সোহেল সাশ্রু, কিশোরগঞ্জ : আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন শেষ না হতেই ভৈরবে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনী প্রার্থীদের ব্যাপক প্রচারণা শুরু হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে প্রচারণার চেয়ে বেশী প্রচার করছেন সোস্যাল মিডিয়ায়। তফসিল ঘোষণার আগেই প্রার্থীরা মাঠে নেমে গিয়ে তাদের প্রচারণা চালাচ্ছেন। পৌর শহর ও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের এলাকাগুলোতে জনসংযোগ করছেন। বিভিন্ন চায়ের দোকান, সাংগঠনিক কার্যালয়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, দলীয় অফিসে আড্ডা গল্পে প্রার্থীতা নিয়ে চলছে আলোচনা ও নানা জল্পনা কল্পনা।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে যার মত পছন্দের প্রার্থীদের পক্ষে প্রচার করে যাচ্ছেন। পছন্দের প্রার্থীকে বিভিন্ন পদে দেখতেই সরব রয়েছেন প্রার্থীদের কর্মীরা। আগামী মার্চ-এপ্রিলে দেশের উপজেলা পরিষদের মেয়াদ শেষ হবে। নির্বাচন কমিশন থেকে বলা হচ্ছে অচিরেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করা হবে। দলীয় সমর্থন পেতে প্রার্থীরা দলের নীতি নির্ধারকদের কাছে যে যার মত দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন।

জানা গেছে, আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিগত দিনের চেয়ে ভৈরবে এবার প্রার্থীর সংখ্যা বেশি রয়েছে। উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মো. সায়দুল্লাহ মিয়া। তিনি অসুস্থ থাকায় এবারের নির্বাচনে অংশ নিবেননা, এমনটাই জানিয়েছেন তার পরিবার। গত নির্বাচনে তিনি নৌকা মার্কা পেয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন। ওই নির্বাচনে তার সাথে প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী হয়ে আওয়ামী লীগ নেতা আবুল মনসুর পরাজিত হয়েছিলেন। এবার আবারো আবুল মনসুর চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীতার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি রয়েছেন শক্ত অবস্থানে। এছাড়া নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন সাবেক দুইবারের চেয়ারম্যান ড. মোস্তাক আহমেদ বুলবুল, উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সেন্টু, উপজেলা যুবলীগ আহবায়ক অলিউল ইসলাম অলি, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা আক্তারুজ্জামান খোকা। এছাড়াও বিএনপি যুবদল নেতা বর্তমান উপজেলা পরিষদ ভাইস-চেয়ারম্যান আল মামুন চেয়ারম্যান প্রার্থী হবে বলে জানা গেছে।

এদিকে শুদ্ধ রাজনীতি, সমাজ ও দিন পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি ও ভৈরব প্রেসক্লাব সভাপতি অধ্যাপক শামসুজ্জামান বাচ্চু।

ভাইস-চেয়ারম্যান পদে গত নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগ তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মো. মোশারফ হোসেন, উপজেলা যুবলীগ যুগ্ম-আহবায়ক অরুন আল-আজাদ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন জামাল, উপজেলা আওয়ামী লীগ নির্বাহী সদস্য শহীদুল্লাহ কায়সার, যুবলীগ নেতা মুক্তার হোসেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস-চেয়ারম্যান মনোয়ারা বেগম, সাবিহা মাহবুব প্রভা, মোমিনা বেগম প্রমুখ।

এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম সেন্টু বলেন, দল আমাকে মনোনয়ন দিলে আমি নির্বাচন করবো। সকল ইউনিয়ন ও পৌর শহরের মানুষ আমাকে চেয়ারম্যান পদে দেখতে চাই। তাই আমি জনসংযোগে মাঠে নেমেছি।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আবুল মনসুর বলেন, বিগত নির্বাচনে আমি প্রার্থী হয়েছিলাম কিন্তু একটি মহল নৌকার প্রার্থীকে জোর করে বিজয়ী করিয়ে আমাকে পরাজিত করেছিলেন। এবার আমি নির্বাচন করবো তাই মাঠে রয়েছি। আমি প্রত্যাশা করছি দল এবার আমাকে মনোনয়ন দিবেন। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমার বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবেনা।

উপজেলা পরিষদের সাবেক দুইবারের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমেদ বুলবুল বলেন, চেয়ারম্যান পদটি মূলত গ্রামের মানুষের সেবা ও উন্নয়নের জন্য। আমার বাড়ি গ্রামে, মানুষ আমাকে ভালবাসে। দুইবার চেয়ারম্যান হয়ে আমি এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। আমি আওয়ামী লীগ দলের কর্মী। আমার প্রত্যাশা দল আমাকে মনোনয়ন দিবে, তবে না দিলেও আমি নির্বাচন করব।

ভাইস-চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মোশারফ হোসেন বলেন, গত নির্বাচনে আমি স্বল্প ভোটে পরাজিত হয়েছিলাম। এবারও একই পদে নির্বাচন করব।

উপজেলা যুবদল সাধারণ সম্পাদক ভাইস-চেয়ারম্যান আল মামুন জানান, আমি দুই বার ভাইস-চেয়ারম্যান হয়েছি। ভৈরব সাধারণ মানুষ আমাকে পছন্দ করে। বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। তবে আমি আশা করি দলীয় ভাবে আমাকে পূর্ণ সমর্থন জানাবে।

উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান মনোয়ারা বেগম বলেন, আমি দুইবার এ পদে বিজয়ী হয়েছি। এবারও জনগণ আমাকে চাইছে তাই আবারও প্রার্থী হব।

সাবিহা মাহবুব প্রভা বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আমি প্রার্থী হয়েছি। আমাকে জনগণ নির্বাচনে যেতে উৎসাহ দিচ্ছেন। এমনকি দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে থেকেও সাপোর্ট পাচ্ছি।

(এসএস/এএস/জানুয়ারি ২৭, ২০২৪)