সরদার শুকুর আহমেদ, বাগেরহাট : সুন্দরবনে রাজা রয়েল বেঙ্গল টাইগারের খাদ্য বন্যপ্রাণীর সংখ্যা অনেক বেড়েছে।  ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর দ্যা কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) সার্বিক সহযোগিতার প্রকাশিত জরিপে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনে তিন প্রজাতির বন্যপ্রাণী হরিণ, বানর, বন্যশুকর বাড়ার তথ্য মিলেছে। জোয়ারের সময় সমুদ্রের লোনা পানিতে প্লাবিত জীববৈচিত্র্যে ভরপুর ম্যানগ্রোভ এই বনে ৩৭৫ প্রজাতির বন্যপ্রাণী থাকলেও বাঘের খাদ্য মাত্র পাঁচ প্রজাতির বন্যপ্রাণী হরিণ, বানর, বন্যশুকর গুইসাপ ও সজারু রয়েছে ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৯২৮টি। এবার বন বিভাগের জরিপে হরিণ, বানর ও বন্যশুকরের পাশাপাশি অন্তভুক্ত করা হয় গুইসাপ ও সজারু। সুন্দরবনে বাঘের খাদ্য সংকট না থাকা ও বাঘের খাদ্য বন্যপ্রানীর সংখ্যা অনেক বাড়ার সুখবরটি নিশ্চিত করেছে বন বিভাগ। 

সুন্দরবন বিভাগ জানায়, গোটা সুন্দরবনে ২০২১ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর দ্যা কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) সার্বিক সহযোগিতার বাঘের খাদ্য পাঁচ প্রজাতির বন্যপ্রাণীর হরিণ, বানর, বন্যশুকর, গুইসাপ ও সজারুর জরিপ করা হয়।

সম্প্রতি প্রকাশিত জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, যেখানে ২০০৪ সালের জরিপে চিত্রল ও মায়া হরিণের সংখ্যা ৮৩ হাজার থেকে বেড়ে এখন দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৬০৪টি, বানর ৫১ হাজার থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫২ হাজার ৪৪৪টি, বন্যশুকর ২৮ হাজার থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৭ হাজার ৫১৫টি। সুন্দবনে এবারই প্রথম জরিপে অন্তভূক্ত হওয়া গুইসাপ রয়েছে ২৫ হাজার ১২৪টি ও সজারু রয়েছে ১২ হাজার ২৪১টি।

খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো জানান, সুন্দরবনে বাঘের পর্যাপ্ত প্রাণী খাদ্য রয়েছে। বিশ্ব ঐতিহ্য এলাকা এই ম্যানগ্রোভ বন দস্যুমুক্ত হওয়া, রাসমেলা বন্ধ করা, স্মার্ট পেট্রোলিংসহ বন বিভাগ, র‌্যাব, কোস্টগার্ড ও বিজিবি’র কঠোর নজরদারীর কারনে হরিণসহ বন্যপ্রাণী শিকার অনেক কমে এসেছে। পাশাপাশি সুন্দরবনে অভয়াণ্যের আয়তন বাড়িয়ে ৫১ ভাগ করায় অনুকুল পরিবেশে বাঘের খাদ্য বন্যপ্রাণী হরিণ, বানর ও বন্যশুকরের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। এবারই প্রথম জরিপে অন্তভুক্ত করা গুইসাপ ও সজারুর সংখ্যাও জানাগেছে। বাঘের খাদ্য পাঁচ প্রজাতির বন্যপ্রাণীর জরিপে দেখাগেছে সুন্দরবনে এখন সব মিলিয়ে এসব বন্যপ্রাণী রয়েছে ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৯২৮টি। জার্মানির কেএফডব্লিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের আর্থিক সহয়তায় আইইউসিএনের সহযোগিতার সাম্প্রতিক প্রকাশিত জরিপ রিপোর্টে এমন তথ্যই উঠে এসেছে। আবাসস্থলসহ বনের রাজাকে সুরক্ষায় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করার ফলে চলমান ক্যামেরা ট্রাকিং জরিপে বাঘ বাড়ারও তথ্য মিলছে। আগামী ২৯ জুলাই বিশ্ব বাঘ দিবসে সুন্দরবনে জরিপ কাজ শেষ হবে। তখন সুন্দরবনের বাঘের সঠিক সংখ্যা জানা সম্ভব হবে বলেও জানা এই বন কর্মকর্তা।

(এস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০২৪)