ওয়াজেদুর রহমান কনক


ছবিতে যে টিনসেড ঘরটির সামনে সিমেন্টের স্তম্ভ দেখা যাচ্ছে। এই স্তম্ভটি স্থাপন করা হয়ে়ছিল নীলফামারী প্রেসক্লাবের কার্যালয় স্থাপনের জন্য। প্রেসক্লাবের এই কার্যালয়টি কতটুকু নিয়ম নীতি মেনে হয়েছে, সেই বিষয়টির অবতারণা করেই আজকের এই লেখাটির উদ্দেশ্য।

প্রেসক্লাবের সে সময়ের কর্ত্যাব্যক্তিরা সদলবলে আমাদের বাড়ির কাগজ-পত্র কতটুকু বৈধ সে বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে সংগ্রহ করেছে, ভাবসাব এমন যে যদি আমাদের কাগজের কোন ত্রুটি থাকে তাহলে পারে তো আমাদের বাড়ি থেকেই উৎখাত করে দেয়।

এমন পরিস্থিতিতে রংপুর থেকে আমার ভাই প্রয়াত সাংবাদিক মমিনুর রহমান রতন সরকার প্রেসক্লাবের কর্ত্যাব্যাক্তিদের ফোন করে এর কারণ জানতে চাইলে, তারা আমার ভাইকে না চিনার দাবি করে এবং কোন স্কুল ঘরে তারা আসছে, এটা জানাতেও অস্বীকার করে তারা।

লোক দেখানোর জন্য আমার ভাই ও আমার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু হাসান মোঃ ইলিয়াসকে দিয়ে আমাদের বাড়ির সামনেই প্রেসক্লাবের কার্যালয়ের ভিত্তি স্থাপিত হয়। হম্বি তম্বী দেখিয়ে, বাড়ি দখলের হুমকী দিয়ে আমার বাবাকে দিয়ে ভিত্তি স্থাপন করা হয়েছে।

সবাই দেখি প্রেসক্লাবের নির্বাচন নিয়ে তুমুল ব্যস্ত, ১৪ বছর সাংবাদিকতায় থেকেও এই সংগঠনটি থেকে আমার দূরত্বের যেন শেষ নাই, সংগঠন থেকে দূরত্ব থাকলেও সাংবাদিক ভাইদের সাথে আমার কোন দূরত্ব নাই। আমি কোন ক্ষেত্রেই নিরপেক্ষতার নীতি গ্রহণ করি না, আমারও একটা পক্ষ আছে।

অনেক ত্রুটি বিচ্যুত্তি সত্বেও নির্বাচনের আয়োজনকে সাধুবাদ জানায়েছি।

আর সবার কাছে প্রেসক্লাবের অভিজ্ঞতাটা এক রকম আর আমার কা়ছে, ঠিক যেন একটা ভীতির নাম, একটা আতংকের নাম।

নির্বাচন এলে এই হাওয়া আমার শরীরেও এসে লাগত। গতবার তার আগের বারের নির্বাচন গুলোতে আমার ভাই প্রয়াত সাংবাদিক রতন সরকার অংশ নিয়েছিলেন। টানা দুই মেয়াদে আমার ভাই প্রেসক্লাবের নির্বাচিত সাধারণ সস্পাদক ছিলেন।

একবার আমার ভাই সাধারণ সস্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পর বিডি হলের সামনে আমাকে জড়িয়ে ধরেছিলেন আনন্দে৷

এখন যারা প্রেসক্লাবের নেতৃত্বে আসতে চায়, তাদের এই নিয়ে এতো টানাটানি কেন, দুই দিন পর যখন এই ক্লাবেরই নাম করে বাড়ি দখলের চেষ্টা করে না পেয়ে বাড়ির উঠানেই প্রেসক্লাব বসিয়ে দিবে, তখন সহ্য হবে তো?

প্রেসক্লাবের নামে কালিবাড়ি মোড়ের দিকে অগ্রসর হওয়া প্রত্যেকটা পদক্ষেপের বদলা নেওয়া হবে...'কি হচ্ছে নীলফামারী শহরের কালিবাড়ি মোড়ে, দেখার কি কেউ নাই?' শিরোনামে দৈনিক বাংলা ৭১ পত্রিকায় একটি মুক্তচিন্তা কলামে লিখেছিলাম 'নীলফামারী শহরের কালিবাড়ি মোড়ে প্রেসক্লাব স্থানান্তরিত হচ্ছে, অথচ ক্লাবের বেশির ভাগ সদস্য এই তথ্য দীর্ঘদিন জানতেন না, ক্লাবের দুই, তিনজন এ বিষয়ে সবচেয়ে বেশি তৎপর হয়েছে, তাদের রাজনৈতিক পরিচয় উদঘাটন করলেই জামায়াতে ইসলামী যে সুদূরপ্রসারী চিন্তা-ভাবনা নিয়ে কালিবাড়ি মোড়ে প্রেসক্লাব গঠনে ইন্ধন জোগাচ্ছে তা দিবালোকের মতো পরিষ্কার হয়ে যাবে।'

লেখাটিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, জামায়াতের যে লাঠিয়াল বাহিনী দীর্ঘদিন এই এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করেছে, তাদেরই কেউ কেউ এখন প্রেসক্লাব নিয়ে তৎপর হয়েছে। কালিবাড়ি মোড়ে প্রেসক্লাব গঠনে জামায়াতের যে সুস্পষ্ট ইন্ধন আছে এটা প্রমাণ করা খুব দুরুহ কাজ নয়। তাদের তৎপরতা একটু খতিয়ে দেখলে কার কি উদ্দেশ্য তা বেড়িয়ে আসবে।'

(ওআরকে/এএস/ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২৪)