অরিত্র কুন্ডু, ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তে এক চোরাকারবারীর গুলিতে দুই ব্যক্তি নিহত হওয়ার পর ওই এলাকায় এখন প্রধান আলোচনার বিষয় চোরাচালান সিন্ডিকেট। দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের দুর্বল নজরদারির কারণে সীমান্ত উপজেলা মহেশপুরে চোরাচালান সিন্ডিকেটের শক্তিশালী বলয় গড়ে উঠেছে।

এই সিন্ডিকেট মূলত ভাড়ায় অস্ত্র আনা নেয়া, সোনার বার ও মানব পাচার করে থাকে। আর এই কাজে প্রধান সহযোগী হলো সীমান্তে বসবাসকারী কতিপয় জনপ্রতিনিধি, বিজিবির সোর্স ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতারা। সম্প্রতি বাঘাডাঙ্গা গ্রামে শামিম হোসেন ও মন্টু মিয়া নামের দুই ব্যক্তি নিহত হওয়ার নেপথ্যে ছিল চোরাকারবারীর টাকা ভাগাভাগী নিয়ে দ্ব›দ্ব। তার মূলত বাঘাডাঙ্গা গ্রামের মতিয়ার রহমান মতির নিয়ন্ত্রনে থেকে পাচার কাজে নিয়োজিত ছিল বলে জানা গেছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, মহেশপুর সীমান্তের বিভিন গ্রামে একাধিক চোরাচালান সিÐিকেট রয়েছে। বিজিবির সোর্স পরিচয় দিয়ে কতিপয় ব্যক্তি এই চোরাচালান সিন্ডিকেট পরিচালনা করে থাকে।

সরেজমিন সীমান্তের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা গেছে, মহেশপুরের ৯টি গ্রাম একেবারেই সীমান্ত ঘেষা হওয়ায় সেখান দিয়ে সোনা, অস্ত্র, গরু ও মানব পাচার করা হয়। গ্রামগুলোর মধ্যে রয়েছে বাঘাডাঙ্গা, পলিয়ানপুর, যাদবপুর, জুলুলী, লেবুতলা, মরকধ্বজপুর, শ্যামকুড়, রায়পুর ও কচুয়ারপোতা। এরমধ্যে মকরধ্বজপুর, বাঘাডাঙ্গা ও রায়পুর দিয়ে ভারতীয় গরু ও বাংলাদেশী মানব পাচার, বাঘাডাঙ্গা ও শ্যামকুড় সীমান্ত দিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র এবং লেবুতলা ও রায়পুর সীমান্ত দিয়ে সোনা পাচার হয়ে থাকে। বিজিবির সোর্স পরিচয় দিয়ে একাধিক ব্যক্তি সীমান্তের এই এলাকাগুলো নিয়ন্ত্রণ করে।

রায়পুর সীমান্তের কুটি মিয়া, শ্যামকুড় এলাকায় আলী, নেপা এলাকা নিয়ন্ত্রণ করেন নওশের খোড়া, হুদাপাড়া, কাঞ্চনপুর ও বাঘাডাঙ্গা এলাকা নিয়ন্ত্রন করেন আল আমিন ও রতনপুর এলাকা নিয়ন্ত্রন করেন আল আমিন। এরা সবাই বিজিবির কথিত সোর্স পরিচয় দিয়ে চোরাকারবারীদের সহায়তা করেন বলে স্থানীয়রা জানান।

এ ব্যাপারে মহেশপুর ৫৮ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্ণেল মাসুদ পারভেজ রানা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

(একে/এএস/জানুয়ারি ২২, ২০২৪)