আদালতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মামলার আলামতের সর্বশেষ অবস্থা জানিয়ে ২ মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য আইজিপিকে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যথায় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর আগে জব্দ করা মালামাল ও যানবাহন থানা ও মালখানায় কীভাবে সংরক্ষণ করা হয়, তা জানিয়ে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পুলিশের মহাপরিদর্শককে এ বিষয়ে ছয় মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল।

এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২২ সালের ৩০ আগস্ট হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন। আদালতে ওইদিন রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়।

এর আগে জব্দ করা মালামাল সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে পাঁচ আইনজীবী ২৮ আগস্ট ওই রিট করেন। রিট করা পাঁচ আইনজীবী হলেন- মোহাম্মদ নোয়াব আলী, মো. মুজাহেদুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান, জি এম মুজাহিদুর রহমান ও ইমরুল কায়েস।

রুলে মালখানা ও থানায় অনিরাপদভাবে রাখা জব্দ মালামাল সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি হবে না এবং জব্দ করা মালামাল সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক ও ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদেশের বিষয়টি জানিয়ে আইনজীবী শিশির মনির ওইদিন বলেন, আইনি বিধান অনুসারে জব্দ করা মালামাল ও যানবাহন সংরক্ষণ করা হচ্ছে না। কেননা, ঢাকাসহ দেশের সব আদালত ও থানা এলাকায় জব্দ করা মালামাল বছরের পর বছর পড়ে থাকতে দেখা যায়। ফলে এসব মালামাল ও যানবাহন রাষ্ট্র ও মালিকের কাজে আসে না, যে কারণে রিটটি করা হয়।

তিনি বলেন, জব্দ করা মালামাল এভাবে বছরের পর বছর পড়ে থাকায় পরে সেটা রাষ্ট্রেরও কাজে লাগে না, মালিকেরও কাজে লাগে না। আমরা দেখেছি, জব্দ করা মালামালের মধ্যে বাস, ট্রাক, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র আছে। পুরো বিষয়টি নিয়েই একটি ব্যবস্থাপনা চেয়ে রিট করেছি।

(ওএস/এএস/জানুয়ারি ১৮, ২০২৪)