সরদার শুকুর আহমেদ, বাগেরহাট : বাগেরহাটে শখের বসে ভারত সুন্দরী, বল সুন্দরী ও কাশ্মীরি জাতের কুল চাষ করে সফল হয়েছে সুজন গোলদার নামের এক কৃষি উদ্যোক্তা। 

পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক কচুয়া শাখায় কর্মরত সুজন ২০২১ সালে নিজ পরিবারের চাহিদা মেটানোর জন্য বসত বাড়ীর আঙ্গিনায় ২০টি বল সুন্দরী জাতের কুলের চারা রোপন করেন। ভালো ফলন পাওয়ায় জমি ও গাছের পরিমান বাড়াতে থাকেন তিনি। বর্তমানে তার ৫বিঘা জমির ৩টি প্লোটে ভারত সুন্দরী, বল সুন্দরী ও কাশ্মীরি জাতের কুল গাছ রয়েছে ১ হাজার ৬শ টি। এখান থেকেই বছরে তিনি আয় করছেন ১২ লাখ টাকা।

বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার বিষখালী গ্রামে সুজন গোলদারের এই কুল বাগানে গিয়ে দেখা মিলবে গাছে গাছে ঝুলতে থাকা রসালো মিষ্টি ভারত সুন্দরী, বল সুন্দরী ও কাশ্মীরি আপেল কুলের। কুলের ভারে নুইয়ে পরা প্রতিটি গাছে ধরে আছে ৩০ থেকে ৩৫ কেজি করে কুল। তিনটি প্লাটে প্রায় ৫ বিঘা জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের এই কুল চাষ করছেন সুজন গোলদার। বর্তমানে তার বাগানে কুল গাছ রয়েছে প্রায় ১৬০০ টি। আর বাগানের পরিচর্যায় কাজ করছেন ৮ জন।

সুজন গোলদার জানান, ২০২১ সালে শখের বসে খুলনার পাইকগাছা থেকে বল সুন্দরী জাতের ২০টি চারা সংগ্রহ করি। এরপর পরিবারের চাহিদা মেটানোর জন্য বসত বাড়ীর আঙ্গিনায় চারা গুলো রোপন করি। ভালো ফলন পাওয়ায় কচুয়া কৃষি অফিস থেকে কুল চাষের উপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি এবং দুটি প্লোটে প্রায় ৪ বিঘা জমিতে বল সুন্দরী ও ভারত সুন্দরী জাতের ১২০০ চারা রোপন করি। ২০২২ সালে ভালো ফলন ও লাভ হওয়ায় জমি ও গাছের পরিমান আরও বাড়াতে থাকি। বর্তমানে আমার ৫বিঘা জমির ৩টি প্লোটে ভারত সুন্দরী, বল সুন্দরী ও কাশ্মীরি জাতের কুল গাছ রয়েছে প্রায় ১ হাজার ৬শ টি। প্রতিদিন এই বাগান থেকে আমি ১০ থেকে ১২ মন কুল সংগ্রহ করছি। যার প্রতি মন কুল বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার টাকায়। আমার এখানে ৮ জন কর্মরত রয়েছে। যারা গাছের পরিচর্যা থেকে শুরু করে ফল সংগ্রহ ও জেলা সদরসহ স্থানীয় হাট বাজারে বিক্রি করে থাকেন। এছাড়াও পার্শ্ববর্তি পিরোজপুর ও খুলনা জেলা থেকেও অনেক পাইকারি কুল ব্যবসায়ী আমার বাগান থেকে ফল সংগ্রহ করে থাকেন। এখান কুল বাগান থেকে বছরে আয় হচ্ছে ১২ লাখ টাকা।

কচুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মামুনুর রশিদ জানান, সুজন গোলদার ২০২২-২৩ অর্থ বছরে কৃষি বিভাগ থেকে কুল চাষের উপরে প্রশিক্ষণ নিয়েছে। এসএসিপি প্রকল্পের আওতায় সুজন গোলদারকে সার, কীটনাশক ও চারা দিয়ে সহায়তা উচ্চ ফলনশীল জাতের বল সুন্দরী, ভারত সুন্দরী ও কাশ্মীরি জাতের কুলের আবাদ করে সফল হয়েছেন। তার কুল চাষ দেখে নতুন উদ্যোক্তারা কুল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। কুষি বিভাগ তাদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে সহায়তা প্রদান করছে।

(এস/এসপি/জানুয়ারি ১৯, ২০২৪)