ফয়জুল মুনির, পটুয়াখালী : পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় কাছিপাড়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে গড়ে উঠেছে অবৈধ ইটভাটা। এখানে নেই  কয়লার ব্যবহার। এই ভাটায় ব্যবহার করা হচ্ছে ড্রাম চিমনি। পোড়ানো হচ্ছে কাঠ, উজার হচ্ছে বন। শুকনো মৌসুমে বনের গাছ কেটে ইটভাটায় জ্বালানির জোগান দেওয়া হচ্ছে। আর শুষ্ক মৌসুমে কারখানা নদী তীরবর্তী এলাকার ফসলি জমির মাটি কেটে ইটভাটায় নেওয়া হচ্ছে। 

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কাছিপাড়া ইউনিয়নের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে কারখান নদী। এই নদীর পারে মোঃ মনির খান তার থ্রি স্টার ব্রিক্স তৈরি করে অবৈধ ভাবে স্বমিল বসিয়ে কাঠ কেটে কাঠের গুড়ি পুরছে।

অবৈধ ইটভাটা সম্পর্কে জানতে চাইলে মনির খান বলেন, আমার সব রকমের কাগজ পত্র এবং অনুমতি আছে ভাটা চালানোর। আমার জায়গায় আমি কি করবো তা আমি কাউকে বলবো কেন? আমার মতো আমি চলি আমি কারো ধার ধরি না।

বাউফল উপজেলার সীমান্তবর্তী দুর্গম এলাকায় গড়ে ওঠা এ ইটের ভাটায় বন উজাড় করে ইটভাটার জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে কাঠের গুড়ি। ড্রাম চিমনির ধোঁয়ায় বাউফলের কাছিপাড়া ইউনিয়নের আস পাশের পরিবেশ বিষিয়ে উঠেছে। ইট উৎপাদনের পর অধিকাংশ বাউফলের বিভিন্ন এলাকায় বাজারজাত করা হচ্ছে। প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বেপরোয়াভাবে এ ইটভাটা পরিচালনা করায় প্রাকৃতিক বন বিনষ্ট হচ্ছে।

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন এলাকাবাসী বলেন, প্রভাবশালী মনির খানের এই অবৈধ ব্যবসা দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে গত কয়েক বছরে একই এলাকায় আলতাফ মৃধা, মীর মামুন, মাসুদ হাওলাদার, মানিক ম্যানেজার ও মন্নান মিয়াসহ বেশ কয়েক ব্যক্তি অনুমোদনহীন ইটভাটা গড়ে তুলেছেন। এসব ইটের ভাটার জন্য বর্ষায় চরাঞ্চল থেকে ফসলি জমির মাটি কাটা হচ্ছে আর শীতকালে বনের গাছ কেটে ভাটায় পোড়ানো হয়।

বাউফলের কাছিপাড়া আবদুর রশিদ (চুন্নু) মিয়া ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক আবু হাসান মীরন বলেন, ‘মাটি কাটার ফলে কারাখানা ও তেঁতুলিয়া নদীতে ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। বন উজাড় হওয়ায় এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের রহস্যজনক নীরবতায় আমরা হতাশ। অনুমোদনহীন ইটের ভাটার ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া তাদের লাগাম টেনে ধরার উদ্যোগ নেই প্রশাসনের।

এ ব্যপারে বাউফল উপজেলা প্রশাসন মোঃ বশির গাজী বলেন, কাছিপাড়ায় কোনো ব্রিক্স আছে আমি জানি না তবে জেনে ব্যবস্থা নিতে হবে।

এ ব্যাপারে পটুয়াখালী পরিবেশ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ সাইফুদ্দিন বলেন, আমি আগে জানতাম না এখন জেনেছি সরেজমিন দরিদর্শন করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

এ নিয়ে বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মোঃ রাসেদুল বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক আমরা খুব শিগগিরই এসব অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করবো।

(এফএম/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৪)