সরদার শুকুর আহমেদ, বাগেরহাট : মহান মুক্তিযুদ্ধের অকৃত্রিম বিদেশী বন্ধু ফাদার মারিনো রিগনের শততম জন্মদিন উপলক্ষে বাগেরহাটের মোংলায় উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংগঠনের শ্রদ্ধাঞ্জালি, শোভাযাত্রা, আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

আজ সোমবার সকালে শোভাযাত্রা সহকারে মোংলা পৌরসভার সেন্ট পল্স গির্জা প্রঙ্গনে ফাদার মারিনো রিগনের প্রতিকৃতিতে উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংগঠন শ্রদ্ধাঞ্জালি প্রদান করে। পরে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে সেন্ট পল্স উচ্চ বিদ্যালয়, সেবা সংস্থা, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এবং ফাদার রিগন শিক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় স্মরণানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পরে ফাদার রিগনের কর্মময় জিবনের ইপর আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নারায়ন চন্দ্র পালের সভাপতিত্ব স্মরণ অনুষ্ঠানের অন্রান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মোংলা পোর্ট পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুর রহমান, মোংলা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর কে এম রব্বানী, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. নূর আলম শেখ, সেন্ট পল্স ধর্মপল্লীর সহকারি পুরোহিত রিপন সরদার, ফাদার রিগন শিক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস, সেন্ট পল্স উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ব্রাদার এন্ড্রো জয়ন্ক কস্তা সেবা।

বক্তারা বলেন, ফাদার মারিনো রিগন খ্রিষ্টিয় ধর্ম প্রচারের ১৯৫৩ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে (বাংলাদেশে) আসেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে সহযোগীতার পাশাপাশি বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রতি তীব্র অনুরাগ হয়ে ফাদার মারিনো রিগন ইতালিয়ান ভাষায় অনুবাদ করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গীতাঞ্জলিসহ প্রায় ৪০টি কাব্যগ্রন্থ, লালন সাঁইয়ের ৩৫০টি গান, জসীম উদ্দীনের নক্সিকাঁথার মাঠ, সোজন বাদিয়ার ঘাট ছাড়াও বাংলাদেশের খ্যাতিমান কবিদের অসংখ্য কবিতা। ইতালিয়ান ভাষায় এসব অনুবাদ ছাড়াও তিনি ’শেলাবুৃুনিয়ার রূপকথা’ ’আমার গ্রাম’ ’ভিল্লাভেরলা থেকে শেলাবুনিয়া’ নামক তিনটি বাংলা বই লিখেছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখায় ফাদার মারিনো রিগনকে ২০১২ সালের ২০ অক্টোবর ‘মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা” পদক প্রদান করে সরকার। তার অন্তিম ইচ্ছা পূরনে ইটালীতে মারা যাওয়ার এক বছর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা ২০১৮ সালের ২১ অক্টোবর মরদেহ ইতালি থেকে বাংলাদেশে এনে মোংলায় সমাহিত করা হয়।

(এস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০২৪)