অরিত্র কুণ্ডু, ঝিনাইদহ : ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের দুটি লিফট প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে বন্ধ রয়েছে। রোগী ও স্বজনেরা পড়েছেন ভীষণ দুর্ভোগে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, আইসিইউ নির্মাণকাজের জন্য লিফট বন্ধ রাখা হয়েছে। ভুক্তভোগীদের ভাষ্য, বিকল্প ব্যবস্থা না করে লিফট বন্ধ রেখে দুর্ভোগে ফেলা হয়েছে তাঁদের।

সরেজমিন দেখা যায়, লিফট বন্ধ থাকার কারণে সবচেয়ে কষ্টে পড়েছেন ছয়তলার সার্জারি ওয়ার্ডের রোগী-স্বজনেরা। সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে সেখানে শৈলকূপা উপজেলার দুধসর এলাকার জামিরুল ইসলাম ভর্তি রয়েছেন। তাঁর স্বজন মোর্শেদ আলম বলেন, লিফট বন্ধ থাকায় জামিরুলকে ছয়জন মিলে ওপরে তুলতে হয়েছে। অনেক কষ্ট হয়েছে।

পাঁচতলার প্রসূতি ওয়ার্ডে কথা হয় রীনা বেগমের সঙ্গে। তিনি অন্তঃসত্ত্বা মেয়ে নাসরীনকে (৩০) দেখিয়ে বলেন, এমন অবস্থায় সিঁড়ি ভেঙে ওঠা খুবই কঠিন। আল্লাহকে ডাকতে ডাকতে উঠেছি।

সিঁড়িতে দেখা যায়, দুজন মিলে অনেক কষ্টে ছয়তলায় তুলছেন এক রোগীকে। কথা বলে জানা যায়, রোগীর নাম মনজের মণ্ডল। তিনি সদর উপজেলার কল্যাণপুর গ্রামের বাসিন্দা। একতলা পার হয়ে আর একতলায় উঠতে জিরিয়ে নিতে হয় রোগী ও তাঁর স্বজনদের।

সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ছয়তলার ওয়ার্ডে ভর্তি সদর উপজেলার কুমড়াবাড়িয়া এলাকার নজিবুর রহমানের ছেলে রিয়াজ বলেন, বাবাকে হাসপাতালে নিয়ে আসার সময় সঙ্গে ছিলাম তিনজন। ছয়তলায় তুলতে গিয়ে তিনজন লোককে ভাড়া করতে হয়েছে ৪০০ টাকা দিয়ে। তিনি বলেন, লিফট বন্ধ থাকার সময়ে ছয়তলার রোগীদের ওঠানামায় সহযোগিতা করতে লোক নিয়োগ করা উচিত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।

সিঁড়ি দিয়ে তুলতে কষ্ট এমন রোগী তো প্রায়ই আসছে। তাঁদের কষ্ট দেখে আমাদেরও কষ্ট লাগে বললেন সার্জারি ওয়ার্ডে কর্মরত একজন জ্যেষ্ঠ সেবিকা। তিনি আরও বলেন, এর নিচের তলাতেই প্রসূতি ওয়ার্ড। তাঁদের কষ্ট আরও বেশি। ওঠানামা করতে কষ্ট হচ্ছে সেবিকা ও চিকিৎসকদেরও।

সমস্যার বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সৈয়দ রেজাউল ইসলাম জানান, নবমতলায় আইসিইউ নির্মাণকাজের জন্য লিফট সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। হয়তো এক মাস এই ভোগান্তি থাকবে। কাজেই রোগী ও তাঁদের স্বজনদের কষ্ট হলেও সিড়ি দিয়ে চলাচল করা ছাড়া বিকল্প কোন ব্যবস্থা নেই।

(একে/এএস/ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২৪)